বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


দুই কোটি টাকার চাল নষ্ট হল খাদ্য গুদামে বন্যার পানি ঢুকে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুমিনুল ইসলাম:  উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে  সৃষ্ট বন্যায় মনু নদীর ভাঙনে মৌলভীবাজারের শহরের  একাংশ তলিয়ে যায়। পানিতে তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।

এছাড়া কুসুমবাগের দু’টি এবং উপজেলা পরিষদ এলাকায় দু’টি খাদ্য গুদামে পানি ঢুকে পড়ায় সাড়ে ৩০০ মেট্রিক টন চাল নষ্ট হয়েছে। এতে দুই কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

১৭ জুন পানি ঢুকে পড়ে চারটি গুদামে। এখানে প্রায় ১ হাজার ৫৬৮ মেট্রিক টন চাল ও ৪২৪ মেট্রিক টন গম রয়েছে। গুদামে থাকা বস্তার চারটি স্তর পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

১৫ জুন জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলার পরও এত বড় ক্ষতি হওয়ায় দায়েত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোজ কান্তি দাস চৌধুরী  বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এত মাল গুদাম থেকে কীভাবে সরাবো? গুদামের ভেতর থেকে পানি নেমে যাওয়ার পর মালামাল সরানো হচ্ছে।

তবে ক্ষয়ক্ষতির তেমন বেশি হবে না। মিলে মাল পাঠিয়ে নার্সিং করতেছি। প্রথমে মনে করেছিলাম, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৬০০ টন হবে। এখন দেখি তার চেয়ে অনেক কম হবে। সর্বোচ্চ সাড়ে ৩০০ টন নষ্ট হতে পারে।’

জেলা প্রশাসন চিঠি দেওয়ার পরও কেন এত ক্ষয়ক্ষতি হল, সেখানে অবহেলা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রের্কডপত্রের কথা, স্যার তো জানে না আমি কী কাজ করতেছি। স্যারের চিঠি পাওয়ার আগ থেকে বড়লেখায় ১২০ টন চাল পাঠাইছি।

এরপর জিআর চাল ডেলিভারি দিতেছি। শ্রীমঙ্গলে মালামাল সরাইছি। ডিসি স্যার একবার যদি বলতো তুমি কী কাজ করছো? তাহলে আমি বুঝিয়ে বলতাম। ত্রাণ মন্ত্রীর সভায় আমাকে কথা বলার সুয়োগ দেওয়া হয়নি। আমি তো চুরি করছি না। আমি সরকার কাজ করতেছি। নদীতে যখন পানি আসে তখন থেকেই গুদাম থেকে মালমাল সরাইতেছি।’

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সোমবার (১৮ জুন) মৌলভীবাজার সার্কিট হাউসে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এসময় তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ,এলজিইডি ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর,সিভিল সার্জন ও বিভিন্ন সরকারি কর্মকতার কাছে সন্তোষজনক তথ্য না পাওযায় ক্ষুব্দ হন। এসব কর্মকর্তাদের কার্যক্রম মনিটরিং করার স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান। মন্ত্রী আরও ক্ষুব্ধ হন খাদ্য গুদামের মালামাল ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কারণে।

প্রসঙ্গত, বারইকোনা এলাকায় মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে  মৌলভীবাজার শহরের  তিনটি ওয়ার্ড ও তিনটি ইউনিয়নের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এছাড়াও মৌলভীবাজার জেলায় বন্যায় ৫ উপজেলার ৩০ টি ইউনিয়ন ও দু'টি পৌরসভার মোট ৪০ হাজার ২০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ