শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


খালেদা জিয়ার সিগন্যালের অপেক্ষায় সরকারবিরোধী দলগুলো

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ঐক্যে আগ্রহী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট আবারও ক্ষমতায় আসতে ‘মরিয়া’। আর এই ‘বেপরোয়া’ অবস্থানকে সমঝোতাভিত্তিক করতে পারে কেবল বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য। গত আড়াই মাসে ক্ষমতাসীনদের দৃশ্যমান অবস্থাকে ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ হিসেবেই দেখছেন এসব রাজনৈতিক দলের নেতারা। এ কারণেই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে সর্বদলীয় ঐক্যের বিকল্প দেখছে না রাজনৈতিক দলগুলো।

ঐক্য গঠন প্রক্রিয়া। তার সিদ্ধান্ত ছাড়া আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ঐক্যের ভিত্তি ও কৌশল কী হবে এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তেও আসতে পারছেন না বিএনপির সিনিয়র নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য ও ঐক্য গড়তে সম্মত, এমন অন্তত ১০টি রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের মত, অন্তত ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। দলগুলো হচ্ছে, বিকল্প ধারা, গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি। এছাড়া বাম-গণতান্ত্রিক ধারার ৩টি দল, ধর্মভিত্তিক ঘরানার ৩টি দল ও নিবন্ধিত অন্তত ৫টি ছোট দলের মধ্যে আলোচনা হয়ে আছে।

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, আলোচনা শুরু হয়েছে। কিছু দফাও দিয়েছি, যে দফাগুলোকে কেন্দ্র করে একটি ঐক্য গড়ে উঠবে। প্রথম হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচন। জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে কেন্দ্র করে সবাই যদি সম্মত হয়, সে প্রক্রিয়া গঠন করা যেতে পারে।’

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, গত বুধবার (২৯ মার্চ) ও বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঐক্যসংক্রান্ত বিষয়ে আলাপ করতেই খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়েছিলেন। যদিও দুই বারই ‘অসুস্থতার কারণে’ ওই সাক্ষাৎ আর হয়নি।

জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সম্মতি ছাড়া বৃহত্তর ঐক্যের জন্য চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নিতে পারছে না বিএনপি। বর্তমানে দলটি পরিচালিত হচ্ছে নেতৃত্বের তিনটি উইং থেকে। এগুলো হচ্ছে, কারাবন্দি চেয়ারপারসন, লন্ডনে থাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সক্রিয় ৮-৯ জন সদস্য। বর্তমান নেতৃত্বের এই তিনটি স্তর থেকে যেকোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসা যেখানে কঠিন, সেখানে জাতীয় ঐক্যের চূড়ান্ত রূপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াটি আরও একটু জটিল।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের প্রধানতম ইস্যু আমাদের নেত্রীকে কত দ্রুত ‍মুক্ত করতে পারি। এ লক্ষ্যে আইনি ও রাজপথে রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তির ওপর নির্ভর করছে নির্বাচন, জাতীয় ঐক্য।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে। সবাই এক্যবদ্ধ হবে। এটাই বড় কথা।’

দলের স্থায়ী কমিটির আরেকজন সদস্যের ভাষ্য, ‘সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য হবে, তবে আসন ছাড় দিতে হবে বিএনপিকে। এক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত জানা জরুরি। তবে জামিন বিলম্বিত হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটিই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবে। এক্ষেত্রে একটু সময় লাগবে।’

২০ দলীয় জোটের শরিক ও বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, ‘সবকিছুর আগে জোটনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, এরপরই আমরা বাকি বিষয়গুলোকে নিয়ে সামনে এগুবো। জাতীয় ঐক্যের কথা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বলেছেন। আর জাতীয় একটি ঐক্য ইতোমধ্যেই গড়ে উঠেছে। সবাই সবার জায়গা থেকে একই সুরে কথা বলছি, শুধু একই সুতোয় গাঁথাটা বাকি আছে।’


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ