বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার ৬ দিনের সফরে থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

শবে বরাত: না বাড়াবাড়ি, না ছাড়াছাড়ি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান
আমীর, মজলিসে দাওয়াতুল হক
মুহতামিম, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী ঢাকা

একটা সময় শবে বরাতকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণির মানুষ বাড়াবাড়িতে লিপ্ত ছিল। তারা এ রাতকে ঘিরে বিভিন্ন প্রথার অনুসারী হয়, অনর্থক কাজকর্ম আর রসম-রেওয়াজের অনুগামী হয়। ওলামায়ে কেরাম সবসময়ই এসবের প্রতিবাদ করেছেন। এখনও করছেন। বর্তমানে কতিপয় লোক এই শবে বরাতকে নিয়ে ছাড়াছাড়িরও প্রবণতা দেখান।

তাদের দাবি হলো, ইসলামে শবে বরাত বলতে কিছু নেই। এ ব্যাপারে হাদিসের যত রেওয়ায়েত আছে, সব দুর্বল বা জাল। এসব অনুযায়ী আমল করা এবং শবে বরাতকে বিশেষ কোনো ফজিলতপূর্ণ রাত মনে করা শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয। তারা এসব বক্তব্য সম্বলিত ছোটখাট পুস্তিকা ও লিফলেট তৈরি করে মসজিদে মসজিদে বিলিও করে।

সত্যি বলতে কি, আগেকার সেই বাড়াবাড়ির পথটিও যেমন সঠিক ছিল না। এখনকার এই ছাড়াছাড়ির মতটিও শুদ্ধ নয়। ইসলাম ভারসাম্যতার ধর্ম। ইসলামের সকল শিক্ষাই প্রান্তকতামুক্ত সরল পথের পথ নির্দেশ করে।

শবে বরাতের ব্যপারে সঠিক ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান হলো- এ রাতের ফজিলত সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। সম্মিলিত কোনো রূপ না দিয়ে আর এই রাতকে উদযাপনের বিশেষ কোনো পন্থা উদ্ভাবন না করে বেশি বেশি ইবাদত করা নির্ভরযোগ্য হাদিসে এমনটাই এসেছে।

পক্ষান্তরে এই রাতকে অন্য সব সাধারণ রাতের মতো মনে করা এবং এই রাতের ফজিলতের ব্যাপারে যত হাদিস এসেছে, তার সবগুলোকে দূর্বল বা জাল মনে করা যেমন ভুল, এ রাতকে শবে কদরের মতো বা তার চেয়েও বেশি ফজিলতপূর্ণ মনে করাও তেমন ভিত্তিহীন ধারণা।

মুসলিম উম্মাহের মাঝে এ রাতে যে আমলগত চর্চা হয়ে আসছে- তা আজকে এইমাত্র জন্ম নেয়নি, না বছর কয়েক আগে এটি সূচিত হয়েছে, না এর আবির্ভাব ঘটেছে একটি মাত্র যুগের তফাতে। বরং ইসলামের শুরু লগ্ন থেকেই যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর ধরেই এ রাতের আমলি অনুশীলন অব্যাহত রয়েছে।

আবার এমনও নয় যে, কারো ভিন্ন প্রক্রিয়ার স্পন্দনে রাতটির গুরুত্ব মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে। বরং এ রাতের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে যেমনি অপ্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত রয়েছে তেমনি বেশ কিছু হাদিসের স্পষ্ট বক্তব্যের মাধ্যমেও এ রাতের মাহাত্ম-গুরুত্ব জানা যায়।

ইসলামে শবে বরাত বলতে কিছু নেই-এ ধারণাটির উৎপত্তি খুব বেশি দিন আগের নয়, যারা একথা বলে থাকেন, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়। টিভি, রেডিও ও তথ্যপ্রযুক্তির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে তারা ইসলামের নামে মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির করার এবং নবীর সুন্নত থেকে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। আর অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, তাদের সামনে দলিল প্রমাণ উপস্থাপন করলেও তারা তা মানতে নারাজ।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার পরবর্তী উম্মতেরা পূর্ববর্তীদের নিচু চোখে দেখবে। তারা তাদের ভৎসর্না করবে এবং বলবে, তারা ভুল করছে ও ভুল বুঝছে। একথার সত্যতা আজ আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। আমরা এখন দেখতে পাই, কিছু তথাকথিত উলামা পূর্ববর্তী জগদ্বিখ্যাত বুজুর্গদের সমালোচনায় অহর্নিশ মত্ত থাকেন। এমনকি সাহাবীদের সমালোচনাও কুণ্ঠাবোধ করে না। আল্লাহ পাক আমাদের জিহ্বাকে হেফাজত করুন।

অনুলিখন : মাওলানা রিদওয়ান হাসান

আরএম/

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ