শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫


কাশ্মীরেও আছে 'বাংলাদেশ'!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: একাত্তরের কথা- বাংলাদেশে চলছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতা। তাদের দেওয়া আগুনে জ্বলছে সবুজ বাংলার গ্রামের পর গ্রাম। প্রাণ বাঁচাতে ছুটে চলছে মানুষ; আশ্রয় নিচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। একই সালের অপর একটি ঘটনা; তবে প্রেক্ষাপট ও দেশ দুটোই ভিন্ন। ভারতের কাশ্মীরের পাকিস্তান ঘেঁষা জেলা বান্ডিপুরা।

সেখানকার আলুসা তহশিলের ছোট্ট গ্রামের নাম জুরিমন। এখানে হঠাৎই আগুন লাগে; পুড়ে যায় পাঁচ থেকে ছয়টি ঘর। গৃহহীন হয়ে পড়েন গ্রামের নিরীহ মানুষ। তারা তখন ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা থেকে কিছুটা দূরে পার্শ্ববর্তী ফাঁকা জায়গায় সবাই মিলে ঘর তোলেন। ডিসেম্বরে স্বাধীন হয়ে জন্ম নেয় নতুন রাষ্ট্র- বাংলাদেশ। একই সময় জুরিমনের গৃহহীন মানুষগুলো দুঃসময় মোকাবেলা করে শুরু করেন নতুন জীবন। আবেগ-ভালোবাসায় তারাও তাদের নতুন গ্রামের নাম রাখেন 'বাংলাদেশ'।

সেই টুকরো গ্রামটি ভাসমান- তবে বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, কাশ্মীর সব মিলিয়ে যেন কাকতালীয় যোগাযোগ! রাজ্য ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, কাশ্মীরে সব মিলিয়ে ২২টি জেলা রয়েছে। সেখানকার শ্রীনগর থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তরে বান্ডিপুরার অবস্থান। বান্ডিপুরা-সোপুরের মধ্য দিয়ে মাটির রাস্তা ধরে পাঁচ কিলোমিটার হাঁটলেই দেখা পাওয়া যাবে কাশ্মীরের 'বাংলাদেশ'।

বিখ্যাত উলার হ্রদের তীরে ভাসমান গ্রামটিতে বাইরের মানুষের আনাগোনা নেই বললেই চলে। তবে গ্রামটির সৌন্দর্য কোনো অংশেই কম নয়। চারদিকে পানি, পেছনে সুউচ্চ পর্বত, সব মিলিয়ে অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে রয়েছে গোটা গ্রামজুড়ে। নাগরিক সুবিধার অনেক কিছুই এখনও গ্রামবাসীর হাতের মুঠোয় আসেনি। তবে দিন দিন উন্নতি হচ্ছে সবকিছুর। এরই মধ্যে সেখানে স্কুল প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।

জেলা ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, মাত্র আট বছর আগে কাগজে-কলমে পৃথক গ্রামের মর্যাদা পায় 'বাংলাদেশ'। জেলা প্রশাসক কার্যালয় ২০১০ সালে এ মর্যাদা দেয়। শুরুতে গ্রামে ছিল মাত্র পাঁচ থেকে ছয়টি ঘর। কিন্তু এখন তা পঞ্চাশেরও ওপরে। দিন দিন জনসংখ্যাও বেড়েছে। ৫০ জন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে তিনশ'জনে। তারা মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেকে আবার পানি বাদামও সংগ্রহ করে থাকেন। সমকাল।


সম্পর্কিত খবর