শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


কাদিয়ানীবাদ কী? কাদিয়ানী কারা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী

মির্জা গোলাম আহমদ তৎকালীন ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুদাসপুর জেলার কাদিয়ান নামক গ্রামে ১৮৩৫ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মির্জা গোলাম মুর্তজা, মা’র নাম চেরাগ বিবি। শিক্ষা দীক্ষায় আরবি ব্যাকরণ, যুক্তিবিদ্যা, দর্শন ও চিকিৎসা বিদ্যায় পড়া লেখা করেন।

ছাত্রত্ব শেষ করে শিয়ালকোট জেলা প্রশাসনের অধীনে স্বল্প বেতনে কিছু দিন কেরানির চাকরি করেন। পরে আদালতে মোক্তার নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেন। তারপর আর কোথাও চাকরি করার সুযোগ না পেয়ে ইংরেজ বেনিয়া গোষ্ঠীর এজেন্ট হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন।

কাদিয়ানী কারা?
ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর সুদুরপ্রসারী নীলনকশায় কাদিয়ানী মতবাদের জন্ম। মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ইংরেজদের ফর্মুলা অনুযায়ী মিথ্যা নবুওয়তের দাবি করে। তার অনুসারীদের কাদিয়ানী সম্প্রদায় বলা হয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন নস্যাৎ করা এবং মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ও অনৈক্যের বীজ বপন করাই হচ্ছে কাদিয়ানী মতবাদের উদ্দেশ্য।

কাদিয়ানী নবুওয়ত : ব্রিটিশ ষড়যন্ত্রের ফসল
উনবিংশ শতাব্দিতে ব্রিটিশ বেনিয়া গোষ্ঠী যখন ভারতবর্ষ দখল করে নেয় তখন স্বাধীনতা সংগ্রামের সিপাহসালার হযরত শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. ফাতওয়া দিয়েছিলেন ‘হিন্দুস্তান দারুল হারব’ হয়ে গেছে ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদ করে দেশকে স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ।

এই ফাতাওয়ার ফলে উপমহাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের দাবানল জ্বলে উঠে। ওলামা মাশায়েখ ও মুজাহিদীনে ইসলাম আজাদী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রতিটি জায়গায় স্বাধীনতা প্রেমী জনতা সাহসিকতার সাথে ইংরেজদের মুকাবিলা করেন।

শহীদে বালাকোট হযরত সাইয়েদ আহমদ বেরেলভীর নেতৃত্বে ভারতে, শায়খ মুহাম্মদ আহমদের নেতৃত্বে সুদানে এবং জামালুদ্দিন আফগানীর নেতৃত্বে যখন আফগানিস্তানে ইসলামি সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষে জিহাদী আন্দোলন চাঙ্গা হয়ে উঠে, সাধারণ জনগণও ঈমানী চেতনা ও জিহাদী জযবা নিয়ে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন এসব অঞ্চলে চেপে বসা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের ক্ষমতা ও আধিপত্য অটুট রাখার জন্য নতুন নতুন ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করতে থাকে। তারা বুঝতে পারে, ইসলামি পুনর্জাগরণের যে দীপশিখা প্রোজ্জ্বলিত হয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং মুসলমান বিপ্লবীদের অন্তরে জিহাদের চেতনা যেভাবে জাগ্রত হচ্ছে ব্রিটিশ সাম্রজ্যোর ক্ষমতার মসনদ যে কোন সময় জ্বালিয়ে ছাই করে দিতে পারে। এই ভয়েই তারা ‘দালাল সৃষ্টি করো শাসন করো’ নীতির জন্ম দিল।

মির্জা কাদিয়ানী যিন্দিক কেন?
মদের বোতলের ওপর যমযমের লেবেল লাগিয়ে সরবরাহ করা যেমন জঘন্যতম অপরাধ, আর কুকুরের গোস্তকে হালাল উপায়ে জবেহকৃত জন্তুর গোস্ত বলে লেবেল লাগিয়ে বিক্রি করা যেমন দণ্ডনীয় অপরাধ ঠিক তেমনিভাবে মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী স্বীয় কুফরি মতবাদের ওপর ইসলামের লেবেল লাগিয়ে সরলপ্রাণ মুসলমানদের ধোঁকা দেয়াও দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই মির্জা অবশ্যই যিন্দিক।

কুরআন ও হাদীস এবং ইজমায়ে উম্মাহর সর্বসম্মত আকীদা হলো মুহাম্মদ সা. খাতামুন নাবিয়্যিন বা সর্বশেষ নবী ও রাসূল। এটা মুসলিম উম্মাহর এমন আকীদা যাতে সন্দেহ করার কোন অবকাশ নেই। তাই ধর্মপ্রাণ মানুষকে এসব থেকে সতর্ক থাকতে হবে সব সময়। কোনো ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেয়া যাবে না।

লেখক: উপদেষ্টা সম্পাদক, ইনসাফ ২৪ ডটকম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ