শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ চৈত্র ১৪৩০ ।। ১৯ রমজান ১৪৪৫


আমার বিশ্বাস ধর্মীয় শিক্ষা ব্যতীত জাগতিক পরিপূর্ণ নয়: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

hasinaআওয়ার ইসলাম : বর্তমানে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং সংঘাতের বিস্তারের প্রেক্ষাপটে অস্ত্র বিক্রেতা দেশগুলোর স্বার্থসিদ্ধির বিষয়ে ইঙ্গিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, যেসব দেশ মুসলিম অধ্যুষিত, সেখানেই ‘মারামারি, কাটাকাটি, সেখানেই বোমাবাজি, খুনখারাবি’ হচ্ছে। সেখানেই অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। ‘কিন্তু, এই অস্ত্রটা তৈরি করে কারা? আর লাভবান কারা হয়? রণক্ষেত্র বানাচ্ছে আমাদের মুসলমাদের জায়গাগুলো। রক্ত যাচ্ছে মুসলমানদের। আর ওই অস্ত্র তৈরি করে আর বিক্রি করে কারা লাভবান হচ্ছে? সেটা আপনারা একটু চিন্তা করে দেখবেন।’ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এসময় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আলেমদের আরও সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি আলেম-ওলামাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও সম্পৃক্ত করতে সরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনার রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যাতে আয় বাড়ানো যায়, এজন্য শুধুমাত্র আলেম-ওলামাগণের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এমন একটি অর্থনৈতিক জোন তৈরি করার চিন্তা-ভাবনাও আমাদের রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্প ব্যয়ে হজ করার জন্য বঙ্গবন্ধু ‘হিজবুল বাহার’ নামে একটি জাহাজ ক্রয় করেছিলেন, যেটাকে পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিয়ে প্রমোদতরী বানায়।

ধর্ম শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাটাকে আরও সার্বজনীন করতে চাই, উন্নত করতে চাই। কারণ, আমি নিজে বিশ্বাস করি যে, শিক্ষাটা পূর্ণাঙ্গ হবে তখনই, যখন পার্থিব জগতের শিক্ষার সাথে সাথে ধর্মীয় শিক্ষাটাও সবাই গ্রহণ করতে পারবে। শিক্ষা নীতিমালায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’

এসময় আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে ‘দারুল আরকাম’ নামে মসজিদভিত্তিক বিশেষায়িত প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি।”

হজের সার্বিক কার্যক্রম উন্নত প্রযুক্তির আওতায় আনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জেদ্দা হজ টার্মিনালে প্লাজা ভাড়া নেওয়ায় হাজীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে কমে গেছে।”

প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মসজিদ নির্মাণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইতিমধ্যে, আমি যখন সৌদি আরব গিয়েছিলাম.. বাদশাহর সাথে আমরা দেখা হয়। আমার মনের একটা ইচ্ছা আছে যে, আমরা সমস্ত উপজেলায় ও জেলায় মডেল মসজিদ এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করব। যেখান থেকে ইসলামের সঠিক তথ্য ও ইসলাম সম্পর্কে মানুষ জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। স্থানীয় ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে, তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। এই মসজিদ কমপ্লেক্সে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনসহ মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজকক্ষ, মুসলিম পর্যটক ও মেহমানদের বিশ্রামাগার থাকবে। এখানে হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইসলামী লাইব্রেরি ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।”

মসজিদগুলোকে ইসলামী জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২৭ হাজার ৮৩২টি মসজিদ পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী বলেন।

তিনি বলেন, “ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ডিজিটালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। একটি ডিজিটাল আর্কাইভ করা হয়েছে। দেশের সকল মসজিদ, মাদরাসা, খানকা ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের তথ্যসম্বলিত একটি ডাটাবেস তৈরির কাজ চলছে। প্রতিটি জায়গার হিসাবে যাতে হাতের মুঠোয় থাকবে।”

ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি বি এইচ হারুন এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজালও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ইমামের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মাওলানা ওহাবউল্লাহ এরশাদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ধর্ম সচিব মো. আব্দুল জলিল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীতের পর ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর হামদ, নাত ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন সংগীত শোনানো হয়।

-এআরকে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ