শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


ঘর রাঙাতে এই টিপসগুলো মাথায় রাখুন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শাহনাজ শারমিন
ফিচার রাইটার

ঘরদোর একেবারে নতুনের মতো ঝকঝকে তকতকে করে তোলার সবচাইতে ভালো উপায় হলো ঘর রঙ করা। কিন্তু রঙ করতে গেলে বিভিন্ন ঝামেলায় পড়তে হয় আর নিজের হাতে রঙ করলে ভালো দেখায় না বলে অনেকেই এটাকে ঝামেলা মনে করেন।

ঘর রঙ করানোর আগে জানতে হবে ঘর রঙকরানোর তরিকাটা কি? বুঝতে পারলেন না তো! বুঝিয়ে বলছি, শুনুন, বাড়ী-ঘরের রঙ করানোর একটা তরিকা আছে। এই যেমন ধরুন, বাড়ির বাইরে একরকম তো বাড়ির ভেতরে অর্থাৎ ঘরের দেয়ালে আরেক রকম আবার প্রথম রঙ করানোরও ভিন্ন ব্যাপার থাকে।

বাড়ির বাইরের দেয়ালে রঙ করতে চাইলে মাথায় রাখুন আবহাওয়া। বাইরের দেয়ালে রঙ লাগানোর জন্য গ্রীষ্মকাল সবচেয়ে উপযোগী। ভেতরের দেয়ালে বছরের যেকোনো সময় রং করাতে পারেন। চাইলে বর্ষাকালেও ভেতরের দেয়ালে রং করা যায়।

প্রথমবার রঙ করানোর ক্ষেত্রে সিমেন্টের আস্তরের ৯০ দিন পর সিলার ব্যবহার করুন। সিমেন্টের আস্তরণ পুরোপুরি শুকাতে তিন মাস সময় লাগে।

বাড়ির ভেতরে : ডিসটেম্পার : ইট, কংক্রিট ও প্লাস্টারের ওপর ডিসটেম্পার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের ডিসটেম্পার, যেমন-অ্যাক্রেলিক, সিনথেটিক, ড্রাই ইত্যাদি। অ্যাক্রেলিক ডিসটেম্পার পানি দিয়ে ধোয়া যায়। কিন্তু সিনথেটিক ও ড্রাই ডিসটেম্পার পানি দিয়ে ধোয়া যায় না।

প্লাস্টিক পেইন্ট : প্লাস্টিক ইমালশন নামেই বেশি পরিচিত। পানি বেজড রঙ, যা দীর্ঘস্থায়ী ও ধোয়া যায়। প্লাস্টিক পেইন্ট তিন ধরনের। রেগুলার, ইকোনমিক ও প্রিমিয়ার ইমালশন।

এদিকে ঘরের দেয়ালে একঘেয়ে সাদা রঙ দেখতে দেখতে ক্লান্ত কিন্তু রঙ করানোর কথা ভাবলেই জ্বর চলে আসে! ঘর রঙ করার আগে তাই জেনে নেই চলুন প্রয়োজনীয় কিছু টিপস।

সবার আগে ঘর ফাঁকা :  রঙ করার আগে ঘর ফাঁকা করতে হবে এটা আমরা সবাই-ই জানি কমবেশি। ঘরের বড় আসবাবগুলোকে ঘরের মাঝখানে এনে পুরনো কাপড়, কাগজ বা প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখুন। এরপর রঙ করার আগে দেয়ালে কোন খুঁত থাকলে তা ঠিক করা প্রয়োজন।

আগের রঙ ঘষে তুলে ফেলতে তো হবেই সেই সাথে দেয়ালে ছোট কিংবা বড় কোন গর্ত থাকলে নতাও ঠিক করতে হবে। আর রঙ করার আগে মেঝে ও খবরের কাগজ বা প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকতে ভুলবেন না।

আগেই পরীক্ষা করে নিন :  আপনার ইচ্ছা হয়তো দেয়ালে সবুজ রঙ করবেন। এখন সবুজের তো নানা রঙের শেড। ঠিক কোন রঙটা আপনার ঘরে মানাবে সেটা নির্ভর করে ঘরের আকৃতি, আলোর অবস্থান ইত্যাদির উপর।

সময় এবং টাকা দুটোই খরচ করে পুরো ঘর রঙ করার পর আফসোস করার থেকে ভালো আগেই অল্প একটু জায়গা রঙ করে দেখা যে সেটা রাত কিংবা দিনে কেমন লাগছে আপনার ঘরের দেওয়ালে।

একদিন পর যদি মনে হয় সেটাই আপনার ঘরের জন্য উপযুক্ত তাহলে সেই রঙটাই রেখে দিন বা অন্য রঙ করে দেখুন। টেস্ট বা পরীক্ষামূলক হিসেবে একের অধিক রঙও বাছাই করতে পারেন।

দেয়ালের রঙে জীবন রাঙান : সাদা আর ফিকে সাদার ঘেরাটোপে আর কত। এবার আসুন ঘরের দেয়ালের পাশাপাশি রঙিন করি নিজেদের জীবনও। তবে এব্যপারে আপনাকে একটু সতর্ক হতেই হবে। যেমন ঘর খুব ছোট হলে পুরো বাসা যদি কমলা বা বেগুনী রঙে রাঙান তাহলে ঘরের মাঝে একটা বদ্ধ ভাব আসবে।

তাই চেষ্টা করুন মিলিয়েমিশিয়ে রঙ করতে। একটা দেয়াল পছন্দের রঙে রাঙাতে পারেন আর ঘরের উজ্জ্বল রঙ মিনিমাইজ করতে ঘরের পর্দা আর অন্যান্য আসবাব হালকা রাখতে পারেন। সবমিলিয়ে চাইলেই ঘরের দেয়ালের সাথে সাথে জীবনেও রঙ যোগ করুন। শুধু মাথায় রাখুন রঙের সাথে আসবাব আর পর্দার রঙের সামঞ্জস্য যেন হয় একদম ঠিকঠাক।

প্রাইমারটাও জরুরি  : প্রস্তুতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে প্রাইমিং। প্রাইমার দিলে দেয়ালের যত খুঁত আছে তা ঢাকা পড়ে ও দেয়ালকে রঙ বসার জন্য প্রস্তুত করে। বিশেষত দেয়ালের যত গর্ত বা ফাঁটল ঢাকার পরে প্রাইমার না দিলে চলেই না। আর প্রাইমারের পরে রঙ এক কোট দিলেও চলে। ফলে রঙের খরচও বেঁচে যায় অনেকটা।

রোলিং এর আগে ব্রাশ ব্যবহার :  দ্বিধায় না ভুগে সবসময়ই দেয়ালে রোলিং করার আগে ব্রাশ ব্যবহার করুন। বিশেষত মেঝে, ছাদ আর দেয়ালের কর্ণারসহ যেসব জায়গায় রোলার পৌঁছে না সেসব জায়গায় আগে ব্রাশ ব্যবহার করাই ভালো। এতে করে দেয়ালের উপরিভাগ দেখতে মসৃণ লাগবে।

বাড়িতে যখন রঙের কাজ চলবে তখন চোখে সেফটি গ্লাস আর পুরনো কাপড় পরে থাকুন যাতে রঙের ছিটে না লাগে।

সব প্রস্তুতি শেষ হলে বাড়ি রঙ করতে আর ভয় কিসের। ঘরে রঙের পরিকল্পনা করুন এবার সহজেই এবং আপনার ঘর ও বাড়িকে নতুন রঙে রাঙিয়ে নিন।


সম্পর্কিত খবর