বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


নৌ বাহিনীতে স্বপ্নের সাবমেরিন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

submerin bdআওয়ার ইলসাম : আজ রবিবার চীন থেকে সংগ্রহকৃত দু’টি সাবমেরিন কমিশনিং লাভ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কাজ শুরু হবে। এই উপলক্ষ্যে নৌ বাহিনীর তরফ থেকে চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এর কমিশনিং ফরমান দিবেন। তিনি সেখানে বক্তৃতা করবেন এবং সাবমেরিন দুটি পরিদর্শন করবেন।

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে নির্ধারিত হওয়ায় এখন সমুদ্রের নিরাপত্তা রক্ষা, নৌ ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য সরকার নৌবাহিনীকে অত্যাধুনিক বাহিনীতে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। ভিশন ২০৩০ ঠিক করা হয়েছে। এরই অংশ হিসাবে দুটি সাবমেরিন কেনা হয়। ২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর চীনের তরফ থেকে দুটি সাবমেরিন হস্তান্তর করা হয়।

গতবছর চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওনান শিপইয়ার্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চীন সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি-এর নিকট সাবমেরিন দু’টি হস্তান্তর করেন রিয়ার এডমিরাল লিউ জিঝু।

সাবমেরিন দুটির নামকরণ করা হয়েছে বাংলায়। একটির নাম ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’।

ওই সময়ে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, চীন থেকে দুটি সাবমেরিন সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসাবে যাত্রা শুরু করলো। তিনি এই সাবমেরিন দুটির নতুন ভাবে সজ্জিতকরণ এবং ক্রুদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য চীনা নৌবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য প্রস্তুতকৃত এই কনভেনশনাল সাবমেরিন দুটি ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন। প্রতিটি দৈর্ঘ্যে ৭৬ মিটার এবং প্রস্থে ৭ দশমিক ৬ মিটার। সাবমেরিনসমূহ টর্পেডো ও মাইন দ্বারা সু-সজ্জিত। যা শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করতে সক্ষম।

সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে আনার জন্য দুইদেশের নৌবাহিনীর অফিসার ও নাবিকদের যৌথ তত্ত্বাবধানে বাস্তব প্রশিক্ষণ ও সি-ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন করা হয় গতবছরই। ০৩৫ জি ক্লাসের সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়। কথা ছিল এই বছরের শুরুতে বানৌজা ‘নবযাত্রা’ এবং বানৌজা ‘জয়যাত্রা’ নামে নৌ বহরে যুক্ত হবে। সেই হিসাবে যুক্ত হয়েছে। আর আজ কমিশনিং লাভ করছে।

 

বিগত এক দশক ধরে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আধুনিকায়নের দিকে মনোনিবেশ করছে। ইতিমধ্যে ২০১১ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এভিয়েশন উইং চালু করেছে। বর্তমানে নৌবাহিনী ২০১৬ সালে সাবমেরিন ফ্লীট চালু করার জন্য অগ্রসরমান হয়। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে প্রথমবারের মতো ‘নারী নাবিক’ যুক্ত হয়।

নৌবাহিনীর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় উপহার পাওয়া মাত্র দু‘টি টহল জাহাজ ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ’ নিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যাত্রা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ১০ নং সেক্টরের অধীনে এই বাহিনী যুদ্ধ পরিচালনা করে। খুলনা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে ‘অপারেশন জ্যাকপট’ এই বাহিনীর পরিচালিত সফল অভিযানগুলোর অন্যতম। বর্তমানে প্রায় ২৪০০০ নৌ সেনা (কর্মকর্তাসহ) এবং প্রায় ছোট-বড় ১১০ টি জাহাজের এই বাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

 

সাম্প্রতিক সময়ে নৌবাহিনী ২ টি মিসাইল ফ্রিগেট, ৪টি মিসাইল করভেট ও ৫টি দেশে তৈরী অফশোর পেট্রোল ভেসেল নৌবহরে যুক্ত করেছে। এছাড়াও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক জাহাজ বানৌজা বঙ্গবন্ধুতে হেলিকপ্টার এবং জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সংযোজিত হয়েছে।

-এআরকে

 


সম্পর্কিত খবর