শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


উত্তর প্রদেশে এনকাউন্টের নামে দলিত ও মুসলিমদের হত্যা করছে পুলিশ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: রতের বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশে এনকাউন্টের নামে দলিত ও মুসলিমদের পুলিশ হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছে ‘রিহাই মঞ্চ’ নামে সামাজিক সংস্থা।

সংগঠনটির মুখপাত্র অনিল যাদব কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই অভিযোগ করা হয়েছে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগি আদিত্যনাথ সরকারের দশ মাসের শাসনে এক হাজার ১৪২ টি পুলিশি এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে।

রিহাই মঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যোগি সরকারের শাসনামলে গোটা রাজ্য দলিত, অনগ্রসর ও মুসলিমদের বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে আন্দোলনরত সমস্ত সংগঠনকে নিয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি লক্ষনৌতে এক সম্মেলন করা হবে।

বিঞ্জপ্তিতে বলা হয়, উত্তর প্রদেশে যোগি আদিত্যনাথ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাহরানপুর থেকে বালিয়া পর্যন্ত দলিতদের নির্যাতনের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে এবং অন্যদিকে ক্ষমতার মাধ্যমে মুসলিমদের উপরে আক্রমণ করা হচ্ছে, কাভারসগঞ্জের ঘটনা তার উদাহরণ।

মানবাধিকার কমিশনের নোটিশকে উপেক্ষা করে রাজ্যে দলিত, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি ও মুসলিমদের এনকাউন্টারের নামে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হচ্ছে।

‘রিহাই মঞ্চ’ হরিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাশ্মিরি ছাত্রদের উপরে হামলার নিন্দা করে বিজেপিশাসিত রাজ্যে কেউই নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছে।

রিহাই মঞ্চের মুখপাত্র অনিল যাদব বলেছেন, ‘ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ৬৯ বছর পার হয়ে গেলেও দেশের জনসংখ্যার এক বড় অংশকে কেবল নাগরিক হিসেবে মেনে নিতেই অস্বীকার করা হচ্ছে না বরং তাদের মানুষের মর্যাদাও দেয়া হচ্ছে না।

যদিও ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনাতেই সকলের জন্য ন্যায়বিচারের কথা বলা হয়েছে। সংবিধান প্রণেতাদের স্বপ্নও ছিল ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের কাছে যাতে ন্যায়বিচার পৌঁছায়। কিন্তু আজ দলিত ও অনগ্রসরদের উপরে আক্রমণের ঘটনা বাড়ছে।

মুসলিমদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সহিংসজনতা তাদের পরিচিতির ভিত্তিতে পিটিয়ে হত্যা করছে। যারা দলিত নির্যাতন ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদের দেশদ্রোহী অভিহিত করে কারাগারে নিক্ষেপ করছে।’

‘ভীম আর্মি’র নেতা চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্ত করে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অনিল যাদব বলেন।

এ প্রসঙ্গে আজ (রোববার) পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক ছোটন দাস রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘২০১৪ সালের পর থেকে গোটা দেশ জুড়ে মুহাম্মদ আখলাক থেকে শুরু করে দলিত ও মুসলিমদের উপরে টার্গেট করে আক্রমণ করা হচ্ছে।

কখনো তা এনকাউন্টারের নামে, কখনো তা গোমাংসের নামে, কখনো বা গরু চোর বলে অভিহিত করে আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।

এসবের পিছনে রাষ্ট্রের পরিকল্পিত মদদ রয়েছে। এটা ওদের কোনো গোপন এজেন্ডা নয়। আরএসএসের ঘোষণা পড়লে, ওদের যে দর্শন ‘উই অর আওয়ার নেশনহুড ডিফাইন্ড’ বা ‘বাঞ্চ অব থটস’ এগুলো পড়লে স্পষ্ট হবে ওদের ঘোষিত উদ্দেশ্য ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত রাষ্ট্র গড়ে তোলা এবং সংবিধানকে পাল্টে দিয়ে মনুসংহিতাকে নিয়ে আসা। পরিকল্পিতভাবে এসব করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘উত্তর প্রদেশে যোগি আদিত্যনাথ সরকার রেকর্ড পরিমাণে এনকাউন্টার করেছে। গোটাদেশ জুড়ে মানুষ এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ‘ভীম আর্মি’র নেতা চন্দ্রশেখরকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গতবছর থেকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ওদের পরাজয় ও শুভশক্তির জয় নিশ্চিত বলেও পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক ছোটন দাস বলেন।

এসএস/


সম্পর্কিত খবর