বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’ মালয়েশিয়ার সিটি ইউনিভার্সিটিতে সম্পন্ন হলো বিয়াম'র চ্যাপ্টার কমিটি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জ্যামাইকার আগামীদিনে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হবে দেশের হজ ব্যবস্থাপনা: ধর্মমন্ত্রী সকালে ইসতিসকার নামাজ আদায়, রাতেই নামল স্বস্তির বৃষ্টি চাঁদ মামার বয়স হয়েছে! চাঁদের বয়স কত?

জাফর ইকবালের উপর হামলা এবং তসলিমা নাসরিনের উস্কানি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কাজী হামদুল্লাহ

গত শনিবার লেখক ও সাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপরে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। যা এখন টপ অব দ্যা কান্ট্রি। সর্বত্র এ নিয়ে আলোচনা চলছে। চা-চক্রেতাও গবেষণা করছে এ নিয়ে।

হামলাকারী কে, কেন হামলা করেছে, হামলা করে ভালো করেছে না মন্দ করেছে ইত্যাদি। তবে দেশের প্রায় সর্বস্তরের মানুষ এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, হামলাকারীর উপযুক্ত শাস্তি এবং তার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারেরও দাবি করেছে।

কিন্তু একদল অতিউৎসাহী লোক দুটি পৃথক মেরুতে দাঁড়িয়ে তর্কে লিপ্ত হয়ে গেছে।

প্রথমত ধার্মিক দল, দ্বিতীয়ত ধর্ম তথা ইসলামবিদ্বেষী দল। ধার্মিকদের অতিউৎসাহী একটা দল বলছে, এ হামলা যেই করুক, ভালো করেছে। কারণ চেতনাবিক্রেতারা দেশে না থাকলে, দেশ কিছুটা হলেও এগিয়ে যাবে। এরা দেশ-ধর্ম এবং সমাজের জন্য হুমকি স্বরূপ।

অনেকে ট্রল করছে তার উপরে হামলা নিয়ে। যাদের ট্রলবাজি আমার চোখে পড়েছে তাদের আমার ঘৃণা লাগে আরো আগ থেকেই। কারণ তাদের পদ্ধতি আর ভাষাগুলো এতোটাই বিকৃত যে, রুচিশীল কেউ ওদিকটায় যাবার কথা নয়।

তবে দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, কিছু সেলিব্রেটি আলেমও এতে জড়িয়ে গেছে। তারাও বাজে সব শব্দের হাট বসিয়ে বাট লাগাচ্ছে আলেমসমাজের।

মনে রাখা দরকার, একজন আলেমের কাজ ট্রলবাজি নয়। আরো বড় কোন কাজের জন্য তাদের পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া এসব ট্রল করে কোনো লাভই হচ্ছে না। বরং ক্ষতি হচ্ছে।

কী ক্ষতি হচ্ছে, এতোটুকু না বুঝলে তাদের নিয়ে কথা বলাটাই ক্ষতিকর। অরণ্যে রোদনের শক্তিশালী উপমা।

তাছাড়া তারা মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে অন্যের নাম বিকৃত করে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে তথাকথিত ধর্মবিদ্বেষী ব্লগার এবং এদের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই।

কারণ আমরা যেমন ওদের প্রিয় ব্যক্তিদের যাচ্ছে তাই বলে যাচ্ছি, নামের ঘাম ছোটাচ্ছি, ওরাও আমাদের প্রিয়দের নিয়ে এমন করে। উপরন্তু আমাদের দেখে তারা একটু মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

ধর্মের লেবেল লাগিয়ে যারা এসব করছে, তারা বলতে পারবে; ধর্মের কোথায় এসবকে বৈধ বলা আছে? উল্টো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে এসবের প্রতি।

একজন সুস্থ বিবেকবান এবং একজন সচেতন ধার্মিক; কোন দিক থেকেই এগুলো সমর্থনযোগ্য নয়। বরং ঘৃণিত-ধিকৃত। হয়তো এগুলো ছাড়ুন নয়তো ধর্মের লেবেলটা খুলে রাখুন। এতে অন্তত আপনাদের পূর্বপুরুষের ধর্ম কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পাবে।

কেউ একজন ফেসবুকের কোনো এক পোস্টের কমেন্টে ট্রল করে বা কৌতুক করে অথবা গোস্বা ঝেড়ে বলেছে, ‘জাফর ইকবালককে মেরে ফেললেই ভালো হতো। সে এখনও বেঁচে আছে!’ কমেন্টটির স্ক্রিনশর্ট নিয়ে ঘটেছে আরেক মজাদার কাহিনী।

তসলিমা নাসরিন জাফর ইকবালের উপরে হামলায় মারাত্মক পর্যায়ে আহত হয়েছে মনে মনে।

আরও পড়ুন: পৃথিবীর একমাত্র মসজিদ যার দেখাশুনা দায়িত্বে শিখ সম্প্রদায়

হামলার নিউজ শোনার পর থেকেই হয়তো তার মন ছটফট করছিলো কিছু বলার জন্য। কিন্তু সোর্স হয়তো পাচ্ছিলো না।কমেন্টে প্রাপ্ত ওই কথার স্ক্রিনশর্ট নিয়ে পোস্ট দেখলাম তার ফেসবুকে।

স্ক্রিনশর্ট আর পোস্টের লেখায় সে সমস্ত দোষ চাপিয়ে দিয়েছে ইসলামের সৈনিক তথা আলেমদের উপরে। লিখেছে, 'ইসলামের সৈনিকরা হামলা করেছে তার উপরে।'

সামান্য সময়ের ব্যবধানে দৈনিক প্রথম আলো প্রকাশ করেছে পুরোপুরি ভিন্ন তথ্য। হামলাকারী একটি রাজনৈতিক দল রিলেটিভ কেউ বলেই প্রকাশ করা হয়েছে সংবাদে।

তসলিমা নাসরিন উদ্দেশ্যমূলকভাবে সরাসরি ইসলামকে ম্যানশন করে দোষ চাপাতে চেয়েছে। অথচ ধরা পড়া আততায়ীর পরিচয়ও ইতোমধ্যে বের হয়ে গেছে। জানা গেছে তার পরিবারের অনেকেই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তাদের অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

আমি মনে করি, তসলিমা নাসরিনের এই দুঃসাহসী ন্যাক্কারজনক অপবাদের জন্য তাকে গ্রেফতার করে আইনের মুখোমুখি আনা দরকার। এরা বিদেশে থেকে এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের কলকাঠি নাড়ছে।

তার কথাটা একটু গভীরে গিয়ে ভাবলে ভয়ে গা শিউরে ওঠে। সে হামলার পর ঘোষণা দেয়, এটা ইসলামপন্থীদের কাজ। তার এই অনুসন্ধানহীন দাবির অন্তরালে মনে হচ্ছে, ইসলামপন্থীরা ছাড়া এদেশে কেউ এসব সন্ত্রাসী কাজে জড়িত নয়।

অথচ হালযামানার সংবাদপত্রগুলো ঘাটলেই দেখা যায়, অনৈসলামিক গণ্ডিগুলোই এসব কাজে সার্বক্ষণিক জড়িত। এর দ্বারা সে ওসব সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে চাচ্ছে নাকি ওদের সাথে তার কোন গোপন চুক্তি হয়েছে বাঁচানোর?

যদি এটা না হয়ে থাকে, তাহলে অপর দু'টি অবশ্যই হতে হবে। হয়তো সে হামলার ঘটনাকে ইস্যু করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে। বাঙালি জাতির মাঝে সুকৌশলে বিভেদ সৃষ্টি করছে। নয়তো ইসলামে তার মুদ্রাদোষ আছে।

যে কোন ইস্যুতে তার শরীরে ভেসে ওঠে ইসলামের এলার্জি। এটাও অসাম্প্রদায়িকার অন্তর্ভুক্ত। বিশেষ কোন জাতিবিদ্বেষ রাষ্ট্রীয় বিধান বহির্ভূত।

উল্লিখিত তিনটি বিষয়ের সবক'টিই আইনত মারাত্মক অপরাধ। সরকারের উচিত এসব লাগামহীন লোকদের ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।

নয়তো এদেশের অমূল্য সম্পদ, সরলমনা তরুণরা ওইসব বিকৃত চেতনায় পড়ে দেশকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

লেখক: শিক্ষার্থী, হাটহাজারী মাদরাসা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ