বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


ট্রাম্প কি আইএসকে পরাজিত করতে পেরেছে!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরই ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘আমরা আইএসকে চিরতরে নির্মূল করবো। আইএসকে পরাজিত করবো।’ কিন্তু এখন পর্যন্ত কী ট্রাম্প তার বক্তব্যকে সফল করতে পেরেছেন ? এই প্রশ্ন এখন বিশ্বজনের মুখে মুখে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রদেশ কানেকটিকাটের সমর্থকদের প্রতি এই অঙ্গীকার করেছিল। সেই সময়ে মনে হতো যে তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারতেন। হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ট্রামের বিস্ময়কর জয় তাকে আবারো স্মরণ করিয়ে দেয় তার অঙ্গিকার আদায়ের কথা।

কিন্তু এক বছরে ট্রাম্প প্রশাসনে, সিরিয়ার ও ইরাকের ভূখণ্ডের ঘটনাগুলো নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। আইএস নামে পরিচিত ইসলামিক স্টেটটি ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ইরাকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শহর মসুলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। তিন মাস পর আইএসের রাজধানীতে পরিনত হয়েছে সিরিয়ার শহর রাকা। অনেক যোদ্ধা দেশটির পূর্বাঞ্চলের দার আজ জোরে আস্তানা করলো।

২০১৭ সালের নভেম্বরে তারা আরো জোরালোভাবে সিরিয়ায় দখলদারিত্ব বৃদ্ধি করে। ২০১৪ সালেরএক গ্রীষ্মে আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদী খিলাফত ঘোষণা করেছিল। এর পরই ট্রাম্প ঘোষণা করে, ‘আমরা আমাদের জোটের সহযোগীদের পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে এই দুষ্ট আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আরও অগ্রগতি করেছি’ ঠিক তখনও দৃশ্যত আইএসের পতন হলেও সিরিয়ার রাকা শহরকে এতকাল আইএস-ঘোষিত খেলাফতের রাজধানী বলে বিবেচনা করা হতো।

এ রাকা এবং ইরাকের মসুল শহরে আইএস গড়ে তুলেছিল শক্তিশালী ঘাঁটি। এমনকি কয়েক বছর ধরে একটি অস্বীকৃত রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছিল তারা। সেখানে খাজনা তোলা, তেল বিক্রি করা, অস্ত্র ক্রয় করা, গাড়ি ক্রয় করার কাজ চলেছে একটি পরিপূর্ণ রাষ্ট্রের মতোই। তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল মূল্যবান তেলক্ষেত্র এবং তেল শোধনাগার। অদ্ভুত এক রাজ্য গড়ে তুলেছিল এ সংগঠন। প্রায় ৮০ লাখ মানুষকে সরাসরি শাসন করেছে।

এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বার্ষিক বাজেট ছিল এ ‘কোয়াজি রাষ্ট্র’র। ছিল আধুনিকতম অস্ত্রের ভাণ্ডার। এর যোদ্ধারা এসেছিল লন্ডন, স্টকহোম থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এমনকি মালদ্বীপ থেকে।

অনেক অঘটনের পর শেষমেশ সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স এবং ইরাকের স্পেশাল ফোর্স দুই-তিন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় আইএস ঘাঁটিগুলো থেকে তাদের দৃশ্যত উৎখাত করতে পেরেছে।

কিন্তু আইএস সদস্যরা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ফলে বিভিন্ন ছোট ছোট পকেট থেকে তারা আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাহিনী হিসেবে দখলকৃত জায়গা পুনরুদ্ধারের অবস্থা আইএসের নেই। আইএসের উত্থান ছিল অদ্ভুত এবং রহস্যময়।

১৯৯৯ সালে ছোট আকারে জামাত আল তাওহিদ আল জিহাদ নামে গড়ে উঠেছিল। উদ্দেশ্য ছিল আল কায়দার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে তথাকথিত ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা। প্রাথমিকভাবে গড়ে উঠেছিল ইরাকে।

কিন্তু ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক দখলের পর থেকেই এরা বড় আকারের অপারেশন শুরু করে। এর তরুণ নেতা ইরাকের সারামা শহরে জন্মগ্রহণকারী ইবরাহিম ইবনে আওয়াদ আল বদরি মার্কিন বাহিনীর হাতে।

২০০৪ সালে ধরা পড়েন ইরাকের ফালুজা শহরে। তার কিছুদিন আগেই তিনি জইস আল সুন্নাহ আল জামাহ নামে একটি দল গড়ে তোলেন। এ রহস্যময় চরিত্র বেশ কয়েকটি নামে পরিচিত ছিলো। তাই এখনো প্রশ্নই থেকে যায় ট্রাম্প কী পেরেছেন বা পারবেন এই আইএসকে পরাজিত করতে?

সূত্র: দ্য ডেইলি সিগনাল/এটি


সম্পর্কিত খবর