বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

হে যুবক! তোমাকে বলছি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি মুহাম্মদ আবু সালেহ

হ্যাঁ তোমাকেই বলছি। শুধু তুমি নও, তোমার মত আরো যারা আছে। বয়স একদম তোমার মত। রক্ত টগবগে গরম। পান থেকে চুন খসলেই মেজাজ বিগড়ে যায়। ইচ্ছে করে মহাকান্ড ঘটিয়ে ফেলতে। যারা তোমার মতই আমোদ ফূর্তি করে বেড়ায়। সুযোগ পেলেই সিনেমা - পার্ক, ডি জে - নাইট ক্লাব আর পপ পার্টিতে ঢুঁ মারে। বাপের অর্থ সম্পদ আর নিজের একাউন্ট, ম্যানিব্যাগের কচকচে নোটগুলো যাদেরকে ভোগ বিলাসের নেশায় ডুবিয়ে রাখে।

বংশ আর ক্ষমতার দাম্ভিকতা যাদের বুকটাকে উঁচিয়ে রাখে। তুলতুলে নরম সাপের মত এ মুখোশদ্বারি দুনিয়ার চাকচিক্য যাদেরকে পরকাল থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। তাদেরকে বলছি।

তোমাকে বলছি। ধৈর্য ধরে শুন। দেখো! আমার কথায় যুক্তি আছে কি না? তুমি তো আবার ডিজিটাল যুগের মডার্ন যুবক! কথায় কথায় যুক্তি খুঁজো। যুক্তিহীন কথা তোমার কানে ঢুকেনা। তোমার দিকটা লক্ষ্য করেই আমি যুক্তি দিয়ে বলছি। দেখো! আমার কথায় বাস্তবতা আছে কি না!
প্রথমে একটা কথা জিগ্যেস করি। দেখ তো!  এর উত্তর জান কি না?

আচ্ছা! তুমি কি বলতে পারবে, তুমি কে? প্রশ্ন শুনে তুমি হাসছো? ভাবছো, এটা কোন প্রশ্ন হল? প্রশ্ন শুনে আমাকে বোকা মনে হচ্ছে ? উত্তরটা তাহলে বলেই ফেলো। এতোক্ষণে হয়তো তুমি বিড়বিড়িয়ে বলে ফেলেছো, আমার নাম অমুক। অমুকের ছেলে। আমি এই করি - সেই করি। আরো কত্ত কী!

তুমি কি জান? তোমার উত্তর শুনে আমার হাসি পাচ্ছে! কারণ,তুমি সঠিক উত্তরটা দিতে পারনি। অবাক হওয়ার কিছু নেই। তোমাকে খুলে বলছি। মনে কর! একজন লোক ব্যাগে করে মাছ নিয়ে যাচ্ছে। তুমি তাকে জিগ্যেস করলে, ভাই!এটা কী মাছ? লোকটা বলল, ইলিশ। এখানে তুমি লক্ষ্য করে দেখ! লোকটা কিন্তু তোমাকে মাছের নাম বলেনি। বরং মাছটার জাত সম্পর্কে বলেছে।

অর্থাৎ সে তোমার কাছে মাছটার পরিচয় দিয়েছে মাছটার জাত নির্ণয় করে। তার মানে কী হল? তার মানে হচ্ছে,পরিচয় হয় জাত এর মাধ্যমে। নামের মাধ্যমে নয়।

কথাটা কি ঠিক বলেছি? এবার তাহলে তোমার মাঝে ফিরে আসি। এখন তুমিই বল! তুমি কে? এতক্ষণে নিশ্চয় তুমি পরিস্কার বুঝে গেছো! তুমি কে?  হ্যাঁ! তুমি যা ভাবছো তাই সঠিক। তুমি মুসলমান। জাতে মুসলিম। এটাই তোমার পরিচয়। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকোনা কেন, এটাই তোমার পরিচয়। এ পরিচয়ের ভেতরেই লুকিয়ে আছে তোমার জীবনের সফলতার কথা। তুমি যদি এ পরিচয়টা ভুলে না যাও, জীবনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে যদি মনে থাকে, তুমি মুসলিম ; আমি হলফ করে বলতে পারি, জীবনের সফলতা তোমার কপালে চুম্বন করবেই।

কীভাবে? এইতো বলছি। একটু ধৈর্য ধর। তার আগে তোমার মনের একটা খুঁতখুতানি দূর করি। পরিচয়ের এ আলোচনা শুনে তোমার মনে হয়তো প্রশ্ন জমেছে, পরিচয় যদি জাত দ্বারা হয় তাহলে নামের প্রয়োজনটা কী? কেন আমাদের নাম রাখা হয়? আর আমরাই বা কেন কথায় কথায় নাম দ্বারা পরিচয় দেই? পেরেশান হয়ো না।

এর সমাধানও বলে দিচ্ছি। আমার ধারণা সঠিক হলে, তুমি একজন বুদ্ধিমান যুবক। এবার তুমি একটু চিন্তা করে দেখ তো! যদি সমাজের সবগুলো মানুষের অালাদা আলাদা নাম রাখা না হয়, তাহলে কি হবে? বিশাল একটা গন্ডগোল বেঁধে যাবে।

দেখা যাবে, একজন লোক তার সব বন্ধুকেই মুসলিম বলে ডাকছে। বিষয়টা খুবই অস্বস্তিকর। আমাদের সমাজজীবনকে সহজ করার জন্য আমাদের প্রত্যেকের আলাদা নাম রাখা হয়েছে। তাই বলে এই নামটাই আমাদের পরিচয় নয়। তোমারও নয়। নামটা শুধু তোমাকে আর দশজন থেকে আলাদা করে চেনার জন্য। জানার জন্য।

হে যুবক! তুমি কি আমার কথায় যুক্তি আর বাস্তবতার সমন্বয় পেয়েছো? এবার তাহলে স্বীকার করছ যে,তুমি একজন মুসলিম। এটাই তোমার পরিচয়। সমাজজীবনে এবার হওনা তুমি, কলেজ ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্র।

অথবা পুলিশ - আইনজীবী, স্কুল কলেজ মাদরাসা বা ভার্সিটির শিক্ষক। বা রিকসার প্যাডেলে পা রাখা কোন যুবক। পেশায় তুমি যাই হওনা কেন, তোমার সর্বপ্রথম পরিচয়, তুমি একজন মুসলিম। জাতে মুসলমান।

-এজেড


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ