বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫


ইন্ডিয়ায় চলছে আইপিএল, বাংলাদেশে এসব কী চলছে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুজন চৌধুরী

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ আইপিএল খেলা চলছে, আমাদের দেশের ক্রিকেট ভক্তরাও আইপিএল দেখে থাকেন।

এই খেলা চলছে ভারতে কিন্তু প্রতিদিনকার ম্যাচ নিয়ে জুয়া চলছে আমাদের এ দেশে, গ্রাম পর্যায়ে জুয়াটা এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। চা দোকানে তো আইপিএল চলা অবস্থায় আমরা চা খেতে গেলে চান্সই পাই না, ৫ টাকার চা ৫০টাকা দিলেও হয়তো দোকানদার বিক্রি করবে না হয়তো এমন অবস্থা।

পুরো চা দোকানে জুয়াড়ি আর জুয়াড়ি। সে তাদের জমা টাকা নিতে আর দিতেই ব্যস্ত। ম্যাচ প্রতি তো জুয়া চলে, প্রতি ওভারেও জুয়া চলে, বলও বাদ যায় না। বল নিয়েও বাজি।

আচ্ছা এটা নিয়ে মাথা ঘামালাম না, এরা সবাই জুয়াড়ি, এর টাকা ও পাবে, ওর টাকা সে পাবে। কোন সমস্যা নাই। ব্যাপারটা এখানেই বা নরমালিই চুকিয়ে যেতো যদি আমি বা আমার মত কেউ সাফার না করতো। চা দোকানে আইপিএল নিয়ে যে জুয়া চলছে সেটার আঁচ আমার গায়েও লাগতেছে। তাই বিষয়টি টাইপিং এ নিয়ে আসলাম।

গতকাল দুপুরে গাছ থেকে ডাব পাড়তে গিয়ে দেখি, গাছে একটা নারকেল বা ডাবও নেই ইভেন যেটা মাত্র এই দুনিয়াতে আসছে সেটাও কেটে নিয়ে গেছে। এইরকম ৩টা গাছকেই একবারে বিধবা করে দিয়া গেছে।

বুঝতে বাকি রইলো না যে ঘটনা এলাকার এইসব জুয়াড়ি গুলো করেছে। রাতে ঘটলো আরেকটা। আম্মা সন্ধ্যা বেলা পাতিল ধুয়ে তিনটা বাইরে রাখছে, সকালে এই সব পাতিল পাওয়া যায়নি। পুরোনো ভাঙা কিছু টিন লোহা ছিলো ওইগুলোও রেখে যায়নি।

মুরগির ঘরের তালা নিয়া তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করতে চেয়েছিলো সম্ভব হয়ে উঠেনি। ও সবশেষে লাঠির মাথায় ঘাম লাগিয়ে জানালা দিয়ে লাঠি ঢুকিয়ে আমার বালিশের সাথে থাকা ফোনকে কিছু একটা করতে চেয়েছে, পারেনি। লাঠি ভিতরে পড়েছিলো।

এখন মারাত্বক টেংশংয়ে আছি না জানি এবার জানালা দিয়ে আমাকেই নিয়ে যেয়ে এরা বিক্রি করে জুয়া খেলে আবার। এমনিতেই উন্নয়নের বিদ্যুৎ থাকে না তাই রাতে জানালা খুলে ঘুমাতাম। কিন্তু এখন পারছি না।

যাই হউক নগদে আসি এবার। কিছুক্ষণ আগে গ্রামে বাড়ির পাশের চা দোকানে রিচার্জ কার্ড কিনতে গেছি। সেখানে বাজি ধরা নিয়ে চলছিলো কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে ওয়াটসন এর সেঞ্চুরি করা না করার বাজি নিয়ে একটা আরেকটাকে দিছে পাইপ দিয়ে বাড়ি, আমি ভাবছি ওই হালায় মইরা গেসে। পরে দেহি না, উইঠা প্রতিশোধ নিসে, সেও দিছে কয়টা।

দোকানে উপস্থিত লোকজন থামায়া দিসে, না হলে এই ম্যাচটাও আরও কিছুক্ষণ চলতো। যারা থামাইসে, তাদের কথা আর কি বলবো, তারাও সেইটা,পাক্কা জুয়াড়ি। ওইভাবে বলতে গেলে বলতে হবে যে লাল কুত্তা শিয়ালের ভাই।

আমি জানি না গ্রাম পর্যায়ে কেউ এগুলো জানেন কিনা। তবে সম্ভবত সবগুলো যায়গায়ই এখন জুয়া চলছে। দেখুন প্রসাশনিকভাবে এটার বিরুদ্ধে আইনের প্রয়োগটা কী? বা আছে কিনা সেটা জানা নাই।

আপনি বা কোনো আত্মীয় কি ইন্টারনেট ও মাদকাসক্তিতে ভুগছে? চিকিৎসা নিন এখনই...

তবে আমার মনে হয় সামাজিকভাবে সমাজ সচেতন ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে এদের বোঝানো বা প্রয়োজনে দলবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত। আমার মতে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এখানে খেলা নিয়ে বাজি ধরা প্রভাবশালী বা তাদের সন্তানদের সাথে বাজি ধরে কিছু নিম্নশ্রেণীর মানুষ।

(সিএনজির ড্রাইভার রিক্সা চালক, ভ্যানচালক, ও দিনমজুরসহ অনেকেই) এরা জুয়ায় জড়িয়ে অনেক সময়ে উপার্জনের সম্বলটাও কম দামে বিক্রি করে ফেলে। ও তার পাশাপাশি এলাকার বখাটে চোর ছ্যাঁচড়ারা এই জুয়া খেলার জন্যে যা পায় বাড়ি থেকে সেটাই নিয়ে যায়।

ব্যাপারটা হাস্যকর হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অনেক মানুষ। আবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই নিম্ন শ্রেণীর যারা এই জুয়ায় অংশ নেয় সেই পরিবারগুলোও।

গ্রাম পর্যায়ে এই খেলা নিয়ে জুয়ার বিরুদ্ধে দলবদ্ধভাবে কিছু একটা করা দরকার। স্পেসিফিক সঠিক তথ্য জানি না, তবে আইপিএলে ইন্ডিয়াতে যে টাকা টুর্নামেন্ট আয়োজনসহ এবং প্লেয়ারদের যে টাকা খরচ হয়, বাংলাদেশে তার চাইতে জুয়ার লেনদেন বেশি হয় বলে মনে হচ্ছে।

ব্যাপারটা আপনার কাছে সিরিয়াস না বা অতটা গুরুত্ব পূর্ণও কিছু না, কিন্তু টাকার নেশায় উপার্জন সম্বল হারানো এই নিম্ন শ্রেণীর মানুষ ও পরিবারের কথা চিন্তা করলেই এই জুয়ার বিষয়টি বন্ধ হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা এমনিতেই সামনে চলে আসবে।

মুন্সীগঞ্জে আইপিএল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১০

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ