বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১০ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫


ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

isha35

বশির ইবনে জাফর: আজ সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর কাজি বশির মিলনায়তনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে। জুম’আর পূর্বেই ইসলামী আন্দালন বাংলাদেশের মুহতারাম আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন এবং ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর চলমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করে ২০১৭ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেছেন।

সভাপতি হিসেবে রুহুল আমিন, সহ সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাইফুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেন এবং শপথবাক্য পাঠ করান।

ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম আল-আমিনের সভাপতিত্বে ইশা ছাত্র আন্দোলনের সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীলসহ নেতাকর্মীরা বক্তব্য পেশ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বিশ্ব রাজনীতির কথা আপনারা জানেন। গোটা পৃথিবীতে আজ মুসলমানরা নির্যাতিত। ইতিহাসের চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে বিশ্ব রাজনীতি চলছে। মার্কিন বার্ষিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আগামী বিশ্ব হবে সংঘাতের বিশ্ব।” মুসলিম শক্তিগুলো আজ পরস্পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। অবৈধ রাষ্ট্র ইজরাইল মুসলিম রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। মধ্যপ্রাচকে আমেরিকা-রাশিয়া পরস্পরের শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্র বানিয়েছে। জাতিসংঘ এক্ষেত্রে অশুভ শক্তিগুলোর মন্ত্রণালয়ে পরিণত হয়েছে। এই জাতিসংঘ মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষায় কখনো আন্তরিকতা প্রদর্শন করে নি। এমতাবস্থায় মুসলিম জাতি সংঘগঠন আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের বিচারালয়ে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। আমরা এর কোনো অর্থ খুজে পাই না। গ্রিক দেবী থেমিসের কী প্রাসঙ্গীকতা আছে আমাদের দেশে? বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা কি থেমিসের আদর্শে পরিচালিত হবে? হাজার বছরের মুসলিম ইতিহাস-ঐতিহ্যের দেশ, বাংলাদেশকে গ্রিক থেকে দেবী ধার করতে হবে কেন? এই মুর্তি অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায়, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও আমজনতার মূল্যবোধ রক্ষায় আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম আল-আমীন এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল শেখ ফজলুল করীম মারুফ-এর সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় সম্মেলনে বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল-ফরিদী, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল কাদের, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, দারুল মা’আরিফ-এর সহকারী মহাপরিচালক আল্লামা জসিম উদ্দিন নদভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা হুসাইনুল বান্না, মাসিক মদিনার সম্পাদক মাওলানা বদরুদ্দীন খান, ইসলামী যুব আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক কে.এম আতিকুর রহমান, ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মুহাম্মাদ বরকত উল্লাহ লতিফ, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য, জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শিক্ষার সিলেবাস থেকে যেই সব গল্প কবিতা পড়ে বছরের পর বছর দেশের ধর্ম-বর্ণ নির্বেশেষে সকলে শিক্ষিত হয়েছে সেই সব গল্প কবিতা সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা চক্রান্তকারীরা সরিয়ে দিয়েছিলো। জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার যখন আবারও সে সব গল্প কবিতা পাঠ্যসূচিতে সংযোজন করেছে তখন বাম-সেক্যুলার জনবিচ্ছিন্ন গুটি কয়েকটি মাথা মোটা আমাদের ঐক্যবদ্ধ সমাজকে ভেঙ্গে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এরা বাঙ্গালীদের মাঝে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ছড়াচ্ছে। অশ্লীল রকম বাড়াবাড়ি শুরু করেছে। আমরা সাবধান করে দিতে চাই। যারা এদেশের মানুষের মাঝে বিভেদ ও সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করতে চায়, সিলেবাস বদলাতে চায় বাংলার জনতা তাদের সহ্য করবে না। তাদের ঠাঁই বাংলার জমিনে হবে না। তিনি বলেন বিতর্কিত শিক্ষানীতি ২০১০ ও শিক্ষাআইন ২০১৬ বাতিল করে এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও অধিকাংশ জনগণের মূল্যবোধের আলোকে শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। মা-বাবার সামনে মেয়েকে, ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এই ইস্যুতেও সরকার আমাদের লংমার্চে বাধা দিয়েছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসি কোন পদক্ষেপ নেয় নি। বিশ্ব রাজনীতির মোড়লরাও এই বর্বরতার বিরুদ্ধে কোন অবস্থান গ্রহণ করে নি।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেয়া না হলে এবং নির্যাতন বন্ধ না হলে আমরা দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব, ইনশাআল্লাহ।

বক্তব্য শেষে তিনি ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে ২০১৭ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। নবগঠিত কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জি.এম রুহুল আমীন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ এবং সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম মনোনীত হন।

journalism_cors4

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ