শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


রাজনীতির ভেল্কি ও ভেল্কিবাজির রাজনীতি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা মামুনুল হক

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য- ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যত কর্মীদের সাথে নিজের একটি উপলব্ধি শেয়ার করা ৷

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরোধিতা করা একটি শতসিদ্ধ বিষয় ৷ তবে তাতেও কিছু শিষ্টাচারের সীমারেখা আছে৷ এই যেমন ধরুন,ভিন্ন মতালম্বি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যখন ক্ষমতাসীন থাকে, আর যখন ক্ষমতাহীন থাকে, উভয় অবস্থা কস্মীনকালেও সমান বিবেচ্য হতে পারে না ৷ যখন যারা ক্ষমতায় থাকে তখন তারা সারা দেশ এবং গোটা জাতির দায়িত্বে থাকে, তাই তাদের অন্যায়, ভুল পলিসি ও ক্ষতিকর সিদ্ধান্তাবলীর সাথে দেশ-জাতির ওতপ্রোত সম্পর্ক থাকায় সে ব্যাপারে তাদেরকে সতর্ক করা, প্রতিবাদ করা এমন কি বিরোধিতা করা শুধু প্রচলিত রাজনীতির কালচার নয়, বরং ইসলামের আদর্শ ৷ পক্ষান্তরে যারা ক্ষমতার বাইরে থাকে তাদের দায়-দায়িত্বটা কখনোই সরকারের সমপর্যায়ের নয়, হতে পারে না ৷

সরকার কাজ করে দেশ-জাতির হয়ে ৷ সুতরাং তাদের জবাবদিহিতাও গোটা দেশ-জাতির পক্ষ থেকে৷ কিন্তু সরকারের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলো কাজ করে দলের হয়ে ৷ সুতরাং তাদের জবাবদিহিতাটাও দলের পক্ষ থেকে৷

সরকারের সাথে সহনশীল কিংবা সুসম্পর্ক রাখা বা থাকা যে কোনো রাজনৈতিক দলের নীতি-পলিসির বিষয় ৷ দলীয় চিন্তা-দর্শনের আলোকে এমন সিদ্ধান্ত হতেই পারে ৷ কিংবা কোনো দল মনে করলে বিরোধী জোটের সাথেও জোটবদ্ধ থাকতে পারে, সেটাও তাদের দলীয় চিন্তা ও সিদ্ধান্তের বিষয় ৷ কিন্তু মুখে বলবেন, আপনি সরকারী জোট বা দলের লোক নন, কিন্তু কথা বলার সময় সরকারের এ্যসাইনমেন্টের বুলি আওড়াবেন, তাতেও না হয় আপত্তি না করলাম, কিন্তু যদি সরকার বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আক্রমনাত্মক কথা বলেন, তখন দুটি বিষয় দ্ব্যার্থহীন হয়ে যায়-

এক. রাজনৈতিক ন্যুনতম শিষ্টাচার রক্ষা করার সৌজন্যতাবোধ আপনার মাঝে নেই ৷

দুই. সরকারের সাথে সন্মানজনক রাজনৈতিক সমঝোতা করবার যোগ্যতা বা সৎসাহস কোনোটাই আপনার নাই, আছে ইসলামী রাজনীতির নামে দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করার দুর্বল মানসিকতা ৷ এটাকে সাধারণ মানুষ তো সরকারের দালালী মনে করবে! এতে আপনার বা আপনার দলের যাই হোক, ইসলামী রীজনীতির ব্যপারে মানুষের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে ৷

সব চেয়ে বড় রাজনৈতিক ভেল্কিবাজি হল, যদি ক্ষমতার পরিবর্তন হয়, তখনও দেখা যাবে, যাদের বিপক্ষে এখন যারা অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দিল, তাদের সাথেই আবার তাদের বেশি সখ্যতা ও দহরম-মহরম হয়ে যাবে ৷ সময় এখন, অসৌজন্যতা, শিষ্টাচার বর্জনের জয়জয়কারের ৷ সবই মানলাম, কিন্তু ইসলামী রাজনীতিরও কি একই ধারা?

বি: দ্র: এটি শুধু সমকালীন নয়, বরংএকটি সার্বজনীন পোস্ট৷

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া ঢাকা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ