সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


প্রধানমন্ত্রী’র কাছে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীর চিঠি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!

মহান আল্লাহ পাকের দরবারে অশেষ শুকরিয়া যে, এই বয়সে এসেও আপনি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন করে যাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে দেশের জটিল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা অত্যান্ত নিপুণভাবে সমাধান করে যাচ্ছেন।

আপনি এই দেশকে 'রোল মডেল' হিসেবে বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করতে সীমাহীন ত্যাগ স্বীকার করে যাচ্ছেন। হত-দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে সবসময় আপনাকে দেখা যায়। আপনার কল্যাণেই এদেশের বেকারত্বের হার এখন অনেক কম।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের 'সঙ্গে থাকার' কথা দিয়েছেন আপনি। ভারত থেকে পালিয়ে আসা 'হাতি'কেও আপনি যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন। দেশের সব ধর্মকেই আপনি যথোচিত সম্মান করে থাকেন। যে ধর্মের লোকই হোক না কেন আপনি তার আবেদন পূরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ব্যয় করে থাকেন।

সর্বোপরি মানবকল্যাণের সর্বদিকেই আপনার সাহায্যের হাতকে খুঁজে পাওয়া যায়। কারণ আপনি এমন এক রাষ্ট্রনায়কের গর্বিত কন্যা যিনি মনবতার প্রশ্নে কখনো পিছু হটেন নি। যিনি দুর্দশাগ্রস্ত অসহায় নিঃসম্বল মানুষের সামনে নিজকে সপে দিয়েছিলেন।

সেই মহান ব্যক্তির আদর্শেই তো আপনি বেড়ে উঠেছেন। তার চেতনায়ই তো আপনি লালন করে থাকেন।

সুতরাং তার প্রতিচ্ছবি আপনার মাঝে ফুটবে এটাই স্বাভাবিক। আপনি দেশ ও জনগণের তরে অনেক করেছেন। জনগণের চাহিদা মেটাতে আপনি কখনো কার্পণ্য করেন নি। তাই আপনার কাছে ষোল কোটি জনগণের এখন চাহিদা বা পরম চাওয়া হচ্ছে 'মানবতার তাগিদে রোহিঙ্গা মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানো'। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার।

আপনি হয়ত দেখেছেন, এদেশের মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধসহ আপামর জনগণ এখন রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আবেদন জানাচ্ছে বিশ্বদরবারে। ঠিক এই মুহূর্তে আপনার সামান্য উদ্যোগ কিংবা চেষ্টায়ই আপনাকে 'শ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী'র আসনে নিয়ে যেতে পারে।

আপনি হয়ত ঘাবড়ে গেছেন, এত মানুষের ভরণপোষণ কোথা থেকে দেব? ঘাবড়ানোর কিছু নেই। যদি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে খাদ্যাভাব থাকে তাহলে শুধু একবার ঘোষণা করেন, ‘যার যা আছে তা নিয়েই রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়াও’ দেখবেন শরীরের রক্ত বিক্রি করে হলেও মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের 'গণহত্যা' ঠেকাতে যদি রাষ্ট্রীয় সামরিক জান্তারও অভাব হয় তাহলেও ঘোষণা দিন, ‘বার্মার গণহত্যা ঠেকাতে যারা যুদ্ধে যেতে চাও তারা আধা ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের নাম-ঠিকানা জমা দাও’ দেখবেন পঙ্গপালের মত মানুষ হুমরি খেয়ে পড়বে নিজেদের নাম জমা দিতে। কারণ রোহিঙ্গা নির্যাতনে যে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে তা মানুষ হিসেবে সহ্য করা যে বড় কষ্টকর।

অথবা যদি মনে করেন, এই হত্যাযঙ্গের ব্যাপারে বিশ্বদরবারে আবেদন করতে কোটি মানুষের স্বাক্ষরসম্বলিত ডকুমেন্ট লাগবে। তাহলেও আমরা প্রস্তুত। মোটকথা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানকল্পে আপনার যে কোনো উদ্যোগই আমরা অভিবাদন জানাবো ইনশাআল্লাহ।

এখনই সুযোগ কিছু করে দেখাবার। এখনই সময় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সারাবিশ্বে তুলে দরবার। দয়া করে আপনি উদ্যোগ নিন।

ইতি
মুহাম্মাদ আরিফ রব্বানী
ছাত্র, জামিয়া আরাবিয়া কাসেমুল উলূম (মাদরাসা) যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ