শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


‘শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে ইসলামি ব্যাংকিং এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশের ব্যাংকের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের ইসলামি ব্যাংকগুলো সুদি ব্যাংকের তুলনায় শক্ত অবস্থানে রয়েছে। মূলধন সংগ্রহ, পূঁজি বিনিয়োগ, রেমিটেন্স সংগ্রহসহ সবকিছুতেই তারা এগিয়ে। ইসলামি ব্যাংকগুলোর এ অগ্রগতি ধারাবাহিক। প্রতিবছর তাদের আর্থিক লেনদেনের আয়তন বাড়ছে। ইসলামি ব্যাংকসমূহের এ সাফল্যের কারণ জানতে আওয়ার ইসলাম মুখোমুখি হয়েছিলো সেন্ট্রাল শরীয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংক অব বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল এ কিউ এম ছফিউল্লাহ আরিফের। তার সঙ্গে কথা বলেন আতাউর রহমান খসরু

আওয়ার ইসলাম :  বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইসলামি ব্যাংকের সাফল্য ঈর্ষণীয়। অগ্রগতি ধারাবাহিক। ধারবাহিক সাফল্যের কারণ কী?

ছফিউল্লাহ আরিফ : ইসলামি ব্যাংকসমূহ মানুষের কল্যাণে কাজ করে বলেই মানুষ ইসলামি ব্যাংকসমূহের প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠছেন। ইসলামি ব্যাংক সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে। রিস্ক মিনিমাইজ করে কাজ করে, যেনো এ্যসেট বা ব্যাক্ট বাই এ্যসেট হয়। ইসলামি ব্যাংক রিয়েল ইকোমনিক ট্রানজেকশন করে। তাছাড়া সব ধর্মে সুদ নিষিদ্ধ। মানুষ সুদ মুক্ত থাকতে চায়। শুধু ধর্মের যেনো যেনো সমাজে সুদ অপছন্দীয় যারা সুদি লেনদেন করে তারাও তা খারাপ জেনে করেন।

আওয়ার ইসলাম : সাধারণ ব্যাংকের দাবি ইসলামি ব্যাংকসমূহ ধর্মীয় অনুভূতি পুঁজি করে ব্যবসা করছে?

ছফিউল্লাহ আরিফ : ইসলামি ব্যাংক মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি পুঁজি করে ব্যবসা করছে না। ইসলামি ব্যাংক সুদ হারাম জেনে কাজ করছে। অন্যদিকে ধর্মে সুদ নিষিদ্ধ, সমাজে সুদ নিন্দীয় তাই মানুষ সুদমুক্ত লেনদেন বেছে নিচ্ছেন। এটা পুঁজি করা নয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য যা ভালো তাই তারা করছে।

তারা একটি ভালো পথ অনুসরণ করছে, আমরা সবাই কোনো কোনো ভালো পলিসি সামনে রেখে কাজ করে। পুঁজি করে করছে।

আওয়ার ইসলাম :  স্বতন্ত্র ইসলামি ব্যাংকিং অ্যাক্ট বহুদিনের দাবি। আসলে ইসলামি ব্যাংকগুলো বাংলাদেশে কী কী প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করছে?

ছফিউল্লাহ আরিফ : আমি ঠিক প্রতিকূলতা বলবো না। গভর্মেন্ট বা ব্যাংকিং অ্যাক্ট বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইড লাইন, বিভিন্ন সময়ের সার্কুলার দেয় তা বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিংকে সুদৃঢ় করেছে, অনেক আইনি সুরক্ষা দিয়েছে। ইসলামি ব্যাংকিং কোম্পানি অ্যাক্ট যদি আলাদাভাবে থাকে তবে ভালো হতো। তাছাড়াও আমাদরে কাজ চলছে।

আওয়ার ইসলাম : কাজের ক্ষেত্রটি তাহলে সমান প্রসারিত বলা যায়?

ছফিউল্লাহ আরিফ : বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার আইনের মাধ্যমে তাদের বরং বেশ কিছু সুবিধা ও আইনি ছাড় দিয়েছে। ন্যায্যতা চিন্তা করলে ইসলামি ব্যাংকগুলো আরও কিছু পাওয়ার আছে। ইসলামি ব্যাংকের উন্নতির জন্য আরও কাজ করা প্রয়োজন।

আওয়ার ইসলাম : ধারাবাহিক সাফল্য; বিশেষত বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক রিপোর্টের পরে সরকারের কি ইসলামি ব্যাংকগুলোর প্রতি আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন?

ছফিউল্লাহ আরিফ : সরকার অমনোযোগী বলবো না। সরকার যথেষ্ট মনোযোগী। তবে আমরা সরকারের কাছে আরও বেশি কিছু প্রত্যাশা করি।

আওয়ার ইসলাম :  সাফল্যের পরিসংখ্যান গ্রাহক পর্যায়ে পরবে বলে আপনি মনে করেন?

ছফিউল্লাহ আরিফ : অগ্রগতির এ পরিসংখ্যান ইসলামি ব্যাংকের ব্যাপারে মানুষ আগ্রহ অবশ্যই বাড়াবে। আমি বলবো, শুধু দেশে নয়। বরং সারা বিশ্বে ইসলামি ব্যাংক এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্ব ব্যাংক থেকে শুরু করে পৃথিবীর সব বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামি ব্যাংকিংয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

সারা বিশ্বে ইমলামি ব্যাংকিংয়ের সাফল্য ঈর্ষণীয়। আমেরিকায় অর্থনৈতিক মেল ডাউন হলো কিন্তু কোনো ইসলামি ব্যাংক কিন্তু বন্ধ হয় নি। এজন্য ইসলামি ব্যাংকিংয়ের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ বেড়েছে অনেক বেশি।

আওয়ার ইসলাম : ইসলামি ব্যাংকিংয়ের ভবিষ্যত সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী?

শফিউল্লাহ আরিফ : এ আগ্রহ দিন দিন বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস। ইসলামি ব্যাংক কল্যাণকর অর্থনীতির কথা বলে। ন্যায্যতার কথা বলে। অবিচারের কথা বলে না। সুদ জুলুম। অবিচারের নামান্তর। ইসলামি ব্যাংক সুদি ব্যবস্থায় কাজ করে না। ইনসাফ ভিত্তিক ব্যবস্থায় কাজ করতে চায়। সুতরাং জনগণের আগ্রহ বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সারা বিশ্বে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে এবং বাড়বে।

সব সূচকে সুদি ব্যাংকের চেয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলো এগিয়ে; যে কারণে এ উন্নতি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ