নিহার মামদূহ: জাতীয় শিশু-কিশোর পত্রিকা নকীবের উদ্যোগে আজ ‘শিশু সাহিত্য : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন দেশের খ্যাতিমান শিশু-সাহিত্যিক ও লেখকগণ।
আজ বুধবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর নয় পল্টন গোল্ডেন প্লেট রেস্টুরেন্টে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মাসিক নকীবের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি জি. এম. রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, লেখক ও কথা শিল্পী মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন, কবি ও ছড়াকার মহিউদ্দিন আকবর দাদু ভাই, নকীবের সাবেক উপদেষ্টা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, নকীবের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কে.এম. আতিকুর রহমান, শিশু সাহিত্যিক কামাল হুসাইন, ছড়াকার ও সাহিত্য সংগঠক মাসউদুল কাদির, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব, শিশু সাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজ, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সভাপতি লেখক ও সাংবাদিক জহির উদ্দিন বাবর, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সেক্রেটারি ছড়াকার মুনীরুল ইসলাম, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের বার্তা সম্পাদক আতাউর রহমান খসরু, রকমারি.কম-এর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট-এর টিম মেম্বার এহসানুল হক, নকীবের সাবেক সম্পাদক শায়খ ফজলুল করীম মারুফ, নকীবের সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম, নকীবের নির্বাহী সম্পাদক মুহাম্মাদ আল-আমিন, নকীবের সহযোগী সম্পাদক জিয়াউল আশরাফ, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহ-সম্পাদক শাহনূর শাহীন প্রমুখ।
সভার শুরুতে সুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শায়খ ফজলুল করীম মারুফ। তিনি তার বক্তব্যে নকীবের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, শিশুদের সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও মানসিক বিকাশ সম্পন্ন করতে চাই। আমরা চাই শিশু তার জীবনের সঠিক জানতে পারুক। এ সময় তিনি শিশু সাহিত্যের নানা দিক তুলে ধরে তাতে লেখকদের মনোযোগী হওয়ার আহবান জানান।
ছড়াগুরু মহিউদ্দিন আকবর নকীবকে শুধু পত্রিকা প্রকাশে সীমাবদ্ধ না থেকে গঠনমূলক কাজের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, নকীব যদি সাহিত্য আড্ডা, লেখালেখি কর্মশালা ও সাহিত্যপুরস্কারের ব্যবস্থা করে তবে জাগরণ তৈরি হবে। লেখক তৈরির মাধ্যমে একটি বলয় তৈরি হবে।
নন্দিত কথা শিল্পি মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন তরুণ লেখকদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, চেষ্টা অব্যাহত থাকলে এক সময় সাফল্য আসবে। লেখকদের মূল্যায়ন করতে হবে। মূল্যায়ন না করলে লেখক তৈরি হবে না।
খ্যাতিমান শিশু সাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজ বলেন, আমাদের উৎসবগুলো আমরা উদযাপন করি না। কলকাতার পূজার সিরিয়ালে পূজা থাকে কিন্তু আমাদের ঈদের সিরিয়ালে ঈদ থাকে না। ধর্ম ছাড়া কোনো মানুষ চলতে পারে না। তাহলে ধর্মকে কেনো এড়িয়ে যেতে হবে।
আওয়ার ইসলাম সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব নকীবের অগ্রগতির জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যারা নকীবের পরিচালনায় আছেন এবং যারা সম্পাদনায় আছেন উভয়ের পূর্ণ সদিচ্ছা প্রয়োজন।
লেখকদের উপযুক্ত সম্মানী ও সম্মান প্রদান করা এবং উৎসব-উল্লাস-আয়োজনে পাঠককে মাতিয়ে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর মাধ্যমে আমাদের চিন্তা-বিশ্বাস শিশু-কিশোরদের মনে ঢুকিয়ে প্রয়োজন। তিনি নকীবে ই-বুক সংস্করণেরও পরামর্শ দেন।
ইসলামি লেখক ফোরামের সভাপতি, লেখক ও সাংবাদিক জহির উদ্দিন বাবর নকীবকে আরও অগ্রসর চিন্তার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এখন আমরা শিশুদের জন্য পঠনসামগ্রি আনার কথা ভাবছি আর শিশু ডিজিটাল জগতে প্রবেশ করছে। তারা বই পড়ছে না। তারা গেমস, নাটক ও কার্টুনের প্রতি ঝুঁকছে। সুতরাং আরও অগ্রসর চিন্তা করতে হবে।
ছড়াকার মানসুর মুজাম্মিল বলেন, ইসলামি ধারায় শিশু সাহিত্য নিয়ে কাজ হচ্ছে। পরিমাণ কম বলে মন খারাপ করার সুযোগ নেই। কাজের চূড়ান্ত ফলাফল আল্লাহ নির্ধারণ করেন। সুতরাং অল্প কাজেও বেশি উপকৃত হতে পারে মানুষ।
তিনি আলেম লেখকদের প্রসংশা করে বলেন, বহু প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও তারা দেশ নিয়ে ভাবে, দেশের জন্য কাজ করে এটা অনেক বড় ব্যাপার।
বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের সেক্রেটারি ও ছড়াকার মাওলানা মুনীরুল ইসলাম মাসিক নকীবের উদ্যোগে শিশুসাহিত্য বিষয়ক কর্মশালার আয়োজনের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, কর্মশালা করা গেলে আমরা যারা শিশু সাহিত্য করছি দাবি করি এবং যারা করতে আগ্রহী তারা বুঝতে পারবে সাহিত্যের প্রকৃতিটা আসলে কি এবং শিশু সাহিত্যের কোন কোন দিক নিয়ে আলোচনা করা যায়।
ছড়াকার ও সাহিত্য সংগঠক মাসউদুল কাদির বলেন, নকীবের মূল কাজ হবে লেখক তৈরি করা। লেখক তৈরি হলে এক সময় শিশু সাহিত্যের শূন্য জায়গাগুলো পূর্ণ হবে। আর লেখক তৈরি না হলে কে তা পূর্ণ করবে। আমরা তো শিশু চাহিদা পূরণ করতে পারছি না।
এসএস/