শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


একনেক সভায় নতুন ও সংশোধিত ১২ প্রকল্পের অনুমোদন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৩০ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ও সংশোধিত মোট ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একনেকের ২৯তম সভায় প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে জিওবি ২৫ হাজার ৯০৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ৪০৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

একনেক সভা শেষে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলো নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমপি। তিনি বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্জনের জন্য মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় অগ্রাধিকার প্রদান করা প্রয়োজন। এজন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, শতভাগ বিদ্যুতায়নের জন্য বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো) কর্তৃক দেশের পূর্বাঞ্চল (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) ও পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ) জন্য দুইটি উন্নয়ন প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ৩৯ হাজার একশ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণের জন্য ‘শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ)’ শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্প। এর মাধ্যমে ১৩ লাখ ৭০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো— প্রকল্প এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করা।

বিদ্যুতায়নের জন্য অনুমোদিত আরেকটি প্রকল্প হলো— ‘শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ) প্রকল্প। এ প্রকল্পের মাধ্যমেও প্রকল্প এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় ৩৮ হাজার ১০ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করে ১৩ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।

একনেকের ২৯তম সভায় অনুমোদিত অন্যতম আরেকটি প্রকল্প হলো— ‘আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চার লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’। এর প্রকল্প এলাকা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কসবা ও আখাউড়া উপজেলা। এই প্রকল্পে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর সড়কটি আশুগঞ্জ নদীবন্দরকে আখাউড়া স্থলবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। সড়কটির দৈর্ঘ্য ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার। পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, এ প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো— আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ; ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক এবং উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন।

জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকায় ট্রেন চলাচলের সময় সৃষ্ট সার্বক্ষণিক যানজট নিসরণে মঙ্গলবার একনেকের সভায় ‘জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার সঙ্গে বিভাগীয় শহর বরিশালের নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘চরখালী-তুষখালী-মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ (জেড-৮৭০১)’ প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় একশ চার কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

একনেকে অনুমোদিত আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের একটি হলো— রাস্তা, ড্রেন ও ফুটপাথ উন্নয়নের মাধ্যমে নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণ; যানজট হ্রাস ও যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করা এবং পথচারীদের চলাচলের সুযোগ তৈরি করা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প। অন্য প্রকল্পটি হলো— ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাফতরিক কাজ ও বসবাসের জন্য উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি, বর্তমান চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা ও বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন জমির সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে ‘বন্দরসেরি বেগওয়ানে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও হাইকমিশনারের বাসভবন নির্মাণ’ প্রকল্প।

একনেক সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসএস/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ