বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


দুই সিটিতে নির্বাচন করবেন ৫ আলেম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আতাউর রহমান খসরু
আওয়ার ইসলাম

আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। গত ৩১ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা তার তফসিল বিবৃতিতে এ তারিখ ঘোষণা করেন।

তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে মনোয়নপত্র জমা দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনার ১৫-১৬ এপ্রিল যাচাই-বাছাইসহ প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন। ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত তারা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার সুযোগ থাকবে।

৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ভোটার রয়েছে ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন। ৩১টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত খুলনা সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৪ ।

নির্বাচন সামনে রেখে দুই সিটিতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ভরে গেছে শহরের অলি-গলি। দেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোয়নপ্রত্যাশীদের তৎপরতায় বেশি চোখে পড়ছে সেখানে। চোখে পড়ছে কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণাও।

মনোয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ঘনিয়ে আসলেও দুই সিটিতে চোখে পড়ছে না ইসলামি দলগুলোর কোনো প্রার্থীর উল্লেখযোগ্য তৎপরতা।

ইসলামি ধারার দলগুলোর মধ্যে খুলনা সিটিতে শুধু ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-ই নির্বাচন করবে। গাজীপুর সিটিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছাড়াও নির্বাচন করবে ইসলামী ঐক্যজোট।

জোটবদ্ধ নির্বাচন করার ইচ্ছে থাকলেও বিকল্প প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

এছাড়াও খেলাফত আন্দোলনও গাজীপুরে প্রার্থী দেয়ার চিন্তা করছে।

ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে খুলনা সিটিতে নির্বাচন করবেন নগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক। আর গাজীপুরে নির্বাচন করবেন জেলা সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা নাসির উদ্দিন।

তারা উভয়ে ৮ এপ্রিল জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে নিজ নিজ দলের মনোয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

গাজীপুরে ইসলামী ঐক্যজোটের পক্ষে নির্বাচন করবেন দলের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান। তিনি আগামীকাল বা তার পরশু নিজ দলের মনোয়নপত্র সংগ্রহ করবেন বলে জানিয়েছেন দলের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নিজামী।

আলেমদের বয়ান ও কিবাতের অনন্য অ্যাপ ইসলামী যিন্দেগী, ইনস্টল করুন

তিনি বলেন, ‘মাওলানা ফজলুর রহমান আমাদের প্রার্থী। তিনি গতবারও মনোয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করেন। এবার আমরা জোরালোভাবে কাজ করবো।’

২০ দলীয় জোটের সর্বশেষ বৈঠকে জোটবদ্ধ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ হিসেবে শরিক দলগুলো পৃথক নির্বাচন করবে না। জোটের অন্যতম শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মুফতী ওয়াক্কাস অংশ জোটের প্রার্থীকেই সমর্থন জানাবেন।

তবে জমিয়ত (আবদুল মোমিন) অংশের গাজীপুরে বিকল্প প্রার্থীও প্রস্তুত রেখেছেন। তাদের মনোনীত প্রার্থী হলেন টঙ্গী দারুল উলুম মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতী মাসউদুল করীম।

এ অংশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘খুলনার ব্যাপারে আমরা ভাবছি না। তবে গাজীপুরের ব্যাপারে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। দলে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হলে মুফতী মাসউদুল করীম আমাদের প্রার্থী হবেন বলে আশা করছি।’

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও গাজীপুরে প্রার্থী দেয়ার কথা চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন দলের ঢাকা মহানগরের আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী।

আজ তারা নির্বাচনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানিয়েছেন। তবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হলে সম্ভাব্য প্রার্থী কে হবেন তা জানাতে অস্বীকার করেছেন তিনি।

২০ দলীয় জোটের অপর শরিক খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, তারা জোটের প্রার্থীকেই সমর্থন দিবেন। পৃথক নির্বাচনের কোনো ইচ্ছে তাদের নেই। এমনকি বিকল্প কোনো প্রার্থীর কথাও চিন্তা করছেন না তারা।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসেরও খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছে নেই। দলের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন আওয়ার ইসলামকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও প্রস্তুতিতে এগিয়ে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দুই সিটিতে তাদের সাংগঠনিক কাঠামোও তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী।

দলের যুগ্ম-মহাসচিব ও নির্বাচনী সেলের অন্যতম সদসদ্য মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা দুই সিটি নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রস্তুতি শুরু করেছি আরও ৬ মাস পূর্বে। প্রার্থীও সে সময় চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

সাবস্ক্রাইব করুন আওয়ার ইসলাম টিভি

গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে কেন্দ্রীয়ভাবে দুটি সেল গঠন করা হয়েছে। গাজীপুর সেলের প্রধান দলের যুগ্ম-মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান এবং খুলনা সেলের প্রধান দলের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল আউয়াল।

নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা বিজয়ী হওয়ার জন্যই নির্বাচন করি। বিজয় ছাড়া অন্যকিছু আমরা ভাবছি না। যদি পেশী শক্তি, কালো টাকা ও প্রশাসনের অন্যায় সহযোগিতা না থাকে আমাদের প্রার্থী বিজয়ীয় হবে ইনশাআল্লাহ!’

নির্বাচনের প্রস্তুতি তুলে ধরে গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আল হামদুলিল্লাহ! দুই সিটিতেই আমাদের ওয়ার্ড পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। আমরা এ সাংগঠনিক সক্ষমতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।

এছাড়াও আমাদের টার্গেট প্রতিটি ভোটারের কাছে দাওয়াত পৌঁছানো। এজন্য নির্বাচনী কেন্দ্র ভিত্তিক দাওয়াতি কাফেলার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। তারা নিজ নিজ কেন্দ্রের ভোটারদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।’

নির্বাচনের অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রার্থীরা দীর্ঘদিন এ সিটিতে রাজনীতি করেছেন, মানুষের জন্য কাজ করেছেন তাই গণমানুষের কাছে তারা অপরিচিত কেউ নন। সুতরাং নির্বাচনের উপর অনভিজ্ঞতার কোনো প্রভাব পড়বে না বলেই আশা করেন এ নেতা।

আরও পড়ুন: কোটা পদ্ধতি চান না আলেমরাও

-রোরা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ