মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫


২০০০ সালের সেই বাঁধন এখন কোথায়?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জয়নাল হাজারী ॥ ২০০০ সালের থার্টি ফাস্ট নাইটে ঢাকার টিএসি চত্তরে বাঁধন নামরে একটি মেয়ে লাঞ্চিত হয়েছিল। বিষয়টি তখন সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল। দিনের পর দিন পত্রিকার শিরোনাম ছিল বিষয়টি। সংসদেও ব্যাপক হৈচৈ হয়েছিল ব্যাপারটা নিয়ে।

সব দিক থেকেই যারা বাঁধনকে লাঞ্চিত করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছিল। রাসেল নামের একটি ছেলে ও তার সাথিদের ফাঁসির দাবি পর্যন্ত করা হয়েছিল। পুরো সরকারই এই ঘটনার জন্য বিপাকে পড়েছিল। সংসদে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছিল।

এমনি এক পরিস্থিতিতে আমি সকলকে অবাক করে দিয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে উল্টো ভাষায় বলেছিলাম আমি শুধু রাসেল নয়, বাঁধনেরও বিচার চাই। এবার সারাদেশে আলোচনা-সমালোচনা আরো বেড়ে গেল।

আমি বলেছিলাম বাঁধন ঘটনার সূত্রপাত করেছে। তা না হলে ঘটনাটি ঘটতোই না। ২০০০সালের থার্টি ফাস্ট নাইট ছিল রমজান মাসে এবং রমজান মাসের পবিত্র রাতের তিনটায় বাঁধন তার স্বামির বন্ধুর হাত ধরে মাতাল অবস্থায় টিএসিতে গিয়েছিল এবং গাড়ি থেকে নেমেই বলেছিল আমি নাচতে এসেছি, কে নাচবে আমার সাথে, চলে এস।

এই কারনেই আমি বলেছিলাম একজন মুসলিম নারী রমজান মাসের রাত তিনটায় ঘরের বাইরে যেতে পারে না। বাঁধন শুধু ঘরের বাইরে নয়, যেখানে একটি মেয়েও নেই বরং কতগুলো মাতাল ছেলে মাতলামি করছিল সেখানে যেতে পারে না। তাছাড়া বাঁধন নিজেও মাতাল অবস্থায় সেখানে গিয়েছিল।

খবরে আরো প্রকাশ সে ঘর থেকে বেরিয়ে তার স্বামীর বন্ধুর সঙ্গে দুই ঘন্টা অন্য কোথাও ছিল। স্বাভাবিকভাবে মানুষ যখন পথে সাপ দেখে কিংবা বাঘ দেখে সেপথে যায় না কিন্তু বাঁধন মাতাল ছেলেদের দেখেও সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়ল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর তাকেই দিতে হবে।

মোট কথা আমার বিবেচনায় ঐ ঘটনাটির জন্য অবশ্যই বাঁধনও দায়ি ছিল। আর তাই সাহস করে অকপটে আমি তা সংসদে বলেছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি বদলে গেল। বেশির ভাগ মুসলমান আমার পক্ষেই মত দিতে থাকে।

আমার এই ভূমিকা না থাকলে হয়তো রাসেলদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর হত কিন্তু আমার কারণে তা হয়নি এবং দ্রুততম সময়ে বাঁধন গোপনে দুবাই পাড়ি দেয়। কিছুদিন পর জানা গেল সেখানে একটি নাইট ক্লাবে সে নর্তকীর চাকরি নিয়েছে।

ইন্সটল করতে ক্লিক করুন

নর্তকীটি বাঁধন এটি জানার পর প্রবাসী বাঙালিরা তাকে তাড়া করে। সে আবারও গোপনে প্রাণ ভয়ে দেশে ফিরে এসে আত্মগোপনে থাকে। পরে আবার গোপনে সে ব্যাংকক চলে যায়। এদিকে রাসেলরাও জামিন নিয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছে।

এরপর থেকে বাঁধনের কোন খোঁজ নেই। পরের বছর আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম ঢাকা শহরে রাতের অংশে থার্টি ফাস্ট নাইটে কোন মেয়েকে দেখা গেলে তার ঠ্যাং ভেঙ্গে দেয়া হবে। তাতেই সে বছর ঢাকা শহরে মেয়েরা সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হয়নি।

তখন র‌্যাব ছিল না পুলিশেরও কড়াকড়ি ছিল না। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই রাতে তেমন কোন অঘটন ঘটেনি। এখন আইনশৃঙ্গলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে কিন্তু বড় বড় হোটেলে ঐ রাতে বউ বদলের মত জঘন্য ঘটনাও প্রতি বছরই ঘটছে। বিষয়টি মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

[লেখাটি হাজারিকা প্রতিদিন থেকে নেয়া]


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ