শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

ইসির কাছে কুরআনসহ একাধিক নতুন প্রতীকের আবেদন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম :  মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন, গমের শীষ ও গমের ছড়া, পানির জাহাজ প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে নতুন রাজনৈতিক দলগুলো।

জানা যায়,  কুরআন  প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে নতুন রাজনৈতিক দল  বাংলাদেশ ইসলামীক গাজী।

আবেদনকারী নতুন দলগুলোর প্রতীক হিসেবে পছন্দের তালিকায়ে আরও আছে চাঁদ, ঝাড়ু, মোবাইল, স্যাটেলাইট, নাকফুল, পালকী, তালগাছ। এছাড়া বেশ কয়েকটি দল আবেদনের সময় কোনো প্রতীকের কথা উল্লেখ করেননি।

নতুন দলগুলোর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। যদিও এগুলো নির্বাচন কমিশনের তালিকাভুক্ত প্রতীক নয়।

বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের মতো দেখতে গমের ছড়া ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) দলীয় প্রতীক হাতপাঞ্জা প্রতীক চেয়ে নতুন দলের নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ তৃণমূল কংগ্রেস।

দলটির প্রেসিডিয়াম মেম্বার দলীলুদ্দীন হাওলাদার গনমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। নিবন্ধন পাওয়ার বিষয়ে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা গমের ছড়া ও হাতপাঞ্জা প্রতীক চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছি। এছাড়া আরেকটি প্রতীক আলোচনা করে ঠিক করব।

এছাড়া হাত (পাঞ্জা) প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে আরেকটি দল বাংলাদেশ হিন্দুলীগ।

বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের মতো দেখতে গমের শীষ প্রতীক চেয়ে নিবন্ধনের আবেদন করেছে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি (বিআইপি)। এ বিষয়ে কথা হলে দলটির মহাসচিব মো. আবুল কাশেম গনমাধ্যমকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী প্রতীকের তালিকায় গমের শীষ মনে হয় নেই। এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গমের শীষ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে সে বিষয়ে জানেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জ্বি বিষয়টি জানি। আমরা ভেবেছি- যেহেতু তারা প্রতীকটি নেয়নি, তাই আমরা প্রতীকটি চেয়েছি।’

নিবন্ধন পাওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সুযোগ থাকলে প্রতীক পরিবর্তনের জন্য আবেদন করব।

লিবারেল পার্টি-এলপি’র চেয়ারম্যান এইচএমএম ইরফান বলেন, আমরা কমিশনের শর্ত পূরণ করে আবেদন করেছি। দলীয় প্রতীক চেয়েছি পানির জাহাজ।

পানির জাহাজ প্রতীক কমিশনের নির্ধারিত প্রতীকের তালিকায় নেই। তাছাড়া এটি আওয়ামী লীগের প্রতীকের সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিক কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকায় যে নেই, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। আর আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা, তাই আমাদের প্রতীকের নাম বা দেখতেও নৌকার মতো নয়।’

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ তালগাছ, বাংলাদেশ কংগ্রেস বই; নাকফুল বাংলাদেশ চেয়েছে নাকফুল, সিংহ প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি), বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ও বাংলাদেশ সমাজ উন্নয়ন পার্টি (বিএসডিপি)।

মোবাইল প্রতীক চেয়েছে বাংলাদেশ আলোকিত পার্টি ও জনস্বার্থে বাংলাদেশ, পালকী প্রতীক চেয়েছে বাংলাদেশ পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিপিডিপি), তৃণমূল ন্যাশনাল পার্টি ও বাংলাদেশ সততা দল (বিএইচপি) নামে দুটি দল একই প্রতীক আনারস চেয়েছে।

বাংলাদেশ সত্যব্রত আন্দোলন চেয়েছে একতারা, বঙ্গবন্ধু দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধী ‍উন্নয়ন পরিষদ চেয়েছে হুইল চেয়ার, বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি সোনালী আঁশ/পাটগাছ প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে।

কুড়াল/হারিকেন প্রতীক চেয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ; ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ ঠেলাগাড়ি, কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি) সাইকেল, রিকশা প্রতীক চেয়েছে গণতান্ত্রিক ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী), ঝাড়ু প্রতীক চেয়েছে বাংলাদেশ ঘুষ নির্মূল পার্টি (বিজিএনপি), রেলগাড়ি প্রতীক চেয়েছে গণসংহতি বাংলাদেশ আর চাঁদ প্রতীক চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ শান্তির দল।

এছাড়া বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ভাসানী ন্যাপ, বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলন (বিএমএ), সোনার বাংলা উন্নয়ন লীগসহ বেশ কয়েকটি দল কোনো প্রতীক চায়নি।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ইসির প্রজ্ঞাপনে নির্বাচনের জন্য ৬৪টি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের। বাকি ২৪টি প্রতীক এখনো পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। নতুন দলের নিবন্ধন দেয়া হলে তাদেরকে এখান থেকেই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।

নিবন্ধিত দলের বাইরে ২৪টি প্রতীক হলো- আপেল, একতারা, কলার ছড়ি, কুমির, কুড়াল, খাট, ঘণ্টা, ট্রাক, ডাব, তবলা, তরমুজ, দাবাবোর্ড, দালান, নোঙ্গর, ফুলকপি, বাঁশি, বেঞ্চ, বেলুন, মটরগাড়ি (কার), মাথাল, রকেট, শঙ্খ, সিংহ ও স্যুটকেস।

নিবন্ধিত দলের প্রতীকের মতো দেখতে কোনো প্রতীক নতুন দল চাইলে তাদেরকে দেয়া হবে কি না এবং ইসি সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকার বাইরের কোনো প্রতীক দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে ইসির যুগ্ম-সচিব মো. আবুল কাসেম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, কেউ চাইলেই বিতর্কিত কোনো প্রতীক দেয়া হবে না। এছাড়া কমিশনের প্রতীকের তালিকার বাইরের কোনো প্রতীক দেয়ার সুযোগ আপাতত নেই।

এর আগে নতুন দলের নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে কমিশন। এতে আবেদনের শেষ দিন ছিল ৩১ ডিসেম্বর। এবার ৭৬টি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে বলে গণমাধ্যমকে জানান ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

ইসি সূত্র জানায়, এরই মধ্যে নতুন দলের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে দিয়েছে ইসির সংশ্লিষ্ট কমিটি। এছাড়া এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে ইসি।

একাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এই আবেদন আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, তিনটির মধ্যে একটি শর্ত পূরণ হলেই তারা নিবন্ধনের যোগ্য বলে বিবেচিত হয়। শর্তগুলো হলো-

১. দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেকোনো জাতীয় নির্বাচনের আগ্রহী দলটি যদি অন্তত একজন সংসদ সদস্য থাকেন।
২. যেকোনো একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী অংশ নেয়া আসনগুলোয় মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পায়। এবং
৩. দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকে।

ইসি সূত্র জানায়, এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগ্রহী নতুন ৪৩টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছিল। এর মধ্যে ৪১টিই নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের ‘যোগ্যতার’ প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়।

মাত্র দুটি দল শর্ত অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে কার্যালয় ও কমিটি থাকার তথ্য দিয়েছিল। এরপর তাদের নিবন্ধন দেয় কমিশন। দল দুটি হলো- বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রথা চালু করে ইসি। প্রথম বছরে ১১৭টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ৩৯টি দল নিবন্ধন পায়। এর মধ্যে স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। আর আদালতের আদেশে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ হয়।

এছাড়া ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) নামে নতুন একটি দলের নিবন্ধন দেয়া হয়। বর্তমানে ইসির নিবন্ধনে ৪০টি রাজনৈতিক দল রয়েছে। পরিবর্তন ডটকম।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ