বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


৭৫৯ সরকারি কর্মকর্তা দুদকের আসামি মাত্র আড়াই বছরে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: সরকারি সেবাখাতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কঠোর নজরদারি করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের হটলাইনে যত অভিযোগ আসছে তারমধ্যে সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্মকর্তা কার্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগই বেশি।

এসব অভিযোগ থেকে অফিসওয়ারি সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের একটি তালিকা করা হয়েছে। ওই তালিকা ধরে দুদক আরো টিম গঠন করে ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের আটক করবে বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছরে দুদকের দায়ের করা শতাধিক মামলায় মোট ৭৫৯ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসামি করা হয়েছে।

যুগ্মসচিব থেকে শুরু করে নিচের দিকের বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এই তালিকায় রয়েছেন।

এসব মামলা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সেবাখাতে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা বেশি। যে কারণে সেবা খাতগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, এলজিইডি, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, বিএসটিআই, বিআরটিএসহ বিভিন্ন অধিদপ্তর, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংকসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক।

এ ব্যাপারে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপরিচালক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য ইত্তেফাককে বলেন, দুদকে লিখিত অভিযোগ ও হটলাইনে প্রাপ্ত অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখেছে কমিশন।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তালিকা করা হয়েছে। তালিকা ধরে দুদক দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে দুদক সেবা প্রতিষ্ঠানে ঝটিকা অভিযান চালিয়েছে।

দুদকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২০১৮ সালের কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কমিশন বিভিন্ন সরকারি বিভাগ, সংস্থা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে শীর্ষ সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রস্তত করবে।

ইতিমধ্যে দুর্নীতি পর্যবেক্ষণ শাখা ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছে, যারা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভাগ ও সংস্থার সন্দেহভাজন অসাধু ব্যক্তিদের দুর্নীতি প্রমাণে তদন্ত করেছে। বর্তমানে ২৫টি বৃহত্ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য ২৫টি টিম কাজ করে যাচ্ছে।

এদিকে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনির চৌধুরী জানান, কমিশন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর অভিযান চালাতে একটি গোয়েন্দা ইউনিট গঠন করেছে।

দুদক পরিচালক মীর জয়নাল আবেদিন শিবলী এ ইউনিটের প্রধান। গোয়েন্দা ইউনিট ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। চলতি রমজান মাসে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে আকস্মিক অভিযান চালানো হচ্ছে।

ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন ইতোমধ্যে আরো দুটি টিম গঠন করেছে। দুদকের একজন মহাপরিচালকের (ডিজি) তত্ত্বাবধায়নে দুদকের সহকারি পরিচালক পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে দুই সদস্যের সমন্বয়ে দুটি পৃথক টিম কাজ শুরু করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, কমিশনের নতুন চালু হওয়া হটলাইনে গত ২৭ জুলাই থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ছোটবড় পাঁচ লাখ অভিযোগ জমা পড়েছে। দুদকে আগে জমা পড়া অভিযোগ ও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জমা পড়া অভিযোগ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি। অভিযোগ অনুসন্ধানের পর দায়ের করা মামলায় ২০১৬ সালে ৩৯৯ জন, ২০১৭ সালে ২৮৮ জন এবং চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৮৩ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এজহারভুক্ত আসামি হয়েছেন।

আরো পড়ুন- যেখানে হিন্দুরাও নিয়মিত রোজা রাখেন


সম্পর্কিত খবর