বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৮ রমজান ১৪৪৫


বিজয় দিবসে কী ধরনের আয়োজন হওয়া উচিত?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

চলছে বিজয়ের মাস। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর পালিত হয় বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনেই বাংলাদেশ পেয়েছে একটি মানচিত্র। স্বাধীন পতাকা।বাঙ্গালির মননে ১৬ ডিসেম্বর একটি চেতনা। এই দিনে সরকারি, বেসকরারি উদ্যোগে আয়োজিত হয় নানা আয়োজন।

নানা উপায়ে স্মরণ করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের। শহীদদের করবে দেয়া হয় ভালোবাসার পুষ্পস্তবক। তবে এসবে সত্যিই কি তাদের আত্ম শান্তি পায়? কোথায় তাদের স্মরণে গানের আসর হয়। এসব নিয়ে আছে আলোচনা সমালোচনা। আবার দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে।

এ বিষয়টিও আলোচনার বাইরে নয়। শহীদদের আত্মার মাগফিরাতের জন্য আসলে কী করা উচিত? এ বিষয়ে তিন জন আলেমের সঙ্গে কথা বলেছেন হাসান আল মাহমুদ

শালীনতার ভেতর থেকে উৎসব করতে হবে

মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান
প্রিন্সিপাল মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর১২ ঢাকা

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় লাভ করি। লাখো মানুষ এ যুদ্ধে অংশ নিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। একটি দেশ উপহার দিছেন আমাদের। সেই কাতারে অনেক আলেম মুক্তিযোদ্ধার রক্তও মিশে আছে এই মাটিতে। সে ইতিহাস দেশের অধিংশ মানুষই জানেন না। এমনকি বিষয়টি জানে না কওমির শিক্ষার্থীরাও। তাই কওমি মাদরাসাগুলোতে বিজয় দিবসে 'মুক্তিযুদ্ধে আলেমদের অবদান' শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করা যেতে পারে।

এখন তো রাস্তায় রাস্তায় বিজয় উৎসবের দিন নাচ গান হয়। বিজয়ের দিন আনন্দ হবে পাশাপাশি শহীদদের স্মরণও করতে হবে। তাই শালীনতার ভেতর দিয়ে এসব অনুষ্ঠান পালন করা উচিত সবার।

কওমি মাদরাসাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের মধ্য দিয়ে কিছু অনুষ্ঠান করতে। প্রায় প্রতিটি মাদরাসায় সাপ্তাহিক জলসা হয়ে থাকে, এসবে ১৬ ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বক্তৃতা, দেশাত্মক কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। বিশেষভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দোয়ার ব্যবস্থা করা অবশ্যই কর্তব্য। তাহলে সবাই উপকৃত হবে।

শহীদদের জন্য প্রতিদিনই দোয়ার আয়োজন করা উচিত

মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী
প্রিন্সিপাল জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগ

এই দেশ সবার। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই দেশের নাগরিক। এদেশেকে স্বাধীন করতে আমাদের অনেক ভাইকে জীবন বিলিয়ে দিতে হয়েছিল। আমি মনে করি শুধু ১৬ ডিসেম্বর নয়; প্রত্যেকদিনই যেন দেশব্যাপী যার যার অবস্থান থেকে শহীদদের জন্য দোয়া করে। এখন তো একটা দিবসে তাদের স্মরণ স্মৃতিচারণ সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়েছে। এমনটা অনুচিত।

দেশের কওমি মাদরাসাগুলো সে উদ্যোগ নিতে পারে। মাদরাসাগুলোতে বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের আলোচনা সভা ও শহীদদের জন্য দোয়ার আয়োজন করা ছাড়া অন্য যে সকল প্রচলিত উপায়ে বিজয় দিবস পালন করা হয় তার কোনো সুযোগ দেখি না।

প্রচলিত অনুষ্ঠানগুলো থেকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাগণ কিছুই পান না

মুফতি খালেদ সাইফুল্লাহ
প্রিন্সিপাল ও শাইখুল হাদিস জামিয়া মুহাম্মদিয়া আরাবিয়া মিরপুর, ঢাকা

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। আমরা পাই একটি স্বাধীন দেশ। বিনিময়ে হারাতে হয় অনেক কিছু। অনেক জীবন। দেশের স্বাধীনতা আনতে আমাদের যেসব ভাই-বোনের রক্ত দিতে হয়েছে আমি বিশ্বাস করি তাদের রক্তের মূল্য কখনো শোধ হবে না।

১৬ ডিসেম্বরে বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে প্রচলিত যেসব অনুষ্ঠান আয়োজন হয়ে থাকে সেগুলো থেকে আমাদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাগণ কিছুই পান না।

তাদের জন্য যদি দেশব্যাপী দোয়া, কুরআন খতমের ব্যবস্থা করা হত তাহলে অবশ্যই তারা সমূহ কল্যাণ লাভ করত। যেহেতু এ আয়োজন খুবই বিরল তাই কওমি মাদরাসাগুলোতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দোয়া, কুরআন খতমের আয়োজন করা যেতে পারে। সেই সাথে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আলেমদের অবদান তুলে ধরে আলোচনার আয়োজনও করা যেতে পারে।

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ