জন্মের পর থেকেই বিউটির হাত অকেজো। কিন্তু তাতে কি। স্বপ্ন থেমে থাকেনি। ধরা দিয়েছে সাফল্যও। প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি দিয়ে যে প্রতিবন্ধিতাকে জয় করা যায় দেখিয়েছেন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বিউটি আকতার।
স্থানীয় আকলাস শিবপুর শ্যামপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পা দিয়ে লিখে এই সাফল্য পেয়েছে অদম্য মেয়েটি। তার এই সাফল্যে বিদ্যালয়সহ পরিবার ও গ্রামের মানুষ এখন গর্বিত। তার ইচ্ছা এখন উচ্চশিক্ষা নিয়ে সমাজে অবহেলিতদের পাশে দাঁড়ানো।
শরীরের সব অঙ্গ থাকলেই যে সাফল্য পাওয়া যায় তা নয়। ইচ্ছাশক্তি থাকলে যেকোনো অসাধ্যকেই সাধন করা যায়, শিবপুরের বায়েজিদ প্রামানিক ও রহিমা বেগমের গরিব ঘরের মেধাবী ছাত্রী বিউটি তা প্রমাণ করেছে। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় গ্রামের মানুষের সুদৃষ্টিও এখন তার দিকে।
শুধু লেখাই নয় পা দিয়ে সে তরকারি কাটা, পেঁয়াজ কাটা, রান্না করা, সেলাই করা, বাসন মাজা, গৃহস্থালীর প্রায় সব কাজই করতে পারে অনায়াসে।
জন্ম থেকেই দুটি হাত তার একদম ছোট ও অকেজো। তাই পা’কেই বেছে নেয় জীবন চলার মূল হাতিয়ার হিসাবে। প্রতিবন্ধীতার কাছে হার না মেনে ছোটবেলা থেকেই পা দিয়ে অভ্যেস করে সব কাজ ও লেখাপড়া করার। অদম্য ইচ্ছে থাকায় সাফল্যও এসেছে বারবার।
প্রতিবন্ধী হওয়ায় অবহেলা করেনি পরিবারের কেউ। মেয়ের ইচ্ছে অনুযায়ী সাহায্য করেছে তারা। তবে হার মানতে হয়েছে দারিদ্রতার কাছে।
বিউটির মা রহিমা বেগম জানান, ছোটবেলা থেকেই মেয়েটি শান্তশিষ্ট এবং মেধাবী। পড়ালেখা ও কাজের প্রতি তার অসম্ভব ইচ্ছে। যেকোন কাজ একবার দেখলেই শিখে নিতে পারে। অভাবের কারণে মেয়েকে প্রাইভেট টিচার দিতে পারেনি। তবে শিক্ষকদের আন্তরিকতা ছিল বিউটির প্রতি। সকলের দোয়া ও সহযোগিতা পেলে বিউটি একদিন জয়পুরহাটের নাম কুড়াবে বলে আশা করেন তিনি।
বিউটির বাবা বায়েজিদ প্রামানিক বলেন, মেয়ের ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দেন তিনি। অভাব থাকলেও বিউটিকে বুঝতে দেননি। মেয়ের লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজনে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাবেন তিনি।
যেভাবে সবজি চাষে কোটিপতি হলেন আবদুস ছালাম