বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


সম্ভাবনাময় ৫ টি ব্যবসায়িক আইডিয়া

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আজ এমন কিছু ব্যবসার কথা বলবো যা বহু বছর ধরে বিদ্যামান, কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে। কখনো বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার মানসে এই কাজগুলো করা হয়নি। কর্মীরা যে যার মতো করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু এমন কিছু ব্যবসা আছে যা শুনলে খুব সাধারণ মনে হবে, কিন্তু এমন কাজ দিয়েই গড়ে তোলা যায় বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যেমন সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে বড় উদাহরণ ‘উবার’। আমাদের দেশসহ বিশ্বব্যাপী রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা বহুদিনের।

এক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা কিছু গাড়ি কিনে নিয়ে ড্রাইভার রেখে তা ভাড়া দিয়ে রোজগার করেন। অথচ উবার শুধু অভিনব পরিকল্পনা দিয়ে নিজেরা কোনো গাড়ি না কিনেও আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেন্ট-এ-কার কোম্পানি। আর ভূমিকা নয়, চলুন ব্যবসা আইডিয়ায় ঢুকে পড়ি।

০১. অনুবাদক
পৃথিবী এখন সবার হাতের মুঠোয়, বলা হয় গ্লোবাল ভিলেজ। একটি অ্যানড্রয়েড ফোন হাতে থাকলে এক ক্লিকে আমেরিকা চলে যাওয়া যায়, পরবর্তী ক্লিকে আবার ফিরে আসা যায় বাংলাদেশে। প্রযুক্তি বিপ্লবের কল্যাণে পৃথিবী গ্লোবাল ভিলেজ হয়ে উঠলেও এই ভিলেজের সবাই সব ভাষা জানে না, এমনকি আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজিও সবাই জানে না। সুতরাং বিশ্বব্যাপী অসংখ্য তথ্য অনুবাদের চাহিদা বাড়ছে ক্রমশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিক্স হ্যান্ডবুকের ২০১৫ সালে দেওয়া তথ্যানুসারে, প্রতি বছর ৬৪ শতাংশ হারে অনুবাদকের চাহিদা বাড়ছে। সুতরাং অনুবাদ হয়ে উঠতে পারে নতুন সম্ভাবনাময় ব্যবসা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটেকটিক্স হ্যান্ডবুকের ২০১৫ সালে দেওয়া তথ্য অনুসারে প্রতি বছর ৬৪ শতাংশ হারে অনুবাদকের চাহিদা বাড়ছে।

এক্ষেত্রে একক ভাবে কেউ শুধু নিজেকে সাবলম্বী করতে চাইলে সে কোনো পত্রিকা, সাময়িকী বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে নিজস্ব বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে না এবং সর্বোচ্চ দুটি ভাষা ভালোভাবে জানলেই চলবে।

তবে কেউ চাইলে অনুবাদ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাষার কয়েকজন অনুবাদককে সাথে নিয়ে গড়ে তোলা যেতে পারে আন্তর্জাতিক মানের কোনো অনুবাদ প্রতিষ্ঠান। বিশ্বব্যাপী অসংখ্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত নানান বই প্রকাশ করে, এসব প্রকাশনীর সাথে চুক্তির ভিত্তিতে এক ভাষার বই অন্য ভাষায় অনুবাদ করা যেতে পারে। তাতে বইয়ের ব্যাপ্তি যেমন বাড়বে সাথে একটা অনুবাদ প্রতিষ্ঠানও দাড়িয়ে যাবে।

বাসা বাড়িতে গৃহ পরিচারিকা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী সরবরাহ করার নতুন ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে।

০২. কর্মী সরবরাহ
ঢাকা শহরের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি। এই ২ কোটি মানুষের পরিবারে গৃহপরিচারিকা, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর চাহিদা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। আবার বিদ্যমান বাস্তবতায় বিশ্বস্ত ও দক্ষ গৃহপরিচারিকা পাওয়া খুব কঠিন। এই চাহিদা আর সংকটের কথা মাথায় রেখে বাসা বাড়িতে গৃহ পরিচারিকা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী সরবরাহ করার নতুন ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। শুধু গৃহ পরিচারিকা নয়, বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের মেকানিক, বাসা বদল করার কর্মী ও যানবাহন সরবরাহ সেবাও সাথে যুক্ত করা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমন প্রতিষ্ঠান থাকলেও আমাদের দেশে এমন ব্যবসা খুব বেশি জনপ্রিয় হয়নি এখনও। সুতরাং শুরু করা যেতে পারে।

০৩. জব মিডিয়া
প্রতিনিয়ত যেমন হাজার হাজার চাকরি প্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়ছে তেমনি চাকরি দাতার প্রত্যাশাও বাড়ছে। সব চাকরি প্রত্যাশী চায় চাকরি পেতে, আবার প্রতিষ্ঠানগুলো চায় হাজার হাজার আবেদনের মধ্য থেকে গুণী, মেধাবী ও যোগ্য আবেদনকারীকে বেছে নিতে। তবে সমসাময়িক সময়ে চাকরি প্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে যোগ্য আবেদনকারী খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। অধিকাংশ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার আবেদন বাছাই, সাংক্ষাতকার গ্রহণকে বাড়তি ঝামেলা বলে মনে করে। এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে পারেন তরুণ উদ্যোক্তারা।

বিভিন্ন কোম্পানির চাহিদার ভিত্তিতে দক্ষ ও যোগ্য জনবল খুঁজে দেওয়ার মাধ্যমে গড়ে তোলা যেতে পারে ক্যারিয়ার এবং জব মিডিয়া ভিত্তিক ব্যবসা।

মার্কিন বিখ্যাত গণমাধ্যম সিএনএনের এক জরিপ মতে, সাম্প্রতিক সময়ে এমন চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপীর সবচেয়ে জনপ্রিয়। বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ যোগ্য কর্মী খুঁজে পেতে এমন মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হয়। বিভিন্ন কোম্পানির চাহিদার ভিত্তিতে দক্ষ ও যোগ্য জনবল খুঁজে দেওয়ার মাধ্যমে গড়ে তোলা যেতে পারে ক্যারিয়ার এবং জব মিডিয়া ভিত্তিক ব্যবসা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে বৈকি, তবে অভিনবত্ব আনতে পারলে এ জাতীয় নতুন স্টার্টআপের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে।

০৪. স্মার্টফোন মেরামত
স্মার্টফোন এখন দৈনন্দিন জীবনের সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গগুলোর একটি। শহর কেন্দ্রিক জীবনে স্মার্টফোন নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। কিন্তু সবাই কি এর সঠিক ব্যবহার জানে? জানে না, জানলে হরহামেশা এত স্মার্টফোন বিকল হতো না। এই বিকল হওয়া স্মার্টফোন আবার সারিয়ে নেয়া যায়। সারিয়ে নিলে আবার আগের মতো ব্যবহার করা যায়। প্রযুক্তি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিকল হয় স্মার্টফোন, কাজেই এর মেকানিকের চাহিদাও প্রচুর। এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে শুরু করা যায় স্মার্টফোন মেকানিকের ব্যবসা।

কিছুদিন দক্ষ মেকানিকের কাছে কাজ শিখে নিয়ে কোনো স্মার্টফোন কোম্পানির সাথে অথবা ব্যক্তিগতভাবে এই কাজ শুরু করা যেতে পারে।

কিছুদিন কোনো দক্ষ মেকানিকের কাছে কাজ শিখে নিয়ে কোন স্মার্টফোন কোম্পানির সাথে অথবা ব্যক্তিগতভাবে এই কাজ শুরু করা যেতে পারে। চাইলে কয়েকজন মেকানিক সাথে নিয়ে একটি স্মার্টফোন মেরামতের কোম্পানি করা যেতে পারে। এতে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আইড্রপড’ নামের এমন একটি স্মার্টফোন মেরামত কোম্পানি প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করছে।

০৫. ভ্রাম্যমাণ নাপিত
চুল ছাড়া মানুষ হয় না, আর লাখে একজন সাধু সন্ন্যাসী ছাড়া চুল কাটান না এমন মানুষ পাওয়া যায় না। সুতরাং ভ্রু, নাক কুঁচকাবেন না, নাপিতের কাজটি যদি মোবাইল সার্ভিসে নিয়ে যাওয়া যায় তবে এক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়া সম্ভব। মার্কিন মুল্লুকে ইতিমধ্যে এমন ব্যবসা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ভ্রাম্যমান নাপিতের ব্যবসা করতে হলে আপনাকে নাপিত হতে হবে না। প্রয়োজন হবে কয়েক জন দক্ষ নরসুন্দর বা নাপিত, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের চুল কাটাতে রাজি থাকবে।

ভ্রাম্যমান নাপিতের ব্যবসা করতে হলে আপনাকে নাপিত হতে হবে না। প্রয়োজন হবে কয়েক জন দক্ষ নরসুন্দর বা নাপিত, যারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের চুল কাটবে। এই সেবা বিশেষ ভাবে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে শিশুদের জন্য। কেননা শিশুরা তাদের পরিচিত গন্ডির বাইরে খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে না। তাই সেলুনে নিয়ে তাদের চুল কাটাতে অভিভাবকদের বেশ বেগ পেতে হয়। সুতরাং নতুন বছরে শুরু করতে পারেন ভ্রাম্যমান নরসুন্দরের ব্যবসা।

নতুন বছরে নতুন করে স্টার্টআপ শুরু করতে চলেছেন যারা, তাদের জন্য শুভ কামনা। সূত্র : ইয়ুথ কার্নিভাল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ