শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


‘মাদরাসার পরিবেশ ও সিলেবাস উন্নত হলে সাধারণ মানুষ এতে বেশি ঝুঁকবে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

শায়খ মাওলানা জামাল  উদ্দীন। শরিয়াহ বোর্ড অব নিউ ইয়র্কের চেয়ারম্যান ও বায়তুল হামদ ইনস্টিটিউট আমেরিকার শায়খুল হাদিস ও প্রিন্সিপাল।

সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশে সফরে এসেছেন নিজের জীবন, দীনের প্রচার ও ইসলাম শিক্ষা নিয়ে আওয়ার ইসলামকে দিয়েছেন দীর্ঘ সাক্ষাৎকার। তার সঙ্গে কথা বলেছেন, আওয়ার ইসলাম প্রতিবেদক কাউসার লাবীব

ইসলামি শিক্ষা থাকার কারণে আমেরিকার মাদরাসাগুলোকে কি সরকারিভাবে কোনো হেনস্তার স্বীকার হতে হয়?

না। ইসলামি শিক্ষা থাকার কারণে বৈষম্যের স্বীকার হতে হয় না। সেদেশে শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি নিয়ম রয়েছে,

ধর্মীয়গুরু তৈরির জন্য কিছু স্কুল তাদের ছাত্রদের ধর্মীয় শিক্ষা দিতে পারবে। সে স্কুলগুলোকে তারা বলে বাইবেল স্কুল। আমরা সেই বাইবেল স্কুলের জন্য যে নিয়ম-কানুন করা আছে তা মেনে চলি। আমাদের শতভাগ ছাত্ররা সরকারী পরীক্ষায় অংশ নেয়। ভালো রেজাল্ট করে।

তাছাড়া যারা বাইবেল স্কুলের নিয়ম মেনে চলে না, তাদেরও সরকারিভাবে তেমন চাপ প্রয়োগ করা হয় না, যদি তারা দেশের মৌলিক নিয়মগুলো মেনে চলে থাকে।

সেদেশে তিন ধরনের মাদরাসা শিক্ষা বিদ্যমান-

এক. যেখানে শুধু ইসলামি শিক্ষা দেওয়া হয়। অনেকটা আমাদের কওমি মাদরাসার মতো।

দুই. যেখানে জাগতিক শিক্ষাটাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়।তবে ইসলামি শিক্ষা রাখা হয়েছে নাম মাত্র।

তিন. যেখানে জাগতিক ও ধর্মী শিক্ষা দুটোকেই সমান প্রাধান্য দেওয়া হয়। যে মাদরাসাগুলোর প্রবর্তন আলহামদুলিল্লাহ আমরা করেছি।

আমেরিকান সরকার এইতিন ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থাকেই চলতে দিচ্ছে। কাউকে বাধা দিচ্ছে না।

বাংলাদেশে প্রচলিত বর্তমান মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা ও সিলেবাসে কী পরিবর্তন আনা দরকার বলে আপনি মনে করেন? যদি করেন তাহলে কেমন পরিবর্তন আশা করেন? ও কেন? আর না চাইলে কেন পরিবর্তন চান না?

আগের যুগে ইসলামি শিক্ষায় পড়াশোনা করে শিক্ষিত হয়ে ছাত্ররা বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছে। তিব্বে নববিকে এখনো ডাক্তাররা ফেলে দিতে পারেনি। সমীহ করতে বাধ্য। সে তিব্বে নববি পড়ে ছাত্ররা গর্বের সঙ্গে ডাক্তারি (হেকিমি) করেছে।

মাদরাসায় পড়ে ছাত্ররা আইনজীবির দায়িত্ব পালন করেছে। অনেক কিছু আবিষ্কার করেছে।

কিন্তু আজ আমাদের দেশে প্রচলিত মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা মূলধারার মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে অনেক দূরে।

তারা ইসলামি শিক্ষার সঙ্গে যে জাগতিক শিক্ষাব্যবস্থা ছিল তা বাদ দিয়ে দিয়েছে। তাই আজ মাদরাসার ছাত্ররা এখানে পড়ে বাস্তব জগত সম্পর্কে অনেকটা অজ্ঞ থেকে যায়। যা আলেম ওলামায়ে কেরামের আত্মমর্যাদাকে সমাজে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

তাই এখন থেকেই আমাদের মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে আমাদেরকে যুক্ত হতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে আদি সম্মান।কেন আমরা পিছিয়ে থাকবো?

আমাদের মূলধারার মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা যতটা মজবুত, পৃথিবীর আর কোনো শিক্ষাসিলেবাস এতোটা পূর্ণাঙ্গ ও মজবুত নয়।

আমাদের সালাফ ও আকাবিরের প্রণিত সিলেবাসকে যদি আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি। তাহলে আমাদের থেকে জাগতিক ও ইসলামিক উভয় শিক্ষার ব্যপারেই চলমান দৈন্যতা দূর হবে ইনশাআল্লাহ।

মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষেত্রে শিক্ষক ট্রেনিং ও মাদরাসার পরিবেশের প্রতি কতটা যত্নশীল হওয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন?

কোনো একটি শিক্ষাব্যবস্থাকে মজবুত করতে দরকার পাজ্ঞ শিক্ষক। অনেক ভালো ছাত্রও অনেক সময় ভালো পড়াতে পারে না। তাই শিক্ষাজীবনের পরে তাদের শিক্ষাপ্রদানের নিয়মকানুন শেখানোর জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা অপরিহার্য।

আমাদের মাদরাসা শিক্ষায় এই ব্যবস্থাটি এখন অপ্রতুল। আগে একজন ছাত্র লেখাপড়া শেষ করার পর একজন প্রাজ্ঞ মুরব্বির সোহবতে থাকতো। তার কাছ থেকে শিখতো কীভাবে মানুষের মাঝে ইলেম বিলাতে হয়? কিন্তু এটি আজ নাই।

আর পরিবেশের কথা বলতে গেলে অনেক কথা বলতে হয়। তবে কথা লম্বা না করে বলবো, বাইরের দেশের ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশের দিকে ধীরে ধীরে আমাদের নজর দিতে হবে।

আমাদের মাদরাসাগুলো এখন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি। চাইলে পরিবেশকে উন্নত করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাছাড়া যে মাদরাসাগুলো বড় আছে, যাদের সঞ্চয়ে রয়েছে অনেক টাকা, তারা ছোটো মাদরাসাগুলোকে হেল্প করতে পারে।

আর মাদরাসার পরিবেশ ও শিক্ষা সিলেবাস যদি আমরা উন্নত করতে পারি।তাহলে সর্বসাধারণকে মাদরাসার দিকে ঝুকানোটা অতি সহজ হয়ে যাবে।

পুরো সাক্ষাৎকার পড়তে ক্লিক করুন : ‘মুসলিম দেশের শাসক ও একটা শ্রেণি ইসলামি মিডিয়াকে ভয় পায়’


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ