শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির প্রতি আল-কুরআনের নির্দেশনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ
আলেম ও লেখক

প্রথমেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি দয়াময় প্রভুর কথা। তিনি আপনাকে বলেছেন- ‘নিশ্চয়ই কষ্টের পরেই স্বস্তি আছে। অবশ্যই কষ্টের পরে স্বস্তি আছে।’ [সুরা আলামনাশরাহ- ৬]

উক্ত আয়াতটিতে লক্ষ্য করুন- দয়াময় আল্লাহ কত দৃঢ়ভাবে তাকিদ দিয়ে একটিই কথা দুইবার বলেছেন! তাই শান্ত হোন, ধৈর্য্যধারণ করে সময়টাকে শুধু পেরিয়ে যেতে দিন।

আজকের খুব তীব্র কষ্টের অনুভূতিটা আর কয়েক মাস পরে আর এমন তীব্র লাগবে না, দেখবেন দিব্যি এটা মনে করে হাসছেন আর ভাবছেন- ‘আহা সময়টা কেমন করেই না পার করেছি!’ জীবনটা আসলে এমনই।

এসময়গুলোতে যে কাজ আপনার আত্মাকে আনন্দিত করে, সে কাজগুলো করুন। আপনার চেয়েও বিপদ্গ্রস্ত একজন মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। তার জীবন ও উপলব্ধিকে আপনি অনুভব করুন। দেখুন তার কষ্টের কাছে আপনার কষ্টকে একেবারে নস্যি মনে হবে।

যে বিপদগ্রস্ত সময় আপনি পার করছেন, আ রপনি প্রতিবেশীদের দিকে তাকালে দেখবেন এ বিপদ অন্য অনেকের জীবনে খুবই কমন। তারা দিব্যি খাচ্ছে, ঘুমুচ্ছে, নতুন করে ক্যারিয়ার ও জীবনের পরিকল্পনা করছে। আপনি আযান হয়ে গেলে মসজিদে আগে গিয়ে সামনের কাতারে বসে থাকতে পারেন।

আপনি তাকিয়ে দেখুন বয়সের ভারে ন্যুব্জ একেকজন বৃদ্ধ মুসল্লির চেহারায় কি প্রশান্তির আমেজ। তারাও আপনার আমার মত জীবনের বহু ঘাত-প্রতিঘাত পার হয়েই এ পর্যন্ত এসেছে। সমস্যা জীবনে আসে, সমস্যা কেটেও যায়। কেবল প্রথম ঝাঁকুনিটা একটু তীব্র হয়। পার হয়ে যেতে দিন সময়টা।

আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা আমাদের সব ধরনের সম্ভাব্য অশান্তি, অস্থিরতার উত্তর বলে দিয়েছেন কোরআনে, তিনি আমাদের সমস্ত দু’আ শোনেন। এমনকি বুকের ভেতরে যে চাওয়া, যে আর্তি গুমরে কেঁদে ওঠে নিঃশব্দে, তিনি সেটাও স্পষ্ট শোনেন, জানেন।

আল্লাহ সব সময়েই আমাদের সাথে আছেন। জীবনে আমাদের যা কিছু ঘটে, সবকিছুরই অর্থ রয়েছে। কিন্তু, আল্লাহ পৃথিবীটাকে ‘সিস্টেমেটিক’ করে বানিয়েছেন। কষ্ট-প্রশান্তি, শক্তি-দুর্বলতা, সুস্থ-অসুস্থতা সবকিছুই আমাদের জীবনেরই অংশ এবং তারা আল্লাহর নির্দেশেই এগুলো আসে। আল্লাহ খুব ভালো করে জানেন আমাদের অবস্থা। তাই কখনোই আশা না হারিয়ে বরং ধৈর্যধারণ করা উচিত। নিশ্চয়ই কষ্টের পরেই স্বস্তি থাকে।

মুমিন বান্দার জীবনে যতক্ষণ ঈমান আছে বুকের ভেতর, তার সবকিছুই কল্যাণকর। এমনকি শরীরে কাঁটা ফুটলেও, রোগ হলেও, সম্পদ হারিয়ে গেলেও, পৃথিবী থেকে চলে যাওয়া প্রিয়জনের শোকের মাঝেও কল্যাণ রয়েছে। আল্লাহ এসবের বিনিময়ে পুরস্কার দেবেন এবং তার পরিমাণও হবে অনেক বড় যা আমাদের কল্পনার অতীত।

ভেবে দেখুন, আমাদের জীবনটা কিন্তু অনেকটা বহুতল ভবনের মত। প্রতিটি দিনে আপনি গেঁথে চলেছেন একেকটি তলা। আপনার আজকের দিনটির উত্তম বিনির্মাণ আপনার আগামী দিনের মজবুত গাঁথুনির আত্মবিশ্বাস দেবে। আপনার বর্তমান হলো আপনার জন্য উপহার।

এই মুহূর্ত, এই দিনটি তেমন করে গড়ে তুলুন যেমনটি আপনি চান। জীবনটা খুব অমূল্য উপহার। কষ্ট -যন্ত্রণা? সেটা নেই কার জীবনে বলুন? নবী-রাসূলরা আল্লাহর প্রিয়তম ছিলেন, তারা আরো বেশি কষ্ট পেয়েছেন। এই কষ্টগুলোর মাঝে আছে মুক্তির পয়গাম, অনন্ত শান্তির প্রচ্ছন্ন বার্তা।

জীবনে যা-ই আসুক, আলিঙ্গন করে গ্রহণ করে নিন। প্রতিটি মুহূর্ত খুব সুন্দর, স্বপ্নময়। এই বর্তমানে মন দিন, উজাড় করে দিন আপনার সবটুকু। ভেঙে ফেলুন আপনার মাঝে জমে থাকা শঙ্কা ও উদ্বিগ্নতার দেয়াল। আপনি যা চান, তা করতে থাকুন আপ্রাণ প্রচেষ্টা দিয়ে, লক্ষ্যে আপনি অবশ্যই পৌঁছবেন।

আপনি বিশ্বাসী হলে এই দুঃসময়ে আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনার সাথে আছেন! কঠিন সময়ে আপনার আর্ত-আহবান শোনার কথা কত উত্তমভাবে তিনি বলে দিয়েছেন কুরআনে! তিনি বলেন-

‘আর আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যপারে, আমি তো রয়েছি সন্নিকটেই। প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, আমি তার আহবানে সাড়া দেই। অতএব, তারাও যেন আমার ইবাদতে প্রবৃত্ত হয় এবং আমার উপর নিঃসংশয়ে আস্থা স্থাপন করে- যাতে তারা সরল পথের দিশা লাভ করতে পারে।’ [সুরা বাকারা:১৮৬]

তো, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী যখন আপনার পাশে আছেন, আর কেন চিন্তায় ডুবে থাকা? পূর্ণ নিঃসংশয় বিশ্বাস আর আস্থা রেখে এগিয়ে যান। তার কাছে চেয়ে নিন যা চেয়ে নেওয়ার- সাহস সাহায্য। আপনিও তাঁর ইবাদতে প্রবৃত্ত হয়ে কৃতজ্ঞ হোন।

লেখক : তরুণ আলেম ও সাংবাদিক। সহযোগী সম্পাদক, পরিবর্তন ডটকম।

আরও পড়ুন : শেরপুরে মাদরাসা কমিটি নিয়ে আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ; আহত ১০


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ