শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১১ শাওয়াল ১৪৪৫


দেড় লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন নিয়ে অনিশ্চয়তা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : সারাদেশে এমপিওভুক্ত সাড়ে সাত হাজার মাদ্রাসার দেড় লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারীর এপ্রিল মাসের বেতন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বিল তৈরি করার দায়িত্ব মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি)।

তবে এপ্রিল মাসের বেতন-বিল তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে গত ২৭ এপ্রিল আকস্মিকভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিল তৈরির দায়িত্ব নবগঠিত মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে দিয়েছে। পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় তারা গত চার দিনে এ বিষয়ে কিছুই করতে পারেনি। এতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মাদ্রাসার বেতন। খবর সমকালের।

‘মাদরাসায় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নয় শুধু আলেম তৈরি হবে’ এ কথায় একমত নই: মাওলানা মিসবাহ

অনেক মাদরাসায় শিক্ষকদের বেতন বাকি থাকে, এটা কি দোষণীয়?

 মাউশি সূত্র জানায়, গত ৩০ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভেঙে নতুন দুটি বিভাগ গঠন করা হয়। এর মাধ্যমে 'মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ' ও 'মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ' যাত্রা শুরু করে। পৃথক মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ গঠন করা হলেও সারাদেশে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার দায়িত্ব এতদিন মাউশিরই ছিল। এখন এ দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে দেওয়া হলো।

মাদ্রাসা শিক্ষকরা জানান, পর্যাপ্ত ও দক্ষ জনবল নিয়োগ না দিয়েই অনেকটা আকস্মিকভাবে এ দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে দেওয়ায় তাদের বেতন-ভাতা প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে গেল। চলতি মাসে রমজান শুরু হওয়ার কথা। সঠিক সময়ে বেতন-ভাতা না পেলে শিক্ষক-কর্মচারীরা চরম বিপাকে পড়বেন।

এদিকে, সঠিক সময়ে মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হবে কি-না তা নিয়ে মাউশি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাই সন্দিহান। তবে এ নিয়ে তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না।

মাউশির একটি সূত্র জানায়, আগামী জুলাই থেকে এ দায়িত্ব্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে দেওয়ার কথা ছিল। এর আগেই অনেকটা তড়িঘড়ি করে এ দায়িত্ব তাদের দেওয়া হলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয় ভাগের পর নবগঠিত বিভাগ দুটির কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব চলছে। এ কারণে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার ক্ষমতা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর তড়িঘড়ি করে বুঝে নেয়। প্রতিষ্ঠানটির এই কাজের সক্ষমতা এখনও নেই।

এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. শেখ মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান মঙ্গলবার সমকালকে বলেন, 'তারা (মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর) দাবি করছেন, তারা এ কাজ করতে পারবেন। তাদের সক্ষমতা মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই বিবেচনায় নিয়েছে। এরই মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুকূলে পৃথক কোড ও বাজেট তৈরি করা হয়েছে। দেখা যাক, কী হয়।' মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিল্লাল হোসেন এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাননি।

মাউশি জানায়, সারাদেশে বিভিন্ন স্তরের এমপিওভুক্ত মোট মাদ্রাসা সাত হাজার ৬১৮টি। এগুলোর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা এক লাখ ৪৮ হাজার ২৪৫। প্রতি মাসে তাদের বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের ব্যয় হয় ২৫০ কোটি ৯২ লাখ ২২ হাজার টাকা। এমপিওভুক্তির বাইরেও সরকার স্বীকৃত অনেক মাদ্রাসা রয়েছে।

জানা গেছে, বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মাদ্রাসা (সরকার স্বীকৃত) আছে ১৬ হাজার ২২৬টি। এর মধ্যে পূর্ণ এমপিওভুক্ত দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা আছে সাত হাজার ৬১০টি। এমপিওভুক্ত শিক্ষক আছেন এক লাখ ২০ হাজার। কর্মচারী আছেন প্রায় ৪০ হাজার। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য প্রতি মাসে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় দুইশ' কোটি টাকা।

-এআরকে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ