মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫


‘বাগদাদ যখন ধ্বংস হচ্ছিল আলেমরা তখন বিতর্কে লিপ্ত ছিলেন’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাইমুম সাদী

আজ চরমোনাই, কাল জমিয়ত, পরশু খেলাফত, পরের সপ্তাহে অন্য কোনো দল, অন্য কোনো ইসলামি ব্যক্তিত্বকে যদি কাদা ছিটাতেই থাকি তাহলে পরিষ্কার পোশাকের কাউকেই পাওয়া যাবে না এক সময়।

একটা অসুস্থ সময় অতিবাহিত করছি আমরা, এই অবস্থাকে লাগাম টেনে ধরার কোনো লোক আমাদের মধ্যে আপাতত পাওয়া যাচ্ছে না। যদি কেউ থেকেও থাকেন তিনি মোরাকাবার হালত থেকে বের হয়ে একটুও সময় দিচ্ছেন না আমাদের।

ভবিষ্যতে কেউ যদি এই সময়কে নিয়ে রিসার্চ করে তাহলে এই সময়ের আমরা যারা অনলাইন যোদ্ধা তাদের টাইমলাইন খুঁজলেই বুঝতে পারবে কি দুর্দান্ত যুদ্ধ করে আপন ঘরটাকেই ভেঙে দিয়েছিলাম আমরা।

আল্লামা মুফতি মিজানুর রহমান সাইদ সাহেব দামাত বারাকাতুহুম এর একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এটা হুজুরকে কেউ কি অবহিত করেছেন? হুজুর নিজেই সবাইকে ডাকলে ভাল হত এবং কার কি বক্তব্য সরাসরি তাকেই বলা উচিত ছিল। অথবা যারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন উনারা নিজেরাই হুজুরের মাদরাসায় গিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করে জেনে নেয়া উচিত ছিল।

আমার বিশ্বাস এতে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হত এবং আমরা কেউই হয়ত সরাসরি চোখের দিকে তাকিয়ে উনার বিরুদ্ধে কটুক্তি করতে পারতাম না।

চরমোনাই পীর সাহেবের সামনে গিয়ে, আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমীর সামনে গিয়ে, মুফতি ওয়াক্কাস সাহেবের সামনে গিয়ে কটুক্তি করা অসম্ভব, কারণ আমরা এভাবে গড়ে উঠিনি।

কিন্তু কটুক্তি করছি, কারণ জাকারবার্গ আমাদের একটা সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে, আমরা একেকজন এখন কিবোর্ড যোদ্ধা, একইসাথে অনলাইনে শহীদও হচ্ছি কেউ গাজীও হচ্ছি।

চরমোনাইর পীর সাহেব সারা বছর প্রোগ্রাম করেন, অন্তত একদিন যদি অনলাইনে যারা লিখেন তাদের তিন চার ঘন্টা সময় দিতেন ক্ষতি হতো না।

আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমী যদি বারিধারা মাদরাসায় একদিন দুপুরে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে বলতেন, তোমাদের কার কি বক্তব্য আছে অভিযোগ আছে খোলাখুলি বলো, উত্তর দেবো।

এভাবে খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট বা অন্যান্য দলের নেতারা সবাইকে ডাকলে একটা ভাল পরিবেশ তৈরি হত।

এরা তো আপনাদেরই সন্তান। তারা চায় আপনাদের অনেক উপরে দেখতে এবং এভাবে যখন দেখে না তখন তারা ক্ষুব্ধ হয়, হতাশ হয়, আশাহত হয়, বেদনার্থ হয়।

বলতে পারেন তোমরা এমন কি হয়েছ যে তোমাদের নিয়ে বসতে হবে? ভাই আওয়ামী জোটে বিএনপি জোটে বসে যে সময় পার করা হয় তারচেয়ে নিজের সন্তানদের নিয়ে বসলে শুধু লাভই নয় সওয়াবও হবে ইনশাআল্লাহ।

কাজ করতে গেলে বিতর্ক তৈরি হবে কিন্তু সমাধানের পথও তো আছে। আমাদের এজেন্ডা ভাঙন হওয়া নয় , শত্রুতা সৃষ্টি করা নয়, অন্য কিছু হওয়া উচিত।

বাগদাদ যখন হালাকু খান ধ্বংস করেছিল তখন সেখানকার উলামায়ে কেরাম বাগদাদের রাস্তায় রাস্তায় বিতর্কে লিপ্ত ছিলেন, মৃত কাকের গোশত খাওয়া হালাল, নাকি হারাম, নাকি মাকরূহ এই নিয়ে।

বর্তমানে হালাকু খান একজন নয়, হাজার হাজার হালাকু খান খঞ্জর নিয়ে বসে আছে হলকুমের কাছাকাছি সুযোগ পেলেই...

তসলিমা নাসরিনের প্রতি এক কিশোরীর খোলাচিঠি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ