শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


বেফাকের মান ক্ষুণ্ন হয়নি সম্মিলিত পরীক্ষায়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি নূরুল ইসলাম উসমানী : কওমি মাদ্রাসার সরকারি স্বীকৃতি ঘোষণার পর সর্বপ্রথম দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা চলছে । কিন্তু ছয় বোর্ডের সমন্বয়ে, আল হাইয়্যাতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের অধিনে পরিচালিত কেন্দ্রীয় পরিক্ষায় প্রশ্নের মান কেমন হচ্ছে?

ছয় বোর্ডের মধ্য হতে গোটা বাংলাদেশের আশির ভাগ কওমি মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণকারী বোর্ড বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাক । বেফাকের প্রশ্নের মান দীর্ঘদিন ধরে সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়ে আসছে । কিন্তু স্থানীয় পাচঁটি বোর্ডসহ বেফাকের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্নের মান কেমন হবে? এ নিয়ে পরীক্ষার্থীসহ সচেতন সকল আলেমদের মাঝেই ছিল প্রশ্ন । বিশেষ করে স্থানীয় দুটি বোর্ড এ বছর কেন্দ্রীয় পরীক্ষা দিতে অনীহা প্রকাশ করায়, সম্মিলিত বোর্ডের পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা সামছুল হক জানিয়ে ছিলেন, প্রশ্নের মান নিয়ে পরীক্ষার্থীদের চিন্তার কোন কারণ নেই । সবার কথা মাথায় রেখেই প্রশ্ন করা হবে ।

কেমন হচ্ছে দাওরা পরীক্ষা, বিশিষ্টজনদের মতামত

এ নিয়ে বেফাকের অধীনে পরিচালিত মাদ্রাসাগুলো ভেবে ছিল, প্রশ্ন হয়তো বেশি সহজ হবে । আবার কারো মধ্যে এই আশঙ্কাও কাজ করছিলো যে, সরকারি স্বীকৃতির অধীনে অনুষ্ঠিত সর্বপ্রথম দাওরা পরীক্ষায় প্রশ্ন বেশি হার্ড হতে পারে ।

এ পযন্ত হয়ে যাওয়া প্রশ্নের মান কেমন হয়েছে! তা জানতে হাজির হয়েছিলাম, দেশের বিখ্যাত দ্বীনী বিদ্যাপীঠ কিশোরগঞ্জের আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার পরীক্ষা কেন্দ্রে । অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায়, পাচঁটি মাদ্রাসার মোট ২০২ পরিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন ।

হল সুপার হয়ে এসেছেন, জামালুল কোরআন গেণ্ডারিয়া ঢাকা থেকে মাওলানা আব্দুল গাফফার সাহেব । জানতে চাই প্রশ্নের মান কেমন হয়েছে? তিনি জানান, প্রশ্নের মান অনেক ভালো হয়েছে । সহজ ও সাবলীলতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে । এতে বেফাকের প্রশ্নের চেয়ে মান ক্ষুণ্ন হলো কিনা ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, মান ক্ষুণ্ন হয় নি । তবে বেফাকের প্রশ্ন অধিক হার্ড য়ে যায় বলে যারা ধারণা করতো, তাদের সেই সুযোগ আর রাখা হয় নি ।

ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিতে প্রশ্ন করলে, কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে কিনা! এতে তিনি বলেন, না এভাবে প্রশ্ন করা হলে, কারো ইশকাল থাকার কথা নয় ।

আমরা প্রশ্ন করি কিছু পরীক্ষার্থীকে । সর্বপ্রথম সরকারিভাবে অনুষ্ঠিত পরিক্ষায় অংশগ্রহণের অনুভূতি কেমন? সবাই বললো, দারুণ । একটি নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হচ্ছি আমরা । প্রশ্নের মান কেমন হয়েছে? তারা বললেন, অনেক সুন্দর হয়েছে । প্রশ্নে কোন বিষয়টি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে? বললেন, ইরাব হরকতের পাশাপাশি হাদিসের নিগুড় রহস্য উদ্ঘাটন করে, মাসয়ালা বের করাকে ।

বিগত বেফাক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কিছু শিক্ষার্থী, সম্মিলিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন । তাদের কাছে প্রশ্নের মান জানতে চাইলে বলেন, বেফাকের প্রশ্নের চেয়ে এই প্রশ্নের মান কোনরকম ক্ষুণ্ন হয়নি । বরং অনেক সুন্দর হয়েছে ।

কিছু নতুনত্ব আছে কিনা! তারা বলেন, মোবাইলের হুকুমসহ সাম্প্রতিক কিছু প্রশ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে ।

সর্বোপরি দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে, সম্মিলিত প্রয়াস অব্যাহত থাকলে, আল হাইয়্যাতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে । এই প্রত্যাশাই গোটা জাতির ।

লেখক : শিক্ষাসচিব, আল জামিয়াতুল কাদিরিয়া শাহেদল, হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ ।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ