শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


শায়েখে ছানিকে মনে পড়ে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাহদি হাসান সজিব

তিনি ছিলেন সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানি রহ. এর অন্যতমও তারকাশিষ্য৷ ইতিহাসের এক স্বর্ণপ্রসবিনী সন্তান৷ দারুল উলুম দেওবন্দের দীর্ঘ পয়ত্রিশ বছরের বুখারি শরিফের অধ্যাপক৷ ওলামায়ে কেরামের দিকপাল, কুতুবুল আলম, মুস্তাজাবুদ দা'ওয়াহ, যুগের অন্যতমও মুহাদ্দিস, মুফাক্কিহ ও মুবাল্লিগ, ইলমে নববির যোগ্য ওয়ারিস৷

এলমে দ্বীনের প্রতি হজরতের গভীর ভালোবাসা এখনো নাড়া দেয় অন্তরে! কঠিন অসুস্থতায়ও যিনি দমে যাননি হাদিসের দরস থেকে৷ তাইতো শেষকয়েকবছর চলনক্ষমতা রহিত হওয়া সত্তেও হুইল চেয়ারে উপস্থিত হতেন দরসে আর স্বভাবজাত বিরল তাকরিরে ও স্পষ্ট কথনে মুগ্ধ করতেন তৃষ্ণার্ত হৃদয়কে৷ ইলমে ওহির শারাবান তহুরা পান করিয়ে ধন্য করতেন হাজারো পুস্পকলিকে৷

তার 'আয় আল্লাহ' ডাকের সেই মধুর ধ্বনী এখনো বাজে কর্ণকুহরে৷ যেন মুহাব্বতের উত্তল তরঙ্গে দোল খাচ্ছে বিলিন হয়ে৷ এইতো সেদিনকার কথাইতো এসব৷

শশমাহি পরীক্ষার পাঁচদিন পূর্বে কিতাবুল মাগাযি শেষ করে দোয়ার মাধ্যমে যিনি বিদায় নিয়েছিলেন আমাদের থেকে৷ কে— বুঝেছিলো তখন, এইযে হুজুরের শেষ দরস! আমাদের শেষ দেখা!!

পরীক্ষা আরম্ভ হয়েছিলো ১৭ ডিসেম্বর রবিবার৷ শেষ ২৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার৷ ক্লাস শুরু ৩১ ডিসেম্বর শনিবার৷ কিন্তু...৷

৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যে সাটটা চল্লিশের দিকে একটা মেসেজ পেলাম আমাদের দাওরায়ে হাদিসের ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে৷ 'শায়খে ছানি রহ. আর নেই৷' (আল্লামা আবদুল হক আজমী) প্রথম আমি ভ্রুক্ষেপও করলাম না সেদিকে৷ কিন্ত মিনিট কয়েক পরই গর্জে উঠলো মসজিদে কাদিমের মাইক৷

শুনতে হলো সে কথাই, যা শোনার জন্য কখনো প্রস্তত ছিলাম না আমি, প্রস্তত ছিলো না কেউই৷ শুনতে হলো সেটাই৷ ঘোষণা হয়ে গেলো প্রিয় ওস্তাদ আল্লামা আবদুল হক আজমি রহ. এর মৃত্যুর খবর৷ যেন হতবিহ্বল বনে গেলাম মুহূর্তেই৷ হলাম বাকরুদ্ধ৷ চোখ থেকে বইতে লাগলো শ্রাবণাশ্রু, হৃদয় ফুঁড়ে বেরোতে লাগলো রাঙাখুন আর শোক সাগরে ভাসতে লাগলো দেওবন্দের ধূলিকণা৷ জগৎটাও অনুধাবন করলো তার শূন্যতা৷

এইতো, ক'দিন আগের ঘটনাইতো৷ যার ক্ষতগুলো এখনও তাঁজা৷ অথচ এর ভেতর পেরিয়ে গেলো একটা বছর! চাপা পড়ে গেলো কত কথা, কত স্মৃতি৷ তবুও মনে পড়ে..৷

লেখক: দারুল উলুম দেওবন্দের ফারেগ


সম্পর্কিত খবর