শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


কমনওয়েলথ সম্মেলনে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : মনওয়েলথ নেতাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে পারস্পরিক মতবিনিময়কালে এশিয়ার দেশগুলোর স্বার্থ ও সমৃদ্ধির বিভিন্ন উপায় ও উপকল্পণার প্রস্তাব করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কমনওয়েলথ সচিবালয় পরিচালনা পর্যালোচনায় উচ্চ পর্যায়ের গ্রুপে এশিয়ার দেশগুলো থেকে প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমনওয়েলথের কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সচিবালয়ের জ্ঞান ও বিশেষজ্ঞ দক্ষতাকে আমরা মূল্য দেই। আমরা মনে করি, সঠিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মতামত নেয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, আমরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিতে পাশাপাশি বসবাস করতে পারব এবং আমরা জনগণের স্বার্থে গঠনমূলক-কৌশল প্রণয়নে কাজ করতে পারব যদি দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করতে পারি।

দিনব্যাপী রিট্রিটে উচ্চ পর্যায়ের গ্রুপের সম্প্রসারণ, অর্থায়ন ও কমনওয়েলথ সচিবালয় গভর্নেন্স এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে রিট্রিট  সভাপতিত্বে এক অধিবেশনে শেখ হাসিনা বলেন, বোর্ড অব গভর্নরের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার জন্য একটি প্রক্রিয়া থাকা উচিত।

বিশ্বের অন্যান্য ক্ষমতাশীল নেতাদের সামনে জোরের সঙ্গে প্রধা্নমন্ত্রী বলেন, যখন সিএফটিসি সংকুচিত হয়ে আসছে এবং অন্যান্য অর্থায়নের উৎস নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, এমন সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, উদ্ভাবনী অর্থায়নসহ বিভিন্ন অর্থায়ন প্রক্রিয়া ও বিকল্পের দিকে মনোনিবেশ করা।

‘উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থায়নে বহুপক্ষীয় ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে বিনিয়োগ ঋণের জন্য রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টির আওতায় আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের একটি বক্তব্যের উল্লেখ করে বলেন, আসুন, জাতীয় সম্পদের অপচয় না করে তা জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ব্যবহার করি ‘

শেখ হাসিনা কানেক্টিভিটি সম্পর্কিত খসড়া ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কানেক্টিভিটি ইস্যুটি কমনওয়েলথে স্থান পেয়েছে দেখে আমরা আনন্দিত হয়েছি।

‘আমরা কানেক্টিভিটিকে ব্যাপক অর্থে বিবেচনা করে থাকি। আমরা জ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, জনগণ, সড়ক-রেল-আকাশ পথ, পণ্য পরিবহন, সেবা ও বিনিয়োগ আদান-প্রদান এসব কিছুকে সংযুক্ত করায় বিশ্বাস করি। ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কানেক্টিভিটি একটি অধিকতর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চাবিকাঠি ‘

‘প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) উপআঞ্চলিক কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কানেক্টিভিটি এজেন্ডা প্রশ্নে একটি দ্রুত কর্মপরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করছি এবং এই পরিকল্পনার আওতায় মাল্টি সেক্টরাল অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য কমনওয়েলথ অংশীদারিত্বের আহ্বান জানাচ্ছি ‘

প্রধানমন্ত্রী সাইবার ইস্যু বিষয়ে বলেন, আমরা এ নিয়ে সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ উভয়েরই সম্মুখীন। একদিকে বিভিন্ন দেশে একটি অবাধ, গতিশীল ও নিরাপদ ইন্টারনেটের জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক ডাটা ইকোসিস্টেমে ‘উন্মুক্ততা’ সমর্থন করা প্রয়োজন।

অপরদিকে সাইবার হামলার হুমকি ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সন্ত্রাসের বিস্তার মোকাবেলা তরুণ প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের কথা তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা কমনওয়েলথ সাইবার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই ঘোষণায় রূপরেখা হিসেবে সাইবার পরিচালনায় সহযোগিতার ক্ষেত্রে এই নীতি-আদর্শ ও দিক-নির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আমাদের জনগণের জন্য প্রযুক্তি, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সক্ষমতা বৃদ্ধি অবশ্যই অগ্রাধিকার পেতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আইসিটি খাতের উন্নয়নকে জাতীয় অগ্রাধিকারের একটি বিষয় হিসেবে গ্রহণ করেছে। ডিজিটাল বিভাজন হ্রাস, দারিদ্র্য দূরীকরণ, টেকসই উন্নয়ন অর্জন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিনিময় এবং এ সংক্রান্ত সক্ষমতা বৃদ্ধিকে মৌলিক বিষয় বলে মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণার আশু বাস্তবায়নের জন্য সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়নের জন্য কমনওয়েলথ সচিবালয়ের প্রতি আহ্বান জানান।

এসএস

আরো পড়ুন : ঈদগাহে অসামাজিক কার্যকলাপে নিষেধাজ্ঞা নিয়েও সমালোচনা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ