শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

বাবার ইচ্ছায় কুরআনের হাফেজ হন তাজউদ্দীন আহমদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রোকন রাইয়ান: ২৩ জুলাই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ৯২ তম জন্মদিন। বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন সৎ ও মেধাবী রাজনীতিবিদ হিসেবে যাদের নাম স্মরণীয় তাদের মাঝে অন্যতম ছিলেন জননেতা তাজউদ্দীন আহমদ

১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই গাজীপুর জেলার অন্তর্গত কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলভী মোঃ ইয়াসিন খান এবং মায়ের নাম মেহেরুননেসা খান।

প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন একজন হাফেজ কুরআন। তিনি তার বাবার কাছেই পবিত্র কুরআন শিক্ষা শুরু করেন। তার বাবা জেনালের শিক্ষা অপছন্দ করতেন। এজন্য তিনি তাজউদ্দীনকে দীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করার মনস্ত করেন।

তাজউদ্দীন আহমদের আরবি ও হিফজ শিক্ষা বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায় তার মেয়ে শারমিন আহমদ রিতি’র লেখা “তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা” বইতে। বইয়ের পরিশিষ্টে তাজউদ্দীন সম্পর্কে পরিবারের স্মৃতিচারণভিত্তিক সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সেখানেই উঠে আসে এ তথ্য।

বইটির ২৪২ নম্বর পৃষ্ঠায় ছাপা হয় শারমিন আহমদের ফুফু অর্থাৎ তাজউদ্দীন আহমদের বড় বোন সুফিয়া খাতুনের স্মৃতিচারণ। যেটি নেয়া হয়েছিল ১৯৮৭ সালের ১০ জুলাই।

সুফিয়া খাতুনের স্মৃতিচারণ শারমিন আহমদ নিজের ভাষায় এভাবেই তুলে ধরেন- “বড়ফুফু আব্বুকে বড় হয়ে উঠতে দেখেন দায়িত্বশীল, শান্ত সংযমী, মিতভাষী ও স্নেহপরায়ণ মানুষ রূপে। তার মধুর স্বাভাব ও চারিত্রিক গুণাবলির কারণে তিনি ছিলেন ‘সকলের নয়নের মণি’। তিনি বাল্যকাল থেকেই গাছপালার পরিচর্যা খুব পছন্দ করতেন। গরু বাছুরেরও দেখাশোনা করতেন দায়িত্ব সহকারে। আব্বুর প্রিয় মিষ্টি ছিল গুড়। ব্রিটিশ আমলে হিন্দু-মুসলিম সকলের মধ্যেই ধুতি পরার রেওয়াজ ছিল। আব্বুও বাল্য বয়সে ঘরে ধুতি পরতেন। দাদা জেনারেল শিক্ষা অপছন্দ করতেন। ওনার ইচ্ছা ছিল আব্বুকে কুরআনে হাফেজ করা। দাদার তত্ত্বাবধানে নিজ গৃহে প্রতিষ্ঠিত মক্তবে আব্বু বাল্যবয়সেই ১১ পারা পর্যন্ত কুরআন হেফজ করেন। পরে পুরো কুরআন। শুক্রবার লুঙ্গি ও শার্ট পরে জুম্মার নামাজে যেতেন। ছেলে ধর্মীয় ও সাধারণ সব শিক্ষায় সমান পারদর্শিতা লাভ করুক, এই ছিল দাদির মনোভাব। দাদির প্রচণ্ড ইচ্ছা ও আগ্রহের কারণে আব্বু স্কুলে ভর্তি হন বাড়ি থেকে দেড়মাইল দূরে ভুলেশ্বর প্রাইমারি স্কুলে।

দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম হয়ে পুরস্কার পান আল্লাহর ৯৯ নামের বই

তাজউদ্দীন আহমদ যে প্রচণ্ড মেধাবী ছিলেন তার স্বাক্ষর রেখেছেন প্রথম শ্রেণি থেকেই। শারমিন আহমদ লিখেন “ভুলেশ্বরে পড়াকালীন প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন প্রথম স্থান লাভ করে। পুরস্কার হিসেবে পান ৯ পয়সার কলম ও দেড় পয়সার দোয়াত। দ্বিতীয় শ্রেণিতেও প্রথম হ। এবারে প্রথম পুরস্কার পান আল্লাহর ৯৯ নামের বই এবং আলীবাবা চল্লিশ চোরের বই। ষষ্ঠ শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষায় আব্বু ঢাকা জেলায় প্রথশ স্থান লাভ করেন। মেট্রিকে তিনি কলকাতা বোর্ডে ১২ তম স্থান লাভ করেন।

ব্রিটিশ শিক্ষা বিরোধী আন্দোলনের ১ বছর পড়া স্থগিত

তাজউদ্দীন আহমদ ব্রিটিশদের শিক্ষাব্যবস্থার বিরোধী ছিলেন। মেট্টিকের পর পড়া স্থগিত রেখে ব্রিটিশ শিক্ষা বিরোধী আন্দোলনে তিনি যোগ দেন। আর এই সিদ্ধান্তে ক্ষেপে যান মা। শারমিন আহমদ তার বইতে লেখেন, “ম্যাট্রিক পাশের পর এক বছর আব্বু লেখাপড়া করেননি ব্রিটিশ শিক্ষাবিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্ত হয়ে। এই সিদ্ধান্তে দাদি খুব মর্মাহত হয়ে আব্বুকে বকাঝকা করেছিলেন। বড় ফুফুর স্মৃতিচারণার এই জায়গায় ছোট কাকু যোগ করেন যে, আব্বুর লেখাপড়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তে দাদি এতই মর্মাহত হয়েছিলেন যে আব্বুকে বলেছিলেন তাজউদ্দীন, তুই পড়বি নাকি আমি দা’ দিয়ে কোপ দিয়ে নিজে মরে যাব’। আব্বু তার প্রতিজ্ঞা রেখেছিলেন। আবার তার মনও রক্ষা করেছিলেন। একসময় তিনি ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে চতুর্থ স্থান লাভ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স পাস করে এমএ ক্লাসে ভর্তি হন।

আগের সংবাদ: একজন হাফেজে কুরআন! যিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ