রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২২ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বিবাহ একটি ইবাদত, এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশে আলেম প্রজন্ম-২৪-এর আপত্তি  জুলাই-আগস্টের ত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাইনি: মির্জা ফখরুল নারীবিষয়ক সুপারিশগুলো কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: জামায়াত আমির ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দূর না করে নির্বাচন দিলে সমস্যা সমাধান হবে না’  প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা সরকারি নিবন্ধন পেল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ ‘সিরাহ মিউজিয়াম’ চালু করছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী মহাসমাবেশ সফল করতে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে হেফাজত নারী সংস্কার কমিশন ও প্রস্তাবনা বাতিলের দাবি খেলাফত মজলিসের

রোহিঙ্গা সমস্যা; বাংলাদেশকে সম্ভাব্য বিকল্পগুলো নিয়েই ভাবতে হবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন
কবি, কলামিস্ট ও সাংবাদিক

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢল ও ভূমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে দুই লাখ রোহিঙ্গা। উখিয়া ও টেকনাফের ১২টি ক্যাম্পে বসবাস করছে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এদের মধ্যে প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা আসন্ন বর্ষায় পাহাড় ধস ও বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। অবশ্য দুর্যোগ মোকাবিলায় রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

বেশি ঝুঁকিতে থাকা প্রায় এক লাখের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। কুতুপালং ক্যাম্পের মধুরছড়ার পশ্চিমে পাহাড়ি এলাকায় ৫৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করে উন্নয়নসহ সরকার শেড নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। কিন্তু তাতেই কি সমস্যার সমাধান হবে?

বলতে চাচ্ছি, বর্ষা আসন্ন। পাহাড়ের ঢালে কোনো রকমে মাথা গুঁজে থাকা লাখ লাখ রোহিঙ্গার জীবনের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। বিদেশি ত্রাণ সহযোগিতার প্রবাহ ক্রমেই কমছে। মিয়ানমার মুখে প্রত্যাবাসনের কথা বললেও কার্যত তাদের অনাগ্রহই স্পষ্ট হচ্ছে। বরং তাদের আগ্রাসী চরিত্রের প্রকাশ ঘটছে দেশটির অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর ওপরও।

এ অবস্থায় আগামী দিনগুলোতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ কী করবে? জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছে। রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) প্রতিনিধি দল।

প্রতিনিধি দল স্বীকার করেছে, রোহিঙ্গা ইস্যু মিয়ানমারেরই সংকট এবং এর সমাধান সেখানেই নিহিত। কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলার পর এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন প্রতিনিধি দলের নেতা ইউএনএসসির বর্তমান প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো আদোলফো মেজা কাদরা ভেলাসকেজ।

১৫ সদস্যের জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিনিধিদলে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও চীনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।অপর সদস্যরা হলেন- বলিভিয়া, গিনি, ইথিওপিয়া, কাজাখস্তান, কুয়েত, নেদারল্যান্ড, পেরু, পোল্যান্ড ও সুইডেনের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং আইভরি কোস্টের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি।

রকমারি ডটকমে বিক্রির শীর্ষে যে ১০ ইসলামি বই

গতকাল রবিবার তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিদর্শন করেছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তারা মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ে। সেখানে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও তাদের কথা হবে।

ফিরে গিয়ে তারা রোহিঙ্গা সংকটের নানা দিক ও সম্ভাব্য সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন তুলে ধরবে। নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন দুই সদস্য দেশের ভিন্নমত থাকায় এই উদ্যোগের সাফল্য নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই বাংলাদেশকে সম্ভাব্য বিকল্পগুলো নিয়েই ভাবতে হবে বলে মনে করছি।

সর্বোপরি, কক্সবাজারের মতো ছোট একটি জায়গায় এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে দীর্ঘদিন রাখা হলে তা হবে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তাই আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপ আরও বাড়াতে হবে, যাতে দ্রুত তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

জাতিসংঘকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। চীন ও রাশিয়া যাতে প্রত্যাবাসনে সহায়তা করে, তার জন্যও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে। আমরা চাই, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।

soyedfaizul@gmail.com
৩০ এপ্রিল ২০১৮


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ