শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


৫ মে’র ঘটনা ইতিহাস থেকে কখনো মোছা যাবে না: আল্লামা কাসেমী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যায় শহীদানদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে ঢাকা মহানগর হেফাজতের উদ্যোগে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় এক বিশেষ দোয়া-মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

আজ শনিবার বাদ আসর অনুষ্ঠিত এ মজলিসে মুনাজাত পরিচালনা করেন হেফাজতে ইসলমের নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।

মুনাজাতে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দসহ শতাধিক উলামায়ে কেরাম শরীক ছিলেন।

মুনাজাত পূর্ব বয়ানে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে রাতে শাপলা চত্বরে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে লাখ লাখ অভুক্ত ও ভীতসন্ত্রস্ত হেফাজত কর্মীর উপর রাষ্ট্রীয় বাহিনী ইতিহাসের ঘৃণ্য বর্বর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। নিজ জনগণের উপর রাষ্ট্রের এমন নৃশংসতা দেখে সেদিন বিশ্ববাসী স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল। ইতিহাস থেকে এই কালো অধ্যায় যেমন কখনো মোছা যাবে না, তেমনি উলামায়ে কেরাম ও নিরীহ মাদরাসা ছাত্রদের এই রক্ত কখনো বৃথা যাবে না, ইনশাআল্লাহ।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আরো বলেন, শাপলা চত্বরের সমাবেশ সেদিন সন্ধ্যা ৬টায় শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন সমাবেশে আসতে থাকা তৌহিদী জনতা ও হেফাজত কর্মীদের জনস্রোতের উপর পুরো ঢাকা শহরের জায়গায় জায়গায় বিনা উস্কানীতে, বিনা কারণে বর্বর হামলা চালাতে শুরু করে। এতে সমাবেশ চলাকালীন সময়েই বহু সংখ্যক হেফাজত নেতা-কর্মী হতাহত হয়ে পড়েন। এর মধ্যে সমাবেশেই অসংখ্য আহত ব্যক্তি ছাড়াও ৪টি লাশ চলে আছে। এতে শাপলা চত্বরের বিশাল জমায়েতে ক্ষোভ ও ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, হেফাজতের পক্ষ থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে বার বার অনুরোধ করা হয় যে, এমন ভীতিকর পরিস্থিতিতে ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট অচেনা গ্রাম-গঞ্জের সরলপ্রাণ লাখ লাখ মানুষ কোথায় যাবেন?

ফজরের পরই হেফাজত আমীর এসে মুনাজাত করে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন। কিন্তু হেফাজতের বার বার আকুতি সেদিন শোনা হয়নি। এরপরের ঘটনা তো সকলেরই জানা।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ৫ ও ৬ মে শাপলা চত্বরের ঘটনায় এদেশের আলেম সমাজ ও তৌহিদী জনতার পরাজয়ের কিছুই নেই। বরং মুসলমানরা বিশ্বাস করে, শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের উত্তম প্রতিদান পরম করুণাময় আল্লাহ অবশ্যই পরকালে দান করবেন।

আর দুনিয়াতেও এর সফলতা চলতে থাকবে। ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদি অপশক্তি এই বাংলার জমিনে কখনো ঘাঁটি গেড়ে বসতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, সে দিন রাতে হেফাজত নেতাকর্মীদের উপর যা করা হয়েছে, সেটা ছিল বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা। যারা এটা ঘটিয়েছে, তাদেরকে যুগের পর যুগ এর দায় বহন করে যেতে হবে। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর বক্তব্য শেষে শাপলা চত্বরের শহীদানদের রূহের মাগফিরাত কামনা এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার-পরিজনের দুঃখ নিবারণ ও বরকতের জন্য বিশেষ দোয়া-মুনাজাত করা হয়।

মুনাজাতে বাংলাদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত বন্ধে আল্লাহর গায়েবী সাহায্য কামনা করা হয়।

মুনাজাতে হেফাজত আমীর ও দেশের শীর্ষ আলেম শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী  এবং মহাসচিব প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ হায়াতের জন্যও দোয়া করা হয়।

আইকোনোক্লাস্টিক হেফাজত!

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ