মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ৭ শাওয়াল ১৪৪৫


৫ ক্যাটাগরিতে ভাগ হচ্ছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

sikkhaআওয়ার ইসলাম: আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সরকারী ও বেসরকারী স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আনা হচ্ছে র‌্যাংকিংয়ের আওতায়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ভাল স্কুল-কলেজের সঠিক তথ্য দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সরকারীভাবেই।

দেশের ৩৬ হাজার সরকারী, এমপিওভুক্ত ও বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কলেজ ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হচ্ছে। অসাধারণ, অতি উত্তম, উত্তম, চলতিমান ও নিম্নমান এই পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।

আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরে (ডিআইএ) আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পিয়ার ইন্সপেকশন সফটওয়্যারের ডেমো’ প্রদর্শন করা হবে। মূলত এই সফটওয়্যারের মাধ্যমেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাটাগরি করা হবে। ১৪ মানদণ্ডের  ভিত্তিতে এই ভাল-মন্দ নির্ধারণ করা হবে।

এছাড়াও সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্যও পাওয়া যাবে এক ক্লিকে। এতে শিক্ষা প্রশাসন অফিসে বসেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাজিরাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আপডেট তথ্য জানতে পারবেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও একই সঙ্গে ডিআইতে নবনির্মিত শেখ রাসেল স্মৃতি সম্মেলন কেন্দ্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বায়োমেট্রিক এ্যাটেনডেন্স এবং ভাষা আন্দোলন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের মুর‌্যাল উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী।

কর্মকর্তারা বলছেন, অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভর্তির জন্য সব সময়ই ভাল স্কুল-কলেজ খোঁজেন। কিন্তু ভাল প্রতিষ্ঠানের তালিকা নেই কারও কাছে। না সরকারী, না বেসরকারী- কারও কাছেই নেই প্রতিষ্ঠানের চিত্র? কোন প্রতিষ্ঠান কোন ক্যাটাগরির, কোন প্রতিষ্ঠান কি সমস্যায় জর্জরিত, কোন প্রতিষ্ঠান কোন মানের? সেরা প্রতিষ্ঠান আসলে কোনগুলো? কোথায় কেমন শিক্ষক আছেন? কোন প্রতিষ্ঠানের পড়ালেখার পরিবেশ ভাল? কোন প্রতিষ্ঠানের অবস্থা খারাপ? এতদিন এভাবে কোন সঠিক তথ্য পাওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে এবার পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ) এ লক্ষ্যে কাজ করছে।

জানা গেছে, দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। কিন্তু ডিআইএ’র পক্ষে প্রতিবছর আড়াই হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা সম্ভব হয় না। ফলে এক প্রতিষ্ঠান এক পরিদর্শন হলে ১০ বছরের মধ্যে সেখানে আর পরিদর্শনের সুযোগ থাকে না। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। এমনকি এসব প্রতিষ্ঠানের কোন আপডেট তথ্যও কারও কাছে পাওয়া যায় না।

সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত পরিদর্শনের আওতায় আনতে ডিআইএ পিয়ার ইন্সপেকশনের (এক প্রতিষ্ঠান আরেক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে নিরীক্ষণ) কাজের সূচনা করে। এ লক্ষ্যে গত বছরের জুন ও অক্টোবর মাসে দুটি কর্মশালা করা হয় এবং একটি সেন্ট্রাল ওয়েবসাইট করা হয়। একই সঙ্গে রাজধানীর পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাইলট প্রকল্প শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, দক্ষিণ বনশ্রী স্কুল এ্যান্ড কলেজ, মদিনাতুল উলুম মডেল মহিলা কামিল মাদ্রাসা, মহানগর টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজ ও মমতাজ উদ্দিন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ। পাইলট প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আজ ডেমো প্রদর্শন করবে ডিআইএ।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিআইএ’র সেন্ট্রাল সফটওয়্যারে ৩৬ হাজার প্রতিষ্ঠানের প্রতিটির জন্যই পেজ বরাদ্দ রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য আপডেট করতে হবে। এছাড়া ভাল-মন্দ প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের জন্য ১৪ মানদ-ও নির্ধারণ করা হয়েছে। যেগুলোও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত আপডেট করতে হবে। বছর শেষে এই মানদ-ের ভিত্তিতেই ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হবে।

১৪ মানদ- হলো- প্রতিষ্ঠান প্রধানের কার্যক্রম মূল্যায়ন, শিক্ষকদের পেশাদারিত্ব মূল্যায়ন, শিক্ষার্থী কৃতিত্ব মূল্যায়ন, শিক্ষকের গোপনীয় অনুবেদন, ক্লাস রুটিন পর্যালোচনা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সমাবেশ, শ্রেণীকক্ষ, পরিবেশ, স্যানিটেশন ও সাঁতার, শিক্ষার্থীদের আসন ব্যবস্থা, মিলনায়তন সংক্রান্ত তথ্য, পাঠাগার, বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, শিক্ষার্থীর ভাষা ব্যবহারের দক্ষতা যাচাই এবং আয়-ব্যয় বিবরণী।

এছাড়াও এই কার্যক্রমের আওতায় পিয়ার ইন্সপেকশনের মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠান আরেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান বছরে একবার নিরীক্ষা করবেন। এসব বিষয়ে ডিআইএ’র যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার তাদের উদ্যোগ সম্পর্কে বলছিলেন, ‘মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ ও সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায়ও ডিজিটালাইজেশন করতে চাই। এজন্যই মূলত এ উদ্যোগ। আমরা ডেমো প্রদর্শন করব। এরপর এই কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচালনার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমোদন চাইব। আমাদের সবকিছু প্রস্তুত আছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে দুই-তিন মাসের মধ্যেই পুরোপুরি কাজ শুরু করতে পারব।

ডিএস


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ