বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫


বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৬৫০০০

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

rohingya20আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে নির্যাতনের শিকার কমপক্ষে ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ এসেছেন গত এক সপ্তাহে।  সেনাবাহিনীর ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরুর পর থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচানোর আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশকে।

সাপ্তাহিক রিপোর্টে জাতিসংঘের কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স অফিস থেকে এ কথা বলা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান।

এতে বলা হয়, ৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেেশর বিভিন্ন সরকারি শিবিরে, অস্থায়ী আবাস ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন প্রায় ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা।  তাদের ওপর সেনাবাহিনীর অভিযানের ফলে পালিয়ে আসা মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। জাতিসংঘের রিপোর্টে সেটাই ফুটে উঠেছে। মানবাধিকার গ্রুপগুলো বলছে, এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী যে ভয়াবহ নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে তাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।

মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দূত ইয়াংগি লি সোমবার মিয়ানমারের কাচিন সীমান্ত এলাকায় সফর শুরু করেছেন। সেখানে তিনি ১২ দিন সফর করে সহিংসতার তদন্ত করবেন। তবে তাকে সেইসব এলাকায় যেতে দেয়া হবে যার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সেনাবাহিনীর হাতে। প্রায় তিন মাস আগে সীমান্ত প্রহরীদের চৌকিতে হামলায় ৯ জন প্রহরী নিহত হওয়ার ফলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরু করে। এর ফলে রাখাইন থেকে পালিয়ে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে।

যারা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে পেরেছেন তারা নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন। বলেছেন রোহিঙ্গা নারী, যুবতীদের গণহারে ধর্ষণ করা হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে। বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে অং সান সুচির ‘তরুণ’ সরকারের ওপর ছায়াপাত হয়েছে। বিশেষ করে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মালয়েশিয়া এ নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানায়। তারা আঞ্চলিক একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।

প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে রাজধানীতে র‌্যালি করেন। তবে মিয়ানমার সরকার নির্যাতনের অভিযোগ বানোয়াট বলে দাবি করছে। তারা অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠন করে বিশেষ কমিশন। গত সপ্তাহে ওই কমিশন তাদের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট দিয়েছে। তাতে গণহত্যা ও ধর্মীয় নিপীড়নের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সম্পর্কে পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায় নি বলেও এতে দাবি করা হয়।

এর কয়েকদিন আগে একটি ভিডিও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, কিভাবে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা রোহিঙ্গা সাধারণ মানুষকে প্রহার করছে। ওই ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দেয় সরকার। এর পরেই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে একে সরকার বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করছে। সোমবার ইয়াংগি লি কাচিন রাজ্যে তার তদন্ত শুরু করেছেন। ওই রাজ্যে জাতিগত কাচিন বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

আরআর


সম্পর্কিত খবর