বরিশাল প্রতিনিধি: ৬ দিন ধরে ছেলে নিখোঁজ। পরিবারে উদ্বেগ। হঠাৎ করেই মায়ের মোবাইলে এসএমএস- ‘মা, আমি ভাল আছি। আমার জন্য কোন চিন্তা করো না। আমি আল্লাহর পথে চলে গেলাম।’
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের আল জামিয়াতুল নাফিজিয়া আল ইসলামিয়া মাদরাসার নিখোঁজ ছাত্র নেয়ামতুল্লাহ (১৬) ৬ দিন পর মায়ের মুঠোফোনে এমই ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছে।
গত ৩০ নভেম্বর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের ৩ দিন পর গত ৩ ডিসেম্বর নেয়ামতুল্লাহ তার মা কোহিনুর বেগমের মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠায়।
এরপর থেকেই চরম উদ্বেগে রয়েছে তার পরিবার। এ ঘটনায় আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছে নেয়ামতুল্লাহর পরিবার। নিখোঁজ নেয়ামতুল্লাহ একই উপজেলার বাকাল গ্রামের খোরশেদ বেপারীর ছেলে।
এদিকে এ ঘট্নায় নেয়ামতুল্লাহ মা কোহিনুর বেগমকে বরিশাল র্যাব-৮ এর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, আল জামিয়াতুল নাফিজিয়া আল ইসলামিয়া মাদরাসায় কওমী বিভাগে দুই বছর ধরে পড়াশুনা করছিলো নেয়ামতুল্লাহ। গত ২৭ নভেম্বর বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যায় সে। মাদ্রাসা থেকে ৩০ নভেম্বর জহুরের নামাজের পর সে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় নেয়ামতুল্লাহর বাবা ৩ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন।
নেয়ামতুল্লাহর মামা শাহাদাৎ হোসেন জানান, নেয়ামতুল্লাহ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোন রিসিভ করেনি সে। ফোন রিসিভের জন্য তাকে একাধিক ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। ওই ক্ষুদে বার্তা পেয়ে নেয়ামতুল্লাহ শাহাদাতের ব্যবহৃত মুঠোফোনে গত সোমবার রাত ১টা ২২মিনিটে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। এতে বলা হয় “আমি এখন ডিউটিতে আছি। পরে ফোন দেব”। কিন্তু পরে আর ওই নম্বর থেকে কোন ফোন আসেনি।
নেয়ামতুল্লাহর মা কোহিনুর বেগম জানান, গত সোমবার দুপুরেও নেয়ামতুল্লাহ তার মুঠোফোন থেকে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে বলে, “মা ক্ষমা কর, ভাল থাক”।
কোহিনুর বেগম আরও জানান, তার ছেলে খারাপ ছিল না। বাগধা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করার সময় তার আচরণে অসংগতি দেখা দেয়। এরপর উপজেলা সদরের আল আমীন মোহাম্মদীয়া জামে মসজিদের ইমাম জলিল বেপারীর মাধ্যমে ওই মসজিদে আযান দেওয়া, নামাজ আদায় ও তাবলিগ জামাতে যোগদান করে আসছিল নেয়ামতুল্লাহ। মঙ্গলবার কোহিনুর বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরিশাল র্যাব-৮ কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়।
ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, নেয়ামতুল্লাহ নিখোঁজ হওয়ার পর দায়েরকৃত সাধারণ ডায়রীর তদন্ত চলছে। পুলিশের নজরদারীতে থাকা মসজিদগুলোতে তার যাতায়াত, নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন ও বর্তমান অবস্থান জানতে পুলিশের তৎপরতা চলছে।
এমকে