মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫


সরকারের প্রশ্রয়ের কারণে ভারতে গো-রক্ষার নামে মুসলিম হত্যা বন্ধ হচ্ছে না: ড. সুব্রাহমানিয়াম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : ভারতে গোরক্ষার নামে মুসলিম হত্যা চলছে বহুদিন ধরেই। চলমান এ সহিংসতায় মুখ খুলেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গতমাসে তিনি বলেন, গো-রক্ষার নাম করে মানুষ হত্যা ‘গ্রহণযোগ্য নয়’।

তার এই মন্তব্যের ঘণ্টা-খানেক পরেই একজন মুসলিম ব্যক্তি জনতার হাতে নিহত হন। তার বিরুদ্ধে গাড়িতে গরুর মাংস বহনের অভিযোগ তুলে তাকে হত্যা করা হয়।

মোদীর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকারের সময়ে গরু জবাইকে কেন্দ্র করে বিভক্তি চরম আকার নিয়েছে। গরু বিক্রি এবং জবাইর ক্ষেত্রে কড়াকড়ির ফলে বিভ্রান্তি এবং উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠেছে।

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে হিন্দু জনতার হাতে মুসলিম নাগরিকের হত্যার ঘটনা ঘটেছে। একটি এলাকায় দুই ধর্মে বিশ্বাসী এক দম্পতিকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও রয়েছে।

 ভারতে গো-রক্ষার নামে মুসলিম হত্যা বন্ধ করতে হবে:  ইসলামী আন্দোলন

সমালোচকরা সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখতে থাকেন যে, ভারতে বহুদিন ধরেই উত্তেজিত জনতা এবং ধর্মীয় সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে।

বিজেপির একজন সংসদ সদস্য এবং কলামিস্ট লিখেছেন, ‘ভারতের সামাজিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সহিংসতা বিরাজমান ছিল এবং স্বাধীনতার পর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতার ক্ষেত্রে উত্তেজিত জনতার সহিংসতা তার মাত্রা বাড়িয়েছে কোনও লক্ষ্য অর্জনে কিংবা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে’ ।

ভারতের অন্যতম বিখ্যাত একজন ঐতিহাসিক সঞ্জয় সুব্রাহমানিয়ামকে ভারতের সহিংসতার সংস্কৃতি নিয়ে বিবিসির পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি জানান, এটা তিনভাবে পরিলক্ষিত হবে। জাতিগত বা ধর্মীয় দাঙ্গা, উত্তেজিত জনতার দ্বারা সহিংসতা এবং সামাজিক রীতি রক্ষার নামে হত্যাকাণ্ড।

গো-রক্ষার নামে মুসলিম হত্যার নিন্দা জানালেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি

ডক্টর সু্ব্রাহমানিয়াম বলেন, ‘চোর কিংবা ডাকাত অথবা কখনো কখনো গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলে জনতা জড়ো হয় এবং চালককে মারতে থাকে। আইন প্রয়োগের দুর্বলতার কারণে এটা ঘটে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ধারণা করি যদিও প্রমাণ করা সম্ভব নয় যে, এই উত্তেজিত জনতা বিকারগ্রস্ত। তারা তাদের হাতে হঠাৎ পাওয়া ক্ষমতাকে উপভোগ করে। আমি বিশ্বাস করি না যে, কোনও মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ এধরনের উত্তেজিত জনতার কাতারে থাকতে পারে’।

 

ডক্টর সুব্রাহমানিয়াম বলেন, এই ধরনের সহিংসতা বন্ধ করা অত্যন্ত কঠিন কারণ এগুলো 'বিক্ষিপ্ত এবং বিশৃঙ্খল'। আইনের প্রতি সামাজিকভাবে আস্থা বাড়ানো গেলে এবং সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে তবেই তা বন্ধ করা সম্ভব।

তার মতে, এই সহিংসতা ঠেকাতে হলে কঠোর আইন প্রয়োগ, দায়ীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ এগুলো রীতি-মাফিক সহিংসতার ঘটনা ফলে যারা বা যে সংগঠনগুলো এগুলো ঘটাচ্ছে তাদের দিকে নজরদারি চালালে তা ঠেকানো সম্ভব।

‘কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, এদের যারা রক্ষাকর্তা হিসেবে মাঠে নেমেছে তাদের পাহারা দেবে কে?’

-এআরকে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ