বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হচ্ছে আওয়ার ইসলামের বছরমেয়াদী সাংবাদিকতা কোর্স

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুলাইমান সাদী : একবছরের অভিজ্ঞতা ও সাফল্য সঙ্গে নিয়ে আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম এবছর আবার শুরু করতে যাচ্ছে লেখালেখি ও সাংবাদিকতা কোর্স। ১ বছর মেয়াদী কোর্সটির তত্ত্বাবধানে থাকবেন নন্দিত কথাশিল্পী মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন।

তিন সেমিস্টারে বিভক্ত কোর্সে দেয়া হবে বাংলা ব্যাকারণের মৌলিক পাঠ, প্রমিত উচ্চারণ ও কথা বলার মার্জিত স্টাইল। আবৃত্তি, উপস্থাপনা ও বিষয়ভিত্তিক বক্তৃতা। লেখালেখি, সংবাদ লিখন ও অনুবাদ অনুশীলন ইত্যাদি।

এ কোর্সের আয়োজন কেনো? তার উত্তরে কোর্স সমন্বয়ক ও আওয়ার ইসলাম সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব  বলেন,  বাংলাদেশে তরুণ আলেমদের বিপুল সংখ্যক কাজের চাহিদা তৈরি হয়েছে। সে হিসেবে তরুণদের গঠনমূলক প্রস্তুতির তেমন কোনো জায়গা নেই। তরুণদের  দৃঢ়ভাবে আগামীর পৃথিবীকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য যতোটা প্রস্তুতির প্রয়োজন সেরকম কোনো আয়োজনও আমাদের নেই। আমরা সেই জায়গাটা তৈরি করার চেষ্টা করছি।’

নিজেদের গন্তব্য সম্পর্কেও ধারণা দেন তিনি।  বলেন,  ‘মাওলানা যাইনুল আবিদীনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা চিন্তা করছি, যেসব তরুণ সমাজের বাস্তবতার মুখোমুখী হয়ে ইসলামকে নান্দনিকভাবে মানুষের কাছে পরিবেশন করবে, তেমন একটি শক্তিশালী প্রজন্মের প্রয়োজন। যারা ওয়াজ, বক্তৃতা ও মিম্বারে দাড়িয়ে আঞ্চলিক ভাষায় অগোছালো বক্তৃতা রাখবে না। শুধু গাল গল্প কিংবা কিচ্ছা কাহিনী বলে ওয়াজের প্রতি মানুষের অনীহা তৈরি করবে না।

বরং এমন একজন তরুণ আমরা তৈরি করতে চাই যে শুদ্ধ বাংলায় সমাজের ইসলামকে উপস্থাপন করতে পারবে। যার বক্তৃতা হবে গঠনমূলক, বিষয়ভিত্তিক এবং সমাজ প্রভাবী। বাংলাদেশে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ওয়াজ মাহফিল ও হাজার হাজার বক্তা থাকলেও সুনির্দিষ্টভাবে ভালো ওয়ায়েজ বা বক্তা তৈরি করার কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। আমরা সেই শূন্য জায়গায় কাজ করতে চাই।’

মাওলানা হুমায়ুন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘আমাদের তরুণরা কালোত্তীর্ণ ভাষায় লিখবে। দেশ বিদেশের নানা গ্রন্থ সুদ্ধ বাংলায় অনুবাদ করবে। সংবাদপত্র, গণমাধ্যম ও মিডিয়ার সঙ্গে থাকবে নিবীড় সম্পর্ক। গণমাধ্যমে ইসলামকে স্বমহিমায় উপস্থাপন করার জন্য যে কাফেলার প্রয়োজন আমরা সেসব তরুণদের খুঁজছি।’

কথা হয় কোর্সের রূপকার ও স্বপ্নদ্রষ্টা মাওলানা যাইনুল আবিদীনের সঙ্গেও। স্বপ্নের বীজতলার খবর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের তরুণদের মধ্যে আলেম হওয়ার পর সামাজিক দায়িত্বপালন করতে চেয়ে তাদের মধ্যে ভাষার যে দীনতার মুখোমুখী হয় আমরা তাদের মধ্যে তা কাঁটিয়ে উঠার আকুলতা ও ব্যাকুলতা দেখছি। এটা কাটিয়ে ওটার জন্য তারা নানা ধরনের ছোটখাঁটো কোর্স করে।

মাদরাসাগুলোতেও এ ব্যাপারে কিছু প্রচেষ্টা দেখা যায়। আমাদের মনে হয়, ছোট খাটো কোনো কোর্স করে এবং নিজ উদ্যোগে এ দুর্বলতা কাঁটিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। যতোটা প্রয়োজন। আমাদের বিশ্বাস, অন্তত এক বছর যদি তাদের সক্রিয়ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, তবে লেখানো, লেখা দেখা, ভালো ভালো লেখা পড়ানো, তাদেরকে শুদ্ধ উচ্চারণ শেখানো ও বলানো হলে তাদের মৌলিক পাঠদানের বিষয়টি সম্পন্ন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি, ছেলেরা ফেসবুক থেকে শুরু করে অনলাইন পত্রিকায় লেখালেখি করছে। কিন্তু মৌলিক পাঠদান না থাকায় তারা সামাজিক স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন পাচ্ছে। এক বছরের সযত্ন প্রশিক্ষণে এ দুর্বলতা কাটবে বলে মনে করি।’

তিনি কোর্স  ও উদ্যোগের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্পষ্ট করেন তিনি। ‘আমি মনে করছি, এটা আমার কোর্স। একান্তই আমার কোর্স। সুতরাং আমি ছটবাঁধা সময় দিবো বিষয়টি এমন নয়। আমরা যাদেরকে পাবো আমি তাদেরকে তৈরি করার চেষ্টা করবো। একটা পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা এখানে কাজ করবে। আমি নির্ধারিত দিনগুলোতে তো আমি যাবোই। এর বাইরে সার্বিক বিষয়ের তত্ত্বাবধান আমি করবো।’

বরেণ্য মুহাদ্দিস ও নন্দিত শিক্ষক মাওলানা যাইনুল আবিদীন তার শিক্ষাপরিকল্পনা তুলে ধরেন এভাবে, ‘কিছু বইপত্রের নাম দিয়ে একটি সিলেবাস তৈরি করা খুব কঠিন কিছু না। এটা যে কেউ-ই পারবে। কিন্তু সিলেবাস আমাদের মূল বিষয় না। ছেলেদের যা দিতে চাচ্ছি তা দিয়ে দেয়াটা মূল। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করবো। উচ্চ শিক্ষায় বিষয় নির্ধারিত থাকে বই নির্ধারিত থাকে না। আমরা বিষয়গুলোকে ছেলেদের বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ছেলেদের শেখাতে চাই।

নিজের স্বপ্ন ও প্রত্যয়ের ব্যাপারে ব্যক্ত করে আশাবাদী এ লেখক গবেষক ও সুবক্তা বলেন,  ‘এক বছর আমরা পরিশ্রম করবো। পরিশ্রম করে একটা নমুনা দাঁড় করাতে চাই। আমরা বড় মাপের শূন্য জায়গায় হাত দিয়েছি। আমাদের দেশের এসব উচ্চতর শিক্ষা কোর্সগুলোতে বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শেখানো হয় না বা কম হয়। আমরা খুব অল্প স্বল্প বিষয় নিয়ে কাজ করবো। এক বছর পরিশ্রম করার মতো তরুণ পেলে আমরা একটা দৃষ্টান্ত পেশ করতে পারবো। আশা করি, আমরা যা বলেছি তার থেকে বেশি কিছু নিয়ে বের হতে পারবে তারা।’ ইনশা আল্লাহ!

১ বছর মেয়দী কোর্সটির পরিচালক হিসাবে থাকছেন  খ্যাতিমান ভাষাবিদ ও বিদগ্ধ লেখক আইয়ুব বিন মঈন। তার অধীনে গত বছরের কোর্সটি  খুবই কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে। তার সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টায় প্রথম বছরব্যাপী কোর্সের সাফল্য নিয়ে এবছর দ্বিতীয়বারের মতো আওয়র ইসলাম আয়োজন করছে ১ বছর মেয়াদী লেখালেখি ও সাংবাদিকতা কোর্স।

ভর্তি সংক্রান্ত সকল প্রকার তথ্যের জন্য কথা বলুন : 01917-375299


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ