শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ৮৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে এবার ৮৮ লাখ ২৯ হাজার ১৭ টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার (৭ জুলাই) বিকালে গণনা শেষে বিপুল পরিমাণ দানের এই টাকার হিসাব পাওয়া যায়। বিপুল পরিমাণ এই নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে অনেক স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ৩০ মার্চ দান সিন্দুক খোলার পর ৮৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এর দেড় মাসের মাথায় গত ১৩ই মে পাগলা মসজিদের একটি দানবাক্স খুলে এক দুর্বৃত্ত টাকা চুরির চেষ্টা চালায়। কিন্তু টাকার বস্তা ফেলে রেখেই শেষ পর্যন্ত ওই দুর্বৃত্তকে পালাতে হয়। ওই সময় বস্তাভর্তি টাকা গণনা করে ৮ লাখ ৪ হাজার ৯৮১ টাকা পাওয়া যায়। ফলে গত তিন মাস সাত দিনে পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে জমা পড়েছে মোট ৯৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯৮ টাকা। সে হিসেবে প্রতিদিন মসজিদটিতে এক লাখ টাকা মানুষ দান করেন।

এর আগে এ বছরের শুরুতে ৬ই জানুয়ারি মসজিদের ৫টি দানসিন্দুক খুলে গণনা করে সর্বোচ্চ এক কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। চার মাস ১০দিনে তখন ওই টাকা দান হিসেবে পাওয়া গিয়েছিল। এর আগে গত বছরের ২৬শে আগস্ট মসজিদের দানসিন্দুক খুলে গণনা করে এক কোটি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শনিবার (৭ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ মাদরাসার ৬০জন ছাত্র-শিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ অংশ নেন।

টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেটের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের সাঈদ।

টাকা গণনার কাজ পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর হোসাইন প্রমুখসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ।

সিন্দুক খোলা কমিটির সদস্য সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলুসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

টাকা গণনার এই এলাহী কাণ্ড নিজ চোখে অবলোকন করতে শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ মসজিদে ভীড় জমান।

প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। কথিত আছে, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনোবাঞ্চা পূর্ণ হয়। সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন।

জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে এ মসজিদটির অবস্থান। দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদ জানান, পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খুলে এবার ৮৮ লাখ ২৯ হাজার ১৭ টাকা পাওয়া গেছে। টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ান ডলার, সিংগাপুরী ডলার, সৌদী রিয়াল, মালোয়েশিয়ান রিংগিট এবং ভাল পরিমাণের স্বর্ণালঙ্কার পাগলা মসজিদের দান বাক্সে জমা পড়েছে

নেতাকর্মীদের পদত্যাগ নিয়ে সিলেট ইশা ছাত্র আন্দোলনের বিবৃতি

এসএস


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ