শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৪ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


যাকে আমরা মূলধারার শিক্ষা বলছি সেটা মূলত ঔপনিবেশিক ধারা: ড. সলিমুল্লাহ খান (ভিডিও)

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, কোনো জাতির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সময় যারা অতিতকে হিসেবে নেয় না তাদের পরিকল্পনা করার মতো কিছু নাও থাকতে পারে। ১৮২৯ সালে ব্রিটিশ গভর্নর উইলিয়ম বেন্টিং উইলিাম অ্যাডমস নামে এক ভদ্রলোককে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটা রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দেন।

তিনি তিন খন্ডে একটি রিপোর্ট তৈরি করেন তাতে উল্লেখ্য ছিল তৎকালীন বাংলাদেশে প্রায় দেড় লক্ষ প্রাইমারী স্কুল, মক্তব, মাদ্রাসা ছিল।এখনো প্রায় আশি হাজারের বেশি প্রাইমারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। মনে রাখার বিষয় হলো আমাদের দেশে ইংরেজি আসার আগেই এই শিক্ষা ব্যবস্থাটা ছিল। এসব প্রতিষ্ঠান গ্রামের মানুষকে পাটি গণিত, মাতৃভাষা এবং ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হতো।

এটাই ছিল তখনকার মূলধারা ছিল। ইংরেজি আসার পর আরেকটা মূলধারা সৃষ্টি হলো। ১৯৪৭ সালে আমাদের এলাকা মহেশখালীতে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  ছিল ’মহেশখালী এমই স্কুল’ বা ’মিডল ইংলিশ স্কুল’ । অর্থাৎ আমাদের আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে বলাই হতো ইংলিশ স্কুল। পরবর্তীতে ইংলিশ চলে গেছে, এখন বলা হয় মহেশখালী আদর্শ স্কুল।

বিশিষ্ট লেখক গবেষক ও শিক্ষাবিদ ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস এর অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজ এর এক টকশো অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এখন আমাদের  দেশে ইংলিশ স্কুলই হয়ে গেছে মেইন স্কুল অন্যগুলো অর্থাৎ দেশীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে মূলধারার বাহিরের। কিন্তু সেগুলো থেকে অনেক বড় বড় মনিষীর জন্ম হয়েছিল। ভারত বর্ষের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় সন্দিপের মুজাফফর আহমাদকে। তিনিও মদরাসার ছাত্র ছিলেন। অধ্যাপক আবুরল ফজলও মাদরাসার ছাত্র। এখন যাদের কওমি বলা হয় এই কওমি মাদরাসার ছাত্র। এখন আমরা যেটাকে মূলধারার শিক্ষা বলছি সেটারও আত্ম-সমিক্ষার প্রয়োজন আছে।

তিনি বলেন, আমরা যেটাকে বর্তমানে মূলধারা বলছি সেটা মূলত ঔপনিবেশিক ধারা। আমরা ঔপনিবেশীক রাষ্ট্র কাঠামো থেকেও বের হইনি। আমাদের প্রথম মূলধারা যেটা, বঙ্গভবন। সেটাও ঔপনিবেশীক। আমরা আগে যেটাকে গভর্নর জেনারেল ভাইসরয় বলতাম সেটাই এখন প্রেসিডেন্ট। গভর্নর জেনারেল নামে যেই পদ ছিল সেটাই এখন প্রধানমন্ত্রী। এটা বাংলাদেশ বলেন বা ভারত-পাকিস্তান অথবা শ্রীলঙ্কা বলেন একই।

অনেকে বলেন কওমি মাদরাসা ১৮৬৬-৬৭ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে।কথাটা আংশিক সত্য কারন এর আগেও তো মাদরাসা ছিল এদেশে। ১৮২৮-১৮৪৮ পর্যন্ত বাংলদেশের মোট জমির পাঁচ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ শতকরা বিশ ভাগই ছিল মাদরাসার সম্পত্তি। এগুলো বাংলার নবাব, স্থানীয় জমিদার এবং মুগলরা দিয়েছিলেন। ব্রিটিশরা এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ফলে মাদরাসাগুলো ধ্বংস প্রাপ্ত হয়। সেই সময় প্রথম ইংরেজি শিক্ষা চালু হয়।

বিস্তারিত দেখুন ভিডিওতে...


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ