সাখাওয়াত উল্লাহ
আওয়ার ইসলাম
যুক্তরাজ্যে হটাৎ করেই ‘পানিশ অ্যা মুসলিম’ চিঠি বিতরণের পর অনেক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে।
চিঠির মতে ৩ এপ্রিল ছিল ‘পানিশ অ্যা মুসলিম’ দিন। এদিন মুসলিমদের ওপর বেশকিছু কাজ করলে পয়েন্ট দেওয়া হত। যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে বেশকিছু জায়গায় এই চিঠি বিতরণ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে চারজন ব্রিটিশ মুসলিম রাজনীতিবিদও এই চিঠি পেয়েছিলেন।
এই ‘পানিশ অ্যা মুসলিম’ দিনটি শেষ হল ৪ দিন আগে। পুলিশের তৎপরতার কারণে কোন ধরণের সহিংসতা অথবা মুসলিমদের কোনপ্রকার হামলা না হলেও এই চিঠির মূল উদ্দেশ্য অবশ্যই সফল হয়েছিল, যা ছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যের একটি ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া।
এই চিঠির জন্য পুরো রাষ্ট্রজুড়েই ভীতি ছড়িয়ে পড়েছিল। বহু নারীই তাদের কাজ থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। বহু মুসলিম শিশুদেরকে স্কুল থেকে ছুটি নিতে বলা হয়েছিল। নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছিল পুরো মুসলিম সম্প্রদায়।
যেসকল মুসলিম সেদিন রাস্তায় বেড়িয়েছিল, তারাও নিজেদের মধ্যে একটি ভীতি নিয়ে বের হয়েছিলেন।
অনেকেই বলেছিলেন, এটি একটি ভুয়া চিঠি এবং এই দিনটিকে পাত্তা না দিয়ে দৈনন্দিন জীবনযাপন করতে। অনেকেই আবার এই দিনটিকে ‘লাভ অ্যা মুসলিম ডে’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।
এ সময় যুক্তরাজ্যের সব মানুষকে মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো এবং যত্ন নিতে বলা হয়েছিল।
তবে যে যাই বলুক, একটা কথা সত্য যে যুক্তরাজ্যের মুসলিমরা ইসলাম বিদ্বেষের শিকার হচ্ছে।
সাম্প্রতিককালে এই অবস্থার অবনতিই ঘটেছে। এটি এখন যুক্তরাজ্যের রাজনীতি এবং টেলিভিশনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।
চলতি বছরে যুক্তরাজ্যে মুসলিমদের ওপর ৩৫৭টি হামলা চালানো হয়েছে, যা প্রতি বছরে বেড়েই চলছে। তার মধ্যে আটক করা হয়েছে শতাধিক মানুষকে।
তার মধ্যে একজন ছিলেন যিনি কিনা লন্ডনের জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ নিতে লেইচেস্টারে ১২ বছরের একটি মেয়ের ওপর দিয়ে নিজের গাড়ি চালিয়ে দেন।
সাবস্ক্রাইব করুন আওয়ার ইসলাম টিভি
ইসলাম বিদ্বেষ কখনই কোন সমাধান হতে পারে না। ইসলামে সহিংসতা এবং যুদ্ধকে উৎসাহিত করে না। তবে যুক্তরাজ্যের এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে কারণ অনেকেই ইসলাম এবং মুসলিমদের সম্পর্কে তেমন বিস্তারিত কিছুই জানে না।
ইসলাম বিদ্বেষ গোঁড়া থেকে নির্মূল করতে এই সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্যের উচ্চতর নেতাদের রাষ্ট্রীয় আলোচনায় বসা উচিত। মুসলিমদের জীবন এবং তাদের আদর্শ সম্পর্কে সকল মানুষকে সচেতন করতে হবে।
মুসলিমদের বিপক্ষে সকল আলোচনার অবসান ঘটিয়ে তাদেরকে সমাজের একটি অংশ হিসেবে মেনে নিতে হবে। শুধুমাত্র একটি ‘লাভ অ্যা মুসলিম ডে’ দিয়ে কিছুই হবে না।
মুসলিমরা শুধুমাত্র নিরাপদে থাকতে চায়। তারা চায় মর্যাদার সাথে বাঁচতে, যেন তাদের একটি মানুষ হিসেবে দেখা হয়। আমাদের উচিত সকল ইসলাম বিদ্বেষের অবসান ঘটিয়ে সকলকে এক কাতারে দেখা।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে সাখাওয়াত উল্লাহ’র অনুবাদ