বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১১ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
দাওরায়ে হাদিসের ফলাফল নজরে সানীর আবেদনের সময় বাকি ৩ দিন  বৃষ্টি প্রার্থনায় জামিয়াতুল আবরার রাহমানিয়ায় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’  আদায় হাসপাতালে সৌদি বাদশাহ সালমান সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পাঠ্য তালিকার সাথে বেফাকের পাঠ্য তালিকার সম্পর্ক নেই: বেফাক সৈয়দপুরে তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ, ‘হিটস্ট্রোকে’ ১ জনের মৃত্যু স্বর্ণের দাম আরও কমলো, ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ইরান-পাকিস্তানের ঢাবিতে বৃষ্টির জন্য ‘সালাতুল ইসতিস্কা’র অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বৃষ্টির জন্যে সালাত আদায় করলেই অবশ্যম্ভাবী বৃষ্টি চলে আসবে—বিষয়টা তা নয়’ মালয়েশিয়ার সিটি ইউনিভার্সিটিতে সম্পন্ন হলো বিয়াম'র চ্যাপ্টার কমিটি

কওমির মাস্টার্সের মান নিয়ে কী ভাবছেন ঢাবি’র শিক্ষার্থীরা?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ওয়ালি খান রাজু
ঢাবি প্রতিবেদক

গত ১১ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি ধারার আলেমগণের সাথে মতবিনিময় সভায় কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে সরকারিভাবে মাস্টার্স-এর মান প্রদানের ঘোষণা করেন, প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর দেশজুড়ে চলছে কওমি সনদের স্বীকৃতির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ। মিডিয়া জগত থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনে স্বীকৃতির পক্ষে বিপক্ষে নানা বিশ্লেষণ ফুটে আসছে। কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির প্রসংগে দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন মন্তব্য প্রদান করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট এর মাস্টার্স শিক্ষার্থী মিনার রহমান কওমি সনদের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে বলেন, কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির ফলে দেশের স্বীকৃত শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন সংযোজন স্থাপিত হল। দাওরায়ে হাদিসের মাস্টার্সের স্বীকৃতি প্রদান কওমি শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছিল বলে তিনি দাবি করেন। তিনি কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতি বিরোধীদের ‘অন্যের ব্যপারে নাক গলানো’ স্বরুপ আখ্যায়িত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করে ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত মুহাম্মাদ মুরতাজা আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘কাওমি উলামাগণ কম সময়ে মাস্টার্স পাশ করলেও তারা যখন মাদরাসায় থাকে ২৪ ঘণ্টা মাদরাসায় অবস্থান করে এবং কিতাবের সমগ্র অংশ হিফজ করার চেষ্টা করে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা অন্যান্য আলিয়া মাদরাসাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হয় কোর্স, আবার অন্যান্য কোর্স থাকে। তাই বুখারি শরিফ হোক কিংবা অন্য কোন হাদিসের কিতাবের কয়েকটি নির্বাচিত অধ্যায় পড়ানো হয়। কিন্তু কাওমিতে হাদিসের কিতাবসমূহের প্রত্যেকটি অধ্যায় অধ্যয়ন করতে হয়। সুতরাং, তারা যে অল্প সময়ে কোর্স শেষ করে সেখানেও কিন্তু আমাদের অন্যান্যদের থেকে তাদের অনেক শ্রম দিতে হয়। তাই আমাদের সমমান হওয়াটা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়’।

কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস সনদকে মাস্টার্স স্বীকৃতির ফলে তাদের স্বকীয়তা নষ্ট হবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুনিরা তাশফী বলেন, ‘কওমি মাদরাসায় ইসলামি জ্ঞানের সঠিক চর্চা মুগ্ধকর, কিন্ত এই স্বীকৃতির ফলে সরকারের নিয়ন্ত্রণের ফলে কারিকুলামে পরিবর্তন আসতে পারে, আর পরিবর্তন হলে শুধুমাত্র ইসলামি জ্ঞানের সঠিক চর্চা আলিয়া মাদরাসাগুলোর মত পথ হারাবে।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থী রিয়াজ উদ্দিন, বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী তানভীর হুসাইন কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস এর স্বীকৃতির সিদ্ধান্তকে সরকারের সঠিক পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের স্বীকৃতির প্রশ্নে কিছু ঢাবি শিক্ষার্থী একে অপরিণত সিদ্ধান্ত বলেও গন্য করেছেন।

ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাম্মাদ রিয়াজ মনে করেন, এটি একটি অযাচিত সিদ্ধান্ত, যেখানে আলিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ৪ টি পাবলিক পরীক্ষাসহ ফাযিল, কামিলে দীর্ঘদিন পড়াশুনা করে এম এ এর মান পান অথবা যেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এর ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষার্থীরা কুরআন, হাদিসের জ্ঞানের পাশাপাশি প্রতি সেমিস্টারে সমাজ বিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, দর্শন, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, আইন, অর্থনীতি, ফিন্যান্স, ব্যাংকিং বাংলা, ইংরেজি, তথ্য প্রযুক্তি, রিসার্চ মেথোডলজিসহ বিভিন্ন বিষয়ে পাশ করে মাস্টার্স এর সার্টিফিকেট সেখানে কওমি মাদরাসার একজন দাওরায়ে হাদিসের শিক্ষার্থী শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয়ে পড়াশোনা করে সমমর্যাদা পাবে তা হাস্যকর।

তবে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্তে কওমি মাদরাসাগুলোর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা বজায় রাখার পরামর্শও ফুটে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান শরীফের বক্তব্যে।

তিনি বলেন, ‘দরসে নিজামী’ শিক্ষা ব্যবস্থার যেই পদাঙ্ক কওমি মাদরাসাগুলো অনুসরণ করছে তা যেন অক্ষুন্নভাবে বজায় থাকে। আলিয়া মাদরাসাগুলো যেভাবে দ্বীনি শিক্ষা থেকে দিকভ্রান্ত হয়েছে কওমি মাদরাসাগুলোও সেভাবে যাতে দিকভ্রান্ত না হয় সে ব্যপারে কওমি আলেম উলামাদের সজাগ দৃষ্টি রাখার পরামর্শও প্রদান করেছেন।

কওমি শিক্ষার্থীদের ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিই কী করে?

স্বতন্ত্র কওমি ইউনিভার্সিটি হতে কোনো আইনি বাধা আছে বলে মনে করি না: অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান

কওমি মাদরাসায় যেসব বিষয় পড়ানো হয়


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ