শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসানের ইন্তেকালে খেলাফত মজলিসের শোকপ্রকাশ কাল ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে বিএনপি মহাসচিবের শোক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ যেসব সুপারিশ সংস্কার কমিশনের বাংলাদেশিদের সুখবর দিলো ইতালি, পুনরায় ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হাসিনা ও তার দোসরদের পুনর্বাসনে কোনো সাফাই নয়: সারজিস মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে সিলেট মহানগর জমিয়তের শোক পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু দাবি পূরণে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের

‘কাকরাইলে যা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: আমির না শুরা এ বিতর্ক থেকে শুরু হওয়া তাবলিগের সঙ্কট বর্তমানে নেজামুদ্দীনের এতায়াত না আলমি শুরা এটি নিয়ে চলছে বেশ উত্তেজনা।

সাম্প্রতিক সময়ে এ বিতর্ক চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। গতকাল শুক্রবার থেকে কাকরাইলে মাওলানা সাদপন্থী ও শুরাপন্থীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। তবে দুপুরে প্রশাসন ও শুরা সদস্যদের বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।

সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা দাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ এ কাজ এমন বিতর্কমুক্ত থাকুক। কিন্তু কোন পথে হবে এর উত্তরণ সেটি নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

এ বিষয়ে দীর্ঘ দিন তাবলিগে সময় দেয়া দুজন প্রাজ্ঞ আলেমের সঙ্গে কথা হয় আওয়ার ইসলামের।

মিরপুর আকবর কমপ্লেক্স মাদরাসার মুহতামিম, দেশের শীর্ষ আলেম মুফতি দেলোয়ার হুসাইন বলেন, কাকরাইলের নিয়ন্ত্রণ বিজ্ঞ উলামাদের হাতে না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

আরেকটি বড় কারণ হলো, মুরুব্বীদের  না মানা। দিল্লির নিজামুদ্দীন মারকাজের মাওলানা সাদ কান্ধলভি যেমন তার বড় মুরুব্বী, উস্তাদদের মানছেন না বাংলাদেশেও তার অনুসারীরা উলামাদের মানছেন না। ফলে নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে।

কাকরাইলের সমস্যা নিরসনে শীর্ষ উলামাদের একটি কমিটি করা হয়েছিলো। তবুও কেন সমাধানের কিছু দেখা যাচ্ছে না?

এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি দেলোয়ার হুসাইন বলেন, উলামাদের কমিটি হয়েছে, তারা সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছেন সব ঠিক আছে। কিন্তু মাওলানা সাদ অনুসারীরা তথা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামরা আলেমদের ‍সিদ্ধান্ত মানছে না।

তারা বৈঠকে এক কথা বলে, সবার সঙ্গে একমত হয়ে স্বাক্ষরও করে। কিন্তু দূরে গিয়ে উলামাদের কথার কোন তোয়াক্কা করেন না। আল্লামা মাহমুদুল হাসান, আল্লামা আশরাফ আলী, আল্লামা আবদুল কুদ্দুস এদের মতো শীর্ষ আলেমদের কথা যদি তারা মানতে না পারেন তাহলে কাদের কথায় তাবলিগ করবেন তা আমার বুঝে  আসে না।

চলমান সমস্যার সমাধান কীভাবে হতে পারে? জানতে চাইলে তিনি বলেন,

সমাধান তো একদমই সহজ। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, কাকরাইলের সবাই যদি শীর্ষ আলেমদের পরামর্শ মেনে নেন, তাদের নির্দেশিত পথে মেহনতকে এগিয়ে নেন তাহলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।

তাবলিগে সাল লাগানো আরেক আলেম বাসাবোর আবুজর গিফারী কমপ্লেক্সের পরিচালক মাওলানা আবদুর রাজ্জাক নদভি চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, কাকরাইলে যা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। একটি শান্ত ও ঐক্যবদ্ধ দীনি প্লাটফর্ম এমন অবস্থার শিকার হবে তা ভাবাই যায় না। তাবলিগ জামাত সবার আস্থার প্রতীক  ছিলো। কিন্তু এখন আর সে আস্থা বাকি থাকবে বলে মনে হয় না।

সমস্যার বড় একটি কারণ হলো, মূল মানহাজ থেকে সরে আসা। মাওলানা সাদ কান্ধলভি এমন দৃষ্টিভঙ্গি লালান করেন যা তাবলিগের আকাবিরদের মানহাজের খেলাফ। তিনি বেশ কিছু বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। যা দীনের ইনহেরাফের নামান্তর। যে কোনো দল বা জামাত যখন গোড়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এটাই স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, চলমান বিভক্তির কারণে তাবলিগ জামাতের যা ক্ষতি হচ্ছে তা পূরণ করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় শক্তি ‍বিভক্ত হয়ে পড়লে তা শাখা প্রশাখায় ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও তাই হচ্ছে।

কাকরাইলে কেন এ সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না?

কাকরাইলে যারা জিম্মাদার তাদের অধিকাংশ জেনারেল শিক্ষিত। আলেমের সংখ্যা কম। আবার আলেমদের চেয়ে জেনারেলদের প্রভাব বেশি। তাবলিগের কাজ শুরু হয়েছে আলেমদের হাতে, প্রতিষ্ঠাও পেয়েছে আলেমদের হাতে। যখন তাবলিগের ‍জিম্মাদারি ননআলেমদের হাতে গেছে তখন থেকেই সমস্যার শুরু।

তাবলীগের মুরব্বি ও আলেমদের বয়ান, ইসলামী কিতাবসহ গুরুত্বপূর্ণ বয়ানের অ্যাপ ইসলামী যিন্দেগী ইনস্টল করুন আপনার মোবাইলে 

প্রফেসর, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তাররা যদিও দীনের পথে এসে তাবলিগের মেহনতে যুক্ত  হয়ে দাওয়াতে কাজ করেন কিন্তু একজন আলেম যে গভীর থেকে দীন বুঝেন, দীনের দরদ বুঝেন সেভাবে জেনারেল সাথীরা সেভাবে অনুধাবন করতে পারেন না।

এ জন্যই আলেম দরকার। আমি অবশ্যই তাদের সম্মন করি, স্বাগত জানাই। তারা আমাদের ভাই। আমার বলার উদ্দেশ্য হলো মূল ‍জিম্মাদারি ও তদারকি আলেমদের হাতে থাকা উচিত।

বর্তমনে যে পরিস্থিতি তাতে মনে হচ্ছে না, কোনো পক্ষই সমাধান বা ঐক্য চাচ্ছে৷

চলমান সমস্যা সমাধানে আপনার কী পরামর্শ?

আমি মনে করি উলামায়ে কেরামের জোরালো ভূমিকা ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না৷ তাই আওয়ার ইসলামের মাধ্যমে দীনের প্রতি দরদ ভালোবাসা রাখেন এমন সবার কাছে দরখাস্ত করতে চাই, দেশের শীর্ষ, বিজ্ঞ ও বিতর্কমুক্ত আলেমদের একটি কমিটি গঠন করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সামাধানে ভূমিকা রাখুন৷

আলেমদের যে কমিটি বিশ্ব ইজতেমার আগে গঠন করা হয়েছিলো যদি তাদের মাধ্যমেও সমাধান হয় তাহলে তাদের পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানাবো৷

সাংবাদিক, প্রশাসন উলামায়ে কেরাম সবাইকে ভূমিকা রাখার আবেদন করবো৷ আমি একজন পুরাতন ও বহু দেশ সফরকারী সাথী হিসেবে সমস্যা সমাধানে যেকোনো খেদমত আঞ্জাম দিতে তৈরি আছি৷

আল্লাহ আমাদের মাঝে জোড় মিল মুহাব্বত বাড়িয়ে দিন, তাবলিগ জামাতকে সব ধরনের বিপদ থেকে হেফাজত করুন৷ আমিন৷

আরও পড়ুন: কাকরাইল মারকাজের অবস্থা থমথমে; পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দুই পক্ষের

কাকরাইল মারকাজ ছাড়তে হচ্ছে মাওলানা জুবায়ের ও ওয়াসিফকে

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ