শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


হুথি বিদ্রোহীদের থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক রমণীর গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম: ইয়েমেনের রাজধানী সানায় দেশটির ইরানি হুতি মিলিশিয়ার একটি সামরিক আদালত ২২ বছর বয়সী দুই নারীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।

এ প্রথম ঘটনা যাতে ইয়েমেনি একজন নারী আরব দেশের গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।আল-আরাবিয়া জানায়, ২২ বছর বয়সী আসমা আল-ইসলামি সানার একটি কারাগারে বন্ধি জীবন পাড় করছিলেন। তিনি দুই সন্তানের মা।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতিশোধের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া একটি অসহায় নারী তিনি।মানবাধিকার সংস্থাগুলো আসমা আল-ইসলামিকে দোষারোপ করে নিহতদের সমালোচনা করেছে এবং তাকে দেওয়া নিষ্ঠুর এ মৃত্যু দণ্ডের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে তার মুক্তির দাবি জানাচ্ছে।

আসমা সাধারণ এক দরিদ্র পরিবারে ৭ জুলাই, ১৯৯৫ সালে আল-শামি শহরের সোবহান এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। সাধারণ এক লোকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তার স্কুলে নয়জন ছাত্র-ছাত্রির মধ্যে মেধাবি ছিলো সে। বিয়ের পর একটি ছেলে আর একটি মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়।

আট বছর পর, তিনি তালাকপ্রাপ্ত হয়।দুই বছরের বিরতির পর, তিনি ২০১৫ সালের মে মাসে অাবার তার বিয়ে হয় স্থানীয় আল কায়েদার কমান্ডার খালিদ সালাম আল-রাদিয়ার সঙ্গে। কিন্তু আসামা জানেন না যে তার স্বামী আল-কায়েদার সদস্য।

যথন তিনি জানতে পেরেছিলেন, নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা শুরু করেন। তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। সে পালাতে চায় কিন্ত বারবার অক্ষম হয়ে ফিরে আসে।

গ্রেফতার ও নির্যাতন
২০১৫ সালের ৫ অক্টোবর হুতি মিলিশিয়ার সৈন্যরা তাকে গ্রেফতার করে।তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো সে গুপ্তচবৃত্তি করেছে।

গ্রেফতার ও কারাগারের জীবন আসমার জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা ছিলো।নির্যাতন আর নীপিড়নের এ মহা উৎসব কোনো দিন কল্পনাও করেনি আসমা। অনেক লোকের সঙ্গে গাজাগাজি করে থাকা।

এই সময়ে শারীরিক ও মানসিক সহিংসতার সাথে ক্রমাগত অস্থিরতায় মরে যেতে মন চাইত তার।আসমার বাবাকেও তার সামনে আঘাত করেছিল আর বলছিলো তাকে সত্য বলতে। তার বাবা কে ছাদে লটকিয়ে রেখেছে তারা। অনেক মারধর করেছে।

তার বাবা ৬ জানুয়ারি, ২০১৭ মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে মুক্তি পায়। কিন্ত আসমাকে তারা মুক্তি দেয় না।

মৃত্যুদণ্ড
৩০ জানুয়ারি হঠাৎ করে আদালত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেখানে আসমা, সাইদ সাফার আল-রশিদ ও আহমদ আব্দুল্লাহকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

অ্যামনেস্টি মানবাধিকার সংস্থা  তাদের উপর অমানবিক নির্যাতনের নিন্দা করেছে ও সব কয়েদিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।কিন্তু তারা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এভাবেই হাজারো নারীর জীবন আজ অনাকাঙ্খিত এক জগতের দিকে প্রতিনিয়ত প্রবাহিত হয়। কিন্তু বিশ্ব তার কোনো খোঁজই রাখে না।

আরো পড়ুন- ইসরাইলি বাহিনীর গান পয়েন্টে দাঁড়ানো এক নারীর গল্প


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ