শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


রোহিঙ্গাদের স্বর্ণ ও মুদ্রা পানির দামে কিনে নিচ্ছে দালালরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবিদ আনজুম: মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কিয়াত ও স্বর্ণ নিয়ে বাংলাদেশি দালালদের প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিয়াত মিয়ানমারের স্থানীয় মুদ্রার নাম। রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসার সময় এ কিয়াত নিয়ে এসেছিল সঙ্গে করে।

জানা যায়, রোহিঙ্গাদের কাছে থাকা এই কিয়াত ও স্বর্ণ পানির দামে কিনে নিচ্ছে দালালরা। কারণ ক্যাম্পে থাকায় এগুলো ভাঙ্গানোর উপায় নেই রোহিঙ্গাদের কাছে। তাই বাধ্য হয়েই সস্তায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

শনিবার দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের দুর্দশাকে কাজে লাগিয়ে কক্সবাজারের একশ্রেণীর দালাল জিম্মি অর্থনীতির নেপথ্যে কাজ করছে। এ চক্র মুদ্রা সংগ্রহ করে চোরাকারবারিদের কাছে বিক্রি করছে। উখিয়ার কুতুপালং ও ঘুমদুম অস্থায়ী রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, এক লাখ কিয়াতের বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে মাত্র ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা।

রোহিঙ্গাদের ঢল বাংলাদেশে আসতে শুরু করলে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় অনেক দালালচক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। নৌকা ভাড়া করে মিয়ানমার থেকে রেহিঙ্গাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসা, যানবাহন ভাড়া করে দেয়া, বিভিন্ন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া, বসবাসের জন্য জমির ব্যবস্থা করা, রোহিঙ্গা নারীদের স্বর্ণালংকার ও জিনিসপত্র বিক্রি করে দেয়া, কম মূল্যে মিয়ানমারের মুদ্রা ‘কিয়াত’ কেনাবেচা করছে এ চক্র।

পুলিশি অভিযান, গ্রেফতার ও বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেও দমানো যাচ্ছে না দালাল চক্রকে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড চোরাকারবারকে উৎসাহিত করবে। কারণ মিয়ানমারের মুদ্রা সরাসরি ব্যাংকগুলো কিনবে না। এসব মুদ্রা বিক্রি করতে হবে যারা মিয়ানমারের সঙ্গে অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য করছে তাদের কাছে।

তিনি বলেন, এটি এক ধরনের অনৈতিক ব্যবসা।

শনিবার মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্তে আসেন ইউসুফ। সঙ্গে ছিল তিন হাজার কিয়াত। নাফ নদী পার হওয়ার পর তার কাছে বাংলাদেশের কোনো টাকা ছিল না। দালাল চক্র তার কাছ থেকে তিন হাজার কয়েত রেখে তাকে দিয়েছে মাত্র একশ টাকা।

ইউসুফ বলেন, আমি কিছু বুঝতে পারিনি। আমার কাছ থেকে এক রকম জোর করে টাকা (কয়েত) নিয়ে এ দেশের একশ টাকা দিয়েছে।

জানা গেছে, ট্রুলারে যাত্রী বিশেষ করে রোহিঙ্গা পারাপারে জড়িত দালাল চক্র রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আদায় করছে। ঘুমধুম সীমান্তের শামলাপুরে এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছ শহীদ, মৌলভী রফিক, মৌলভী আজিজ, জহুর আলম, নুরুল আলমসহ অর্ধশত দালাল। শামলাপুর এলাকার বেশিরভাগ বোট মালিকও এখন দালালি শুরু করেছে।

এসব বিষয়ে টেকনাফের শাহপরী দ্বীপে অবস্থান করা হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র হাবিব বিন আজাদের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, এ মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের বড় প্রয়োজন দালালদের খপ্পর থেকে তাদের বাঁচানো। কারণ সর্বস্ব হারিয়ে এদে আসা রোহিঙ্গারা আরেক ট্রাজেডির শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, এখানে যদি অনেক স্বেচ্ছাসেবী থাকত তবে তারা নিজ দায়িত্বে নৌকা নিয়ে তাদের টেকনাফে আনতে পারত। কিন্তু এ কাজটা করছে দালালরা। বিনিময়ে অনেক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর টেকনাফে প্রবেশের পর অনেক বখাটের লুলুপ দৃষ্টিতেও পড়তে হচ্ছে। এ কারণে এ মুহূর্তে তাদের পাহাড়া দিয়ে আমাদের জন্য খুবই জরুরি।

সৌদি পত্রিকায় সুচিকে সমর্থন: এ খবরের সত্যতা কতটুকু?


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ