শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


২০১৪ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা ১৮ সালে হবে না: মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : আওয়ামী লীগই পেছনের দরজা দিয়ে আবারো ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেইসাথে আগামী নির্বাচনের জন্য সরকারকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য আহবান জানান তিনি।

শুক্রবার বিকেলে এক দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমরা বরাবরেই দেখেছি, বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসার জন্য এই দলটি পেছনের দরজা দিয়ে চেষ্টা চালায়। এবারো তারা জনগণকে ভুল বুঝিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে। তারা মনে করেছে আবারো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটি একতরফা একদলীয় নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় আসবে। আমরা আবারো বলছি- ২০১৪ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা ২০১৮ সালে হবে না। এদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।

রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়া মাহফিল হয়।

এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্মমহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক শাহ নেছারুল হকসহ মহানগর ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট পূর্ব লন্ডনের একটি হাসপাতালে তার ডান চোখে সফল অস্ত্রোপচার হয়। লন্ডনে বেগম খালেদা জিয়ার চোখে সফল অস্ত্রোপচারের পরবর্তী অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তার সফল অস্ত্রপচার হয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি এখন সুস্থ আছেন। আমরা আজ ও কাল কেন্দ্রীয়ভাবে দুদিন সারাদেশে মসজিদ, আমাদের দেশনেত্রীর দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য প্রার্থনা জানাতে কর্মসূচি নিয়েছি। আসুন আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন অতি দ্রুত আমাদের দেশনেত্রীকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে নিয়ে আসেন এবং একই সাথে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে নিয়ে আসেন।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ক্ষমতাসীন দল ‘তেলে-বেগুনে’ জ্বলে উঠেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রায় ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছে এবং তারা এমন সব মন্তব্য করেছে যে মন্তব্য শুধু অশালীনই নয়, তা আদালত অবমাননার শামিল।

আজ একজন মন্ত্রী যিনি নিজে হাইকোর্ট দ্বারা সাজাপ্রাপ্ত, তার মন্ত্রীত্ব থাকা উচিৎ নয়, তিনি আবার প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন। খুব চিৎকার করে কথা বলছেন। আমি বলতে চাই- আগে নিজের মুখের দিকে তাকান। নিজেদের চেহারা আয়নাতে দেখুন। আপনারা যেসমস্ত কথা বলছেন, কোথায় নিয়ে গেছেন রাষ্ট্রকে, কোথায় নিয়ে গেছেন দেশকে? সত্য কথা বেরিয়ে এসেছেন আপিল বিভাগের রায়ের মধ্য দিয়ে। যে একটা দাণবীয় সরকারের পরিণত হয়েছেন আপনারা, দানবের মতো সব কিছুকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন, গণতন্ত্র ধ্বংস করছেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করছেন, মানুষের মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বলেছেন, আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই এবং নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় আমরা সেই নির্বাচন চাই। দেশনেত্রী সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন, অতি দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন। তিনি যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা দেশে একটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে সহায়ক সরকারের অধীনে এই সরকারকে নির্বাচন দিতে বাধ্য করবো।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে কোনো কাজই করতে দেয়া হবে না, আমাদেরকে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো প্রয়োগ করতে দেয়া হবে না, আমাদেরকে আমাদের দলের আদর্শ প্রচার করার জন্য কোনো সুযোগ দেয়া হবে না, কোথাও সভা করতে দেয়া হবে না, কোথাও সমিতি করতে দেয়া হবে না, কোথাও র‌্যালি করতে দেয়া হবে না। এমনকি এই যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মতো প্রোগ্রাম করতেও সব জায়গায় বাধা দিচ্ছে। শুধু ক্ষমতাসীনরাই হেলিকপ্টারে করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, সমান্তরাল ভুমি তৈরি করতে হবে। তাহলেই নির্বাচনের একটা সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে, আমরা নির্বাচনে যাওয়ার একটা পথ খুঁজে পাবো।

-এজেড


সম্পর্কিত খবর