শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

মোবাইল অপারেটরগুলোর প্রতারণার বিভিন্ন কৌশল!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রুবাইত হাসান

দেশে চলছে জিপি, এয়ারটেল, রবি, বাংলালিংক ও টেলিটক নামের মোবাইল সিম। প্রত্যেকের কাছে নিজস্ব পছন্দের অপারেটর রয়েছে, এ দিক থেকে যেমন জিপি কিংবা রবি এগিয়ে তেমনি কারো কাছে  বাংলালিংক এগিয়ে আবার বিভিন্ন পেমেন্ট সুবিধা আর দেশীয় সিম হওয়াই টেলিটক এগিয়ে।

তবে গ্রাহক সংখ্যা হিসাবে অনেক খানি এগিয়ে গ্রামিনফোন। শক্তিশালী নেটওয়ার্ক, দেশের শীর্ষ নেটওয়ার্ক আর দেশের ১ নম্বর নেটওয়ার্ক কিংবা চলো বহুদূর, জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে সাধারণ জনগণ আজ বিভ্রান্তিতে ঝলসে গেছে!

গ্রামিনফোন পাঁচ কোটি গ্রাহক সংখ্যার উপরে এরা দাবিও করেছে দেশের ১ নম্বর নেটওয়ার্ক হিসাবে। এমন একটি অপারেটরের রয়েছে গ্রাহক কর্তৃক নেটওয়ার্কগত সমস্যার অসংখ্য অভিযোগ আবার নেটওয়ার্কগত সমস্যার কারণবশত কল কেটে যাওয়ায়

১ মিনিট বোনাস না পাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অন্যান্যগুলোর কি অবস্থা তা অনুমান করা জ ল ব ত র ল! গ্রাহক সংখ্যা গরিষ্ঠ করার লক্ষ্যে একেক কোম্পানির একেক রকম ইলেকট্রিক আর প্রিন্ট বিজ্ঞাপনে একেকজন নিজ অবস্থানে সেরাটাই অর্জনে সফল হয়েছে! এসব মুখরোচক বিজ্ঞাপনে পা দিয়ে প্রায় সকলেই একাধিক সিম ব্যবহারকরছে।

নীতিমালা অনুযায়ী একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫ টি প্রিপেইড সিম ব্যবহার করতে পারবে, ফিঙ্গার প্রিন্ট নিশ্চয় এই তদারকিতে চমৎকার ইকুয়াল এনে দিয়েছে। তবে এর পিছনের গল্প রয়েছে অতি ভয়ানক!  বেশ আগে সংবাদের শিরোনাম হয়েছিল ফিঙ্গারপ্রিন্ট কেনা-বেচা হচ্ছে সেখানে বগুড়া জেলা ছিল শীর্ষ অবস্থানে! সারিয়াকান্দিতে আবার গ্রাহককে নেটওয়ার্কগত সমস্যা দেখিয়ে একাধিক সিম রেজিস্ট্রি করা হয়েছে, লক্ষ্য পরবর্তীকাল চড়াদামে বিক্রয় করে ফার্স্ট ইনকাম করা! এ সিম গুলো আমি, আপনি নয়, মোবাইল কিংবা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেসব ধান্দাবাজিরা সাধারণ জনগণের সাথে প্রতারণা করে তাদের জন্যই মূলত এই সিমগুলো।

আবার কিশোরদের মাঝেও এই সিমগুলো বিক্রয় করা করা হয়। প্রশ্ন হতে পারে এখানে মোবাইল অপারেটরের দোষ কোথায়? ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির অনুসন্ধান মূলক ক্রাইম প্রোগ্রাম তালাশে আমরা দেখেছিলাম সিম বাণিজ্যের একটি প্রতিবেদন।

নির্দিষ্ট একটি সময় পর মোবাইল থেকে সেই সার্ভিস নিজে বন্ধ না করলে বা উদ্যোগ না নিলে বাড়িওয়ালার মতো আপনার কাছে তারা সেই গানের ভাড়া তুলতে থাকবে

ওই প্রতিবেদনে একজন সিম সেলসম্যান তার ভয়েসে বলেছিল। সেলসের উপরে তাদের প্রেসার থাকে। সেলসম্যানের সেলসের উপরে তাদের চাকরি, বেতন কিংবা কমিশন এ কথা সেলস্ ম্যানেরা নিজেরাই বলে।যথেষ্ট সেলস্ না হওয়ার দরুন দায়িত্বপ্রাপ্তরা এসব করছে, তাছাড়া বিকল্প কারণ আর কি হতে পারে? এসব হলো প্রাথমিক ধারণা।

প্রতিদিন এরা যেভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে....

১। মিনিট বোনাস : নির্দিষ্ট পরিমাণ রিচার্জ করলেই মিনিট অফার। ১২ টাকায় ৪০

মিনিট, এত টাকায় এত মিনিট ইত্যাদি ইত্যাদি। কয়েক বছর আগের কথা। সর্বপ্রথম জিপি  চালু করলো ডিসকাউন্টে কথা বলার এক দারুন সুযোগ! কখনো ১%, ১০%,২০%,৪০% কখনো বা ৭০% কিংবা ৮৩% হিসাবে কথা বলার সুযোগ। এখানে আমি আপনি সুযোগ বুঝে যেমন ৭০% কিংবা ৮৩% ডিসকাউন্টে কথা বলেছি তেমনি ডিসকাউন্ট চালু করে ইহা সমন্ধে জ্ঞান কিংবা লেখাপড়া না থাকায় অপারেটরকে দিনের পর দিন অনেকেই দিয়ে এসেছে মিনিট প্রতি প্রায় ৩ টাকা!

গ্রাহকের এই মিনিট প্রতি প্রাপ্ত টাকার হিসাবে গড় করলে দেখা যায় তারায় জয়ী হয়েছে! আবার বাড়তি বক্তব্য ২৫ পয়সা মিনিটে কথা বলার সুযোগ তারা দিয়েছিল! এখন মিনিট অফারে ভিন্ন পদ্ধতিতে চলছে ব্যবসা। ৩০০ মিনিটের একটি জিপি অফারের পূর্বের মেয়াদ ছিল ১৫ দিন। বর্তমানে অন্যান্য অফারের সাথে সেই অফারটির বেড়েছে রেট, অর্ধেকে নেমে গেছে মেয়াদ! নির্দিষ্ট সময় সীমার পর অব্যবহারিত মিনিটগুলো উধাও হয়ে যায়!

২। মেগাবাইট ব্যবসা : মেগাবাইট ব্যবসায় কোটি কোটি টাকা ইনকাম করছে মোবাইল অপারেটরগুলো, বলা যেতে পারে আজ এটিই প্রধান ব্যবসা। মেগাবাইট চড়া দামে ক্রয় করে,এখন কত টাকায় কত এমবি এ সম্বন্ধে ধারনা আপনার আমার রয়েছে, থাকবে এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু এমবির পিছনে অপারেটরগুলোর ব্যায় কত তা জানলে এদেরকে যদি  ডাকাতের গড ফদার না বলেন জাতি হিসেবে আপনার তাহলে ছোট খাট পাপ হয়ে যাবে। প্রায় সময় মোবাইলে মেসেজ আসছে, এমবি অফার! হ্যাঁ নির্দিষ্ট  রিচার্জেও রয়েছে এ অফার। এখানেও রয়েছে নির্দিষ্ট ব্যবহার সময় সীম তারপর জমা এমবি উধাও!

৩। ফ্লেক্সিলোড বিজনেস: বিভিন্ন সময় মেসেজ পেয়ে থাকেন ২৯ টাকা রিচার্জ করলে ১ পয়সা সেকেন্ড আবার ৩৮ টাকা রিচার্জে ৩৮ টাকা বোনাস ইত্যাদি। এখানেও রয়েছে মেয়াদ, নির্দিষ্ট তারিখও এখানে আপনাকে ১ পয়সা রেটে কথা বলার সময় বলে দেওয়া হবে না। আপনাকে নিজেই তা মনে রাখতে হবে, মনে না থাকলেই নির্দিষ্ট সময় সীমার পর আপনাকে মিনিট প্রতি গুনতে হবে অতিরিক্ত টাকা।

আর এটাতো কেউ লিখে রাখে না তাই প্রায় ক্ষেত্রেই এ ফাঁদে পড়ে ব্যালেন্স হারাতে হয়! ৩৮ টাকা বোনাস পেয়ে আপনি আমি আনন্দে আত্মহারা! ওই বোনাস টাকায় কত করে মিনিট প্রতি চার্জ হবে এরকম কোন তথ্য ভিত্তিক লিফলেট বা বিজ্ঞাপন আজও চোখে পড়লো না! সেই বোনাস টাকায় কথা বলতে গেলে দেখা যায় অতিরিক্ত হারে চার্জ হওয়ায় বোনাস টাকা শেষ হয়ে মেইন ব্যালেন্সও শূন্য হয়ে একসময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ব্যালেন্স চেক করতে গেলে মিলে গোল্লা!

কারণ এদের চাকরি দেবার আগে ট্রেনিং এ মূল বিষয় হিসাবে শেখানো হয়  উপস্থাপনা, গ্রাহকের সাথে কথোপকথন বিষয়ক চুলচেরা বিশ্লেষণ। গ্রাহককে লবনকে চিনি বলে খাইয়ে সামাল দেওয়াই এদের মূল কাজ

৪। ইমারজেন্সি ব্যালেন্স : ব্যালেন্স লো হলেই অটোমেটিক মেসেজ আসছে মোবাইল এ ব্যালেন্স নেই? ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নিতে ডায়াল করুন এতে কিংবা আপনার বর্তমান ব্যালেন্স ৫ টাকা বা ১০ টাকার কম ? ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নিতে ডায়াল এত! বলা যেতে পারে এটি মোবাইল ঋণ। এ ইমারজেন্সি ব্যালেন্স দিয়ে আপনি তথাকথিত অফার গুলো পর্যন্ত কিনতে পারবেন না।

শুধু ক্ষুদে বার্তা আর ভয়েস কল সমূহ করতে পারেন তবে বোনাস ব্যালেন্সের ন্যায় অতিরিক্ত হারে চার্জ হওয়ায় অল্প কয়েক মিনিট কথা বলতেই সংযোগটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। আর হয়তো ২ মিনিট কথা বলতে পারলেই আপনার কাজটা হতো... এদিকে হুদায় কথা বলে ২০ টাকা ব্যালেন্স পানিতে গেল।

আপনার কাছে পকেটে ২০ টাকা ভাবছেন ফ্লেক্সিলোড দিয়ে জরুরী কথাটা সেরে নেই, ফ্লেক্সিলোড করতেই ঋণের সেই কাক্সিক্ষত ২০ টাকাটি কেটে নেওয়া হবে, আপনাকে আবারো বাধ্য করা হবে সেই ঋণ নিতে আবারো প্লান অনুযায়ী চলবে খেলা, হাতিয়ে নেওয়া হবে আপনার আমার কাছে কোটি কোটি টাকা!

৫। ওয়েলকাম টিউন, ইচ্ছেটিউন বাটপাড়ি : ৪০০০ থেকে মেসেজ করে বলা হচ্ছে অমুক গানটি ১ মাসের জন্য ফ্রিতে সেট করতে এখনই সাবস্ক্রাইব করুন ফ্রিতে ডায়াল এত আবার কল করে গানও শুনানো হয় তারপর এ গানটি ইচ্ছেটিউন হিসাবে সেট করতে শুধুমাত্র ১ প্রেস করুন চার্জ একদম ফ্রি!

নির্দিষ্ট একটি সময় পর মোবাইল থেকে সেই সার্ভিস নিজে বন্ধ না করলে বা উদ্যোগ না নিলে বাড়িওয়ালার মতো আপনার কাছে তারা সেই গানের ভাড়া তুলতে থাকবে।

৬। জোকস্, স্পোর্টস নিউজ,সেহরি ইফতার বা নামাযের সময় সূচি বা ভালবাসার মানুষ : কল করে আপনাকে জোকস শুনানো হবে আপনার একটু হাসিই পেল! তারপর বলা হচ্ছে একদম ফ্রিতে শুনতে ১ প্রেস করুন  মানথলি চার্জ প্রযোজ্য।

আবার স্পোর্টস নিউজ মেসেজ দেওয়া হবে নিচে একটি ডায়াল নম্বরও দেওয়া হবে, ২৮২৮ থেকে কল আসছে  রিসপন্স করলেন ওপাশ থেকে মধু মিশ্রিত কন্ঠে ভেসে আসলো হায় আমি ফারিয়া,হায় আমি শ্রুতি, আমার সাথে যদি মন খুলে কথা বলতে চাও তবে  এখনই ১ প্রেস করো,আপনি আবেগের বেড়াজালে বন্দী কয়েদি ১ প্রেস না করে কি পারেন? শুরু হলো ব্যালেন্স লুট।

৭। অস্পষ্ট অফার : ৮ টাকা  ভ্যাট এসডি’র ২৪ মিনিটের একটি জিপি অফার এখনো চালু রয়েছে। অফারটি নিতে যখন তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী *১২১*৪# ডায়াল করবেন তখন  একটি নোটিফিকেশন পেজে ৩ নম্বরে আপনাকে দেখানো হবে স্পেশাল ২৪ মিনিট। কেন স্পেশাল তার সঠিক ব্যাখ্যা জানতে গ্রামিনফোনের হট লাইনে যোগাযোগ করে উত্তর মিলেনি। এই ২৪ মিনিট অফারটি নিতে গেলে মিনিট অফার চার্জ হারেই টাকা কাটা হয়, আবার কেবল ১ দিন মেয়াদে শুধুমাত্র সেইম অপারেটরে কথা বলা যায়।

তাহলে কেন এই অফারটি স্পেশাল বলে চালানো হলো তা ব্যালেন্স খরচ করে ফোন দিয়েও সঠিক ব্যাখা পাওয়া যায়নি। এখানে ধারনা হতেই পারে এটা দিয়ে হয়তো আদার অপারেটরে কথা বলা যায় কি না দেখি, আর কথা বলতে গেলেই কপালে শনি মিলবে! অন্যান্য সিম কোম্পানি গুলোরও রয়েছে এমন অফার ব্যবস্থা।

৮। কাস্টমার কেয়ার বিজনেস : কাস্টমার কেয়ারে পার্ট টাইম জব হিসাবে এ প্লাট ফর্মে সিংহভাগ অবস্থান কভার করেছে সরকারী ও বেসরকারি বা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছাত্রীরা। অনেক আগে কমপ্লেইন একটু চড়া ভাষায় করতে গেলেই সিমটির সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হতো। আর এখন আপনি যা’ই বলেন না কেন কাস্টমার কেয়ারের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবতি সীমা রানীর আমরা আসলে খুবই দুঃখিত স্যার  নামক কোমল অনুভূতিতে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ঢলে পড়বেন।

কারণ এদের চাকরি দেবার আগে ট্রেনিং এ মূল বিষয় হিসাবে শেখানো হয়  উপস্থাপনা, গ্রাহকের সাথে কথোপকথন বিষয়ক চুলচেরা বিশ্লেষণ। গ্রাহককে লবনকে চিনি বলে খাইয়ে সামাল দেওয়াই এদের মূল কাজ।

এখানে আমার আপত্তি নেই, আপত্তি এ জায়গায় যে কল দিলে শুনা যায় তাদের সবকটি লাইন এখন ব্যস্ত আছে,সকল কাস্টমার কেয়ার  এই মুহূর্তে বিজি আছে আবার আপনার অবস্থান এখনো ৫৭,৩০,৬,৩ এ ইত্যাদি কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হয় কেবল টাকা দিয়ে তাদের সাথে কথা বলতে।

৯। অভিযোগ নিয়ে ওভার বিজনেস: প্রাথমিক অবস্থায় আপনার সমস্যার সমাধান না দিতে পারলেই কেবল একটি কমপ্লেইন নোট রাখবেন কাস্টমার কেয়ার। নতুন পদ্ধতিতে চলছে এ সেবা, বর্তমানে এরকম অভিযোগ থাকলেই একটি কেস নম্বর দিয়ে সাবজেক্ট এ্যাড করে একটি ক্ষুদে বার্তাও পাঠানো হচ্ছে জানানো হচ্ছে এজ সুন এজ পসিবল আপনার সমস্যাটির সমাধান করা হবে।

এ বিষয়ে আপনাকে কল করে আপনার সাথে যোগাযোগ করা হবে। কিন্তু এর পরে যোগাযোগ তারা করে না, আপনি ফোন দিলে প্রথম থেকে বিষয়টি নিয়ে ঘাটতে থাকবে এবারের কাস্টমার কেয়ার সাহেব! ব্যালেন্স হারানো আর বিরক্তি প্রকাশ ছাড়া আপনার আর কিছুই করার থাকবে না। অনেক সময় দাবি করে সমস্যাটি তো সমাধান হয়েছে, তারপর আপনি নেট ব্যবহার করেছেন এ ছাড়া বাড়তি টাকা কাটার তো কোন ইস্যু দেখছি না স্যার। আবার এরকম ও হয় ইয়র কেইস হ্যাজ বিন সলভড্।

১০। সিম বিজনেস: প্রায় হাট বাজারে বিকেল বেলা জনবহুল এলাকা পার্কের গেটে, মার্কেটের সামনে,পথের দু পাশে টেবিল চেয়ার নিয়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে মিনি ভয়েসার মাইকগুলো থেকে ভেসে আসে ‘মেলা’ ‘মেলা’ ‘মেলা’ ‘সিম মেলা একটি রবি সিম নিলে সাথে একটি এয়ারটেল সিম ফ্রি! আবার একটি সিম নিলে আরেকটি সিম ফ্রি সাথে থাকছে ৫ গিগাবাইট ইন্টারনেট ইত্যাদি।

এবার ফ্রিতে আপনি প্রায় আলকাতরায় গিলে ফেললেন, বিবাহিত হলে নিজে একটি বউকে দিলেন একটি, আর ব্যাচেলরদের আরেকটি সিমের আবাসস্থল প্রেমিকার মোবাইল ফোন। গভীর রাতে  কম রেটে কিংবা মিনিট কিনে রসালো আলাপ করছেন বেশ আনন্দিত!  ২০ টাকায় বেশ অনেকটা সময় কথা বলা যাবে। দিনের পর দিন এভাবে নিজেই নিজেকে ধোকা দিচ্ছে আমজনতা।

উঠতি কিশোরদের হাতে, টোকাইদের হাতে এবং অপরাধীদের কাছে চলে যাচ্ছে অন্য ব্যক্তি দ্বারা নিবন্ধিত সিম। সোনার কলস,টাকার খনির সন্ধান দিতে চেয়ে কথিত জ্বীন বাবা, জ্বীনের বাদশাহরা ফাঁদ তৈরি করে রিক্সাচালক, চা দোকানদার থেকে শুরু করে প্রবাসীর স্ত্রী পর্যন্ত লোভ দেখিয়ে এরা হাসিল করে হাজার হাজার টাকা। সেলস্ ম্যানের বিক্রয়ের উপর প্রেসার থাকায় সেলস্ম্যান চাকরি বাঁচানোর ওয়ে হিসাবে এই অসৎ উপায় অবলম্বনে ঝুঁকে পড়ে।

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে বা এদেশের প্রধান পেশা কৃষি, দেশের ৮০% মানুষ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। অনেকে আবার শিক্ষক, ডাক্তার, ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবীও পরোক্ষভাবে এ পেশার সাথে জড়িত। প্রত্যেকের ঘরে ঘরে আজ মোবাইল ফোন,আমরা অবগত আছি যে পরিণত বয়সের আগে বিয়ে আর লেখাপড়া না জানা বা অল্প শিক্ষিত কন্যাই আজ বধূ হিসাবে বাংলার ঘরে ঘরে।

এসকল হাউজওয়াইফ বা চায়ের দোকানদার কিংবা কৃষক ভাইটি জানেই না চার্জ,মানথলি এসবের অর্থ কি?  বা ১ প্রেস করলে ক্ষতি কি? এরা ডেট-ফেট, মেয়াদও দেখতে জানে না। এরা অহরহ প্রতারিত হচ্ছে, খোয়ানো যাচ্ছে রোদে পুড়ে রোজগার করা শ’ শ’ টাকা।

মোবাইল অপারেটরগুলোর এহেন ভাওতাবাজি ব্যবসায় দেশের সাধারণ জনগণের ক্ষতি রাষ্ট্রীয় ক্ষতি হিসাবে মনে করি। সময় উপযোগী ব্যবস্থা নিয়ে, জনগণকে মোবাইল অপারেটর নামক শোষণকারীদের কবল থেকে রক্ষা করতে কর্তৃপক্ষদের সুদৃষ্টি কামনা অনুরোধ নয় বরং সময়ের দাবি।

‘লেখক : সাংবাদিক, লেখক, কবি ও মানবাধিকার কর্মী

এসএস/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ